এসব ভাবার দায়িত্ব কাদের...?
তারিখঃ ১৮ মে, ২০১৯, ১২:৫৭
পরীক্ষায় নকল করতে না দেওয়ায় পাবনার শহীদ বুলবুল সরকারী কলেজের শিক্ষক মাসুদুর রহমানকে পিঠে লাথি ও তাকে মারধর করা হয়েছে। ওই কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি শামসুদ্দীন জুন্নুনের নেতৃত্বে এই হামলা করা হয়েছে।
মাসুদুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক-স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার পর বিসিএসের মাধ্যমে যোগ দেন- বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে; অতপর পাবনার সরকারী কলেজটিতে প্রভাষক হিসাবে যোগদান করেন।
ধর্মপরায়ণতা ও ভালো শিক্ষকতার কারণে সবার মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয় তিনি।
ছাত্রলীগ কর্তৃক তাকে মারধরের একমাত্র কারণ তিনি এইচএসসি পরীক্ষায় নকল করতে বাঁধা দিয়েছেন যা বর্তমান সরকারের শিক্ষানীতির সংগে সাংঘর্ষিক। বর্তমান মিয়া হাসিনার সরকারের শিক্ষানীতি হলো প্রশ্নপত্র ফাঁস করে হোক, নকল করার মাধ্যমে হোক দেশের সকল ছাত্র-ছাত্রীকে পরীক্ষায় পাস করিয়ে দিতে হবে।
প্রভাষক মাসুদুর রহমান সাহেব সরকারী এই নীতিকে অবমাননা করেছেন। সুতরাং মাঠ পর্যায়ে সরকারের নিজস্ব পাহারাদার, লাঠিয়াল বাহিনী ছাত্রলীগ নেতারা মিলে তাকে মারধর করেছে।
আমরা জানি, একবার নারায়ণগঞ্জে এক শিক্ষককে কান ধরিয়ে উঠবস করা হয়েছিল (শারিরিকভাবে মারধর করা হয়নি) বিধায় পুরো বাংলাদেশের চেতনাবাজ গোষ্ঠীটি তাদের চেতনায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল। সকলে দলে দলে নিজ নিজ কান ধরে, সরকারী টাকায় ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে সেই দলবদ্ধ কানে ধরার ছবি তুলে, সেটাকে ফটোশপ দিয়ে আরও ঝকঝকা করে তারপর ফেসবুকে প্রকাশ করা হয়েছিল।
কিন্তু এখনকার শিক্ষক মাসুদুর রহমান যেহেতু দাড়ি-টুপি-সাদা পাঞ্জাবী পরিহিত, আর দাড়ি-টুপি যেহেতু জংগী সম্পৃক্ততা প্রমাণ করে সেহেতু চেতনাবাজরা এবার নিশ্চুপ, তারা শুধু শুধু শিক্ষক নির্যাতনের প্রতিবাদ করে নিজেদের সঞ্চিত চেতনার অবক্ষয় করবেন কেন?
যাই হোক, প্রশ্নপত্র ফাঁস করা, নকল করা বর্তমান সরকারের উন্নয়নের অন্যতম শর্ত। দেশের সকলকে শিক্ষিত না করতে পারলে দেশের উন্নয়ন হবে না। বিশ্ব আর মিয়া হাসিনাকে রোল মডেল বলবে না। নোবেল কমিটি তাদের নোবেল দেবার জন্য বারবার দরকষাকষি করবে না।
দেশের সম্মান বিসর্জন দিয়ে মাসুদুর রহমানেরা আজ দেশের বিরুদ্ধে পাকিস্তানপন্থীদের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে, নকলে বাঁধাপ্রদান করে চলছে- তারউপর ছাত্রলীগের ছেলেদের পরীক্ষায় অসহযোগীতা করে চলছে- এতটা সাহস তো ভাল না।
আওয়ামী প্রজাতির পিতা শেখ মুজিবর রহমান বর্তমান সংসদ সদস্য নায়ক ফারুককে বলেছিলেন তুমি ক্লাস নাইনে পর তো কি হয়েছে- এখনই তোমাকে এসএসসি পরীক্ষা দিতে হবে। সকলকে শিক্ষিত হতে হবে। সেই আওয়ামী প্রজাতির পিতা'র স্বপ্ন আজ নিভিয়ে দিতে কুচক্রি মাসুদুর রহমানদেরকে কেন রাবের ক্রস ফায়ারে হত্যা করে 'জংগী' ট্যাগ দেয়া হচ্ছে না- সেটাই এই মূহুর্তে গবেষনার বিষয়।
যাই হোক, ভবিষ্যতে আর কোন মাসুদুর রহমান যেন সৃষ্টি না হতে পারে সেজন্য অনতিবিলম্বে এসব শিক্ষকদের 'ক্রস ফায়ার' এ দিয়ে অথবা ন্যনতমপক্ষে গুম করে ফেলার জোর দাবী জানাচ্ছি।
দেশে শতভাগ শিক্ষিত না হলে- আগামী পাঁচ বছর পর বাংলাদেশ কিভাবে কানাডাকে অতিক্রম করবে?
এসব ভাবার দায়িত্ব কাদের?
মন্তব্য: ০