Alapon

বাংলা সাহিত্যের জীবন্ত কিংবদন্তি আল মাহমুদের জীবনী।

চলে গেল, বাংলা সাহিত্যের প্রবাদ পুরুষ এবং জীবন্ত কিংবদন্তি কবি আল মাহমুদ-এর জন্মদিন। চলুন জেনে নেই এই কিংবদন্তির জীবনী। আল মাহমুদের অনেক পরিচয়।একাধারে কবি,ঔপন্যাসিক,প্রাবন্ধিক,গল্পকার ও সাংবাদিক। তবে কবি হিসেবে পরিচয়টা বেশি। লোক-লোকান্তর (১৯৬৩)থেকে শুরু করে কালের কলস(১৯৬৬), সোনালী কাবিন(১৯৭৩),বখতিয়ারের ঘোড়া(১৯৮৫),আরব্য রজনীর রাজহাঁস(১৯৮৭),প্রহারান্তের পাশফেরা(১৯৮৮),একচক্ষু হরিণ(১৯৮৯),মিথ্যাবাদী রাখাল(১৯৯৩),আমি দূরগামী(১৯৯৪),হৃদয়পুর(কলকাতা,১৯৯৫),দোয়েল ও দয়িতা(১৯৯৭),দ্বিতীয় ভাঙন(২০০০),নদীর ভিতরে নদী(২০০১),উড়াল কাব্য(২০০৩)এবং সর্বশেষ প্রকাশিত বিরামপুরের যাত্রী(২০০৪) পর্যন্ত তার কবিতার যে বিস্তার,তা হল আধুনিক বাংলা কবিতারই দিগ্বিজয় মাত্র।

কবিতার পাশাপাশি কথাসাহিত্যেও আল মাহমুদের আবির্ভাব এদেশের গদ্য সাহিত্যের ইতিহাসে আরেক যুগান্তকারী ঘটনা। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পরে পত্রপত্রিকায় তার পানকৌড়িরর রক্ত,কালোনৌকা,জলবেশ্যা প্রভৃতি গল্প প্রকাশিত হলে সবাই একবাক্যে স্বীকার করে নেন,তিনি আমাদের সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবিই শুধু নন,অপ্রতিদ্বন্দ্বী গল্পকারও। পানকৌড়ির রক্ত(১৯৭৫),সৌরভের কাছে পরাজিত(১৯৮৩),গন্ধবণিক(১৯৮৮),ময়ূরীর মুখ(১৯৯৪),নদীর সতীন(২০০৪) তার উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থ।
উপন্যাসেও আল মাহমুদ সিদ্ধহস্তের প্রমাণ দিয়েছেন। তার ডাহুকি(১৯৯২),কাবিলের বোন(১৯৯৩),উপমহাদেশ(১৯৯৩),কবিও কোলাহল(১৯৯৩),পুরুষ সুন্দর (১৯৯৪),নিশিন্দা নারী(১৯৯৫),মরু মূষিকের উপত্যকা(১৯৯৫),আগুনের মেয়ে(১৯৯৫),যে পারো ভুলিয়ে দাও(১৯৯৬),পুত্র(২০০০),চেহারার চতুরঙ্গ(২০০১) প্রভৃতি উপন্যাস তাঁকে দেশের শীর্ষস্থানীয় কথাশিল্পীর সম্মান এনে দিয়েছে।

আল মাহমুদ শিশু-কিশোরদের জন্যও ছড়া-কবিতা লিখেছেন। পাখির কাছে ফুলের কাছে(১৯৮০),মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) (১৯৮৯), একটি পাখি লেজ ঝোলা(২০০০) ও মোল্লাবাড়ির ছড়া(২০০৫) উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বেশ কিছু প্রবন্ধও লিখেছেন।

লিখেছেন আত্মজীবনীমূলক বই যেভাবে বেড়ে উঠি(১৯৮৬)এবং ভ্রমণ কাহিনী কবিতার জন্য বহুদূর(১৯৯৭) ও কবিতার জন্য সাত সমুদ্র(১৯৯৯)।
গত বইমেলায়(২০১৮) কবির সর্বশেষ প্রকাশিত বই 'জীবনের বাঁক ঘোরে'।

আমাদের বাংলা সাহিত্যের এই অমূল্য সম্পদ আজ অসুস্থ্য,শয্যাশয়ী।তাঁর সুচিকিৎসার জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।আর মহান মা'বুদের কাছে তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করছি।আমীন।

পঠিত : ৮০৪ বার

মন্তব্য: ০