Alapon

বৃদ্ধাশ্রমে এক পিতার অার্তনাদ

জীবনের বড় একটা সময় দেশের জন্য কাজ করে সময় পার করেছি (অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তা)।মুক্তিযোদ্ধের সময় রণক্ষেত্রে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছি।আর পরিবারের জন্য সংগ্রাম করতে করতে নিজের দিকে খেয়াল রাখার সুযোগ পাইনি।সবসময় পরিবার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে পড়ে থেকেছি।কিভাবে তাদেরকে ভালো রাখতে পারবো।কিভাবে তাদেরকে আরো একটু উন্নত ভাবে রাখতে পারবো।এসব চিন্তা করে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছি।বিপদের সময় সন্তানদের পাখির মতো করে আগলে রেখেছি।জীবনের সবর্স্ব দিয়ে তাদেরকে মানুষ করেছি।আজ মনে হচ্ছে তাদের কাছে আমি নিজেই মানুষ হতে পারেনি!

বড় ছেলে একদিন সকালবেলা বললো আব্বু এসো আজ বাহিরে নাস্তা খাবো,এই কথা বলে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে চলে গেছে।অনেকবার বাব বাব করে ডাকার পরও পিছনে ফিরে তাকাইনি।আজ বয়সের ভারে একা চলতে পারিনা (৮০)!জীবনের শেষ সময় এসে পরিবারের কাছে এতো অবহেলিত হয়ে যাবো সেটা কখনো ভাবিনি।কি করিনি আমার সন্তানদের জন্য? নিজে ভালো জামাকাপড় না পড়ে তাদের জন্য কিনেছি।কতদিন না খেয়ে ছিলাম তারপরেও তাদের মুখে খাওয়া তুলে দিয়েছি।আজ আমার সন্তান ও আমার প্রাণপ্রিয় সহধর্মিণী থেকেও নেই।এই দেশকে অনেক কিছু দিয়েছি কিন্তু শেষবেলা কিছুই পাইনি। (বৃদ্ধাশ্রমে এক পিতার অার্তনাদ)

কি বলে সান্ত্বনা দেওয়া যাবে পিতা সমতুল্য লোকটিকে? কি উত্তরে বা আছে আমাদের কাছে?

আগামীর পিতাদের জন্য বলতে পারি যে, নিজের সন্তানকে নৈতিক শিক্ষাদিন,তাদেরকে বাংলা ও ইংরেজি সাহিত্যের সাথে কিছু কোরআন হাদিসের বই কিনে দিন।কিছু ইসলামিক সাহিত্য পড়তে দিন, যাতে বৃদ্ধ বয়সে আপনাকে একাকীত্ব ভাবে বৃদ্ধাশ্রমে বসে চোখের লোনাজল ফেলতে না হয়। তখন যেন বলতে না হয় কেন তাদেরকে নীতি নৈতিকতা শিক্ষাদিতে পারেনি।তাহলে তো আজ আমাকে বন্ধী অন্ধকার বৃদ্ধাশ্রমে বসে বসে আপসোস করতে হতো না।সন্তানদেরকে শিক্ষিত করার পূর্বে সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলন।

পঠিত : ৭৩০ বার

মন্তব্য: ০