Alapon

বলিউড, জায়রা ওয়াসিম ও অন্যান্য...

শাহরুখ খানের দ্বিতীয় ছবি হচ্ছে 'চমৎকার'। ক্রিকেট নিয়ে তৈরি 'চমৎকার' আসলেই চমৎকার একটি ছবি৷ ছোট বেলা এই ছবি দেখে আনন্দ পেয়েছি। নাসিরুদ্দিন শাহ ও শামি কাপুর অভিনীত এই ছবিতে শাহরুখ খানের বিপরীতে ছিলো 'উর্মিলা'। ছবিটি অনেক আগের৷ এমনকি আমার জন্মেরও আগের। নায়িকা উর্মিলা কয়েকমাস আগে যখন কংগ্রেসের হয়ে নির্বাচন করলেন তখন জানতে পারলাম যে তিনি এখনও বিয়ে করেন নি। উর্মিলা ছাড়াও আরও কয়েকজন বলিউড অভিনেত্রী ক্যারিয়ার গড়ার চিন্তায় বা ক্যারিয়ার রক্ষার চিন্তায় বিয়ে করেন নি। যেমনঃ দিয়া মির্জা, সুস্মিতা সেন।

বলিউড নায়িকারা সহজে বিয়ে করতে চান না। কারণ বিয়ে করলে তাদের প্রতি দর্শকের আগ্রহ, পরিচালক, প্রযোজকদের আগ্রহ কমে যায়। এতে তার ফিল্ম ক্যারিয়ার ক্ষতির মুখে পরে, একসময় সে হারিয়ে যায়। আর যারাই বিয়ে করেছে তাদের অনেকের ক্ষেত্রেই এমন হয়েছে৷ কাশ্মীরি বংশোদ্ভূত আমেরিকান লেখিকা হাফসা খাজা লেখেন, "Marriage is often a death sentence for women in lead roles."

অধিকাংশ বলিউড ফিল্মেই নায়িকাদের যৌনতার উপকরণ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়ে। আইটেম সং থেকে শুরু করে নানান রকমের উপস্থাপনা। আর যৌনতার উপকরণ হিসেবে প্রাসঙ্গিক থাকতে নায়িকাদের ওজম কমিয়ে রাখতে হয়। আর বিভিন্ন ছবিতে সুযোগ পেতে পরিচালক, প্রযোজকদের সাথে শয্যাশায়ী হওয়ার ঘটনা তো ঘটেই।

এমন কুৎসিত জায়গায় গিয়ে নিজের মানসিক অস্থিরতা ও হতাশার কারণ বুঝতে পেরে বলিউড পরিত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন জায়রা ওয়াসিম। জায়রা ওয়াসিম এখন অব্দি দুইটি ছবিতে অভিনয় করেন। দুইটি ছবিই আমির খানের সাথে। আমি দুইটি ছবিই দেখেছি। একবার নয়, একাধিকবার। বলতে দ্বিধা নেই যে ছবিগুলো অশ্লীলতা মুক্ত। আর 'দঙ্গল' অভিনয়ের পর অনেকেই বলেছে যে ক্যাটরিনা কাইফ এখন পর্যন্ত এমন অভিনয় করতে পারেনি এই শিশু শিল্পী যা অভিনয় করেছে। তার দ্বিতীয় ছবি 'সিক্রেট সুপারস্টার' ছিলো আরেকটি ভালো অভিনয়ের নমুনা। এমনসব সফলতার মাঝে নিজেকে ধর্মের পথে ফিরিয়ে নেয়া খুব বড় সাহস ও শক্তির ব্যাপার। যা আল্লাহ তাকে দান করেছেন।

জায়রা ওয়াসিমের বলিউড পরিত্যাগ আমাদের কাছে অনেকগুলো বিষয় স্পষ্ট করে দিয়েছে। বিশেষ করে নারী স্বাধীনতার কথা বলা লোকদের ভণ্ডামি। নারী স্বাধীনতার কথা তারা বলে, ব্যাক্তিগত পছন্দের কথা তারা বলে, কিন্তু সেই স্বাধীনতা ও পছন্দ যদি হয় ইসলামকে জীবনাচার হিসেবে গ্রহণ করায় তবেই তাদের আপত্তি। লেখিকা হাফসা খাজা পাকিস্তানি পণ্ডিত সাবা মাহমুদের উদ্ধৃতি দিয়ে লেখেন, "Muslim women's choice or agency is only valued in liberalism (and in this case, Hindu nationalism) when it subverts or resists particular norms - not when it adheres to religious norms."

জায়রার এই সিদ্ধান্ত বলিউডের অভিনেতা ও অভিনেতারাও সুন্দর চোখে দেখেনি। শুধু তাকেই নয়, এমনকি তার ধর্মকেও হেয় করেছে৷ রাভিনা টেন্ডনরা তাকে সমালোচনা করেছে কারণ, রাভিনারা নিজেরা নিজেদের দেহ সৌন্দর্য অন্যদের কাছে প্রকাশ করেছে। এরা চায় অন্য নারীরাও এদের আদর্শ ও বিশ্বাসেই চলুক৷ স্রোতের বিপরীতে ছিলেন ও আছেন অভিনেত্রী তাপসি পান্নু। জায়রার সিদ্ধান্ত সে সমর্থন করেছেন৷ 
ভারতে নারীদের দেবী হিসেবে উপস্থাপন করলেও নারীরা সেভাবেই মূল্যায়ন হয় না৷ ভারতে নারীদের প্রতি বা শারীরিক সম্পর্কের প্রতি নারীদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন তার একটি নমুনা দিচ্ছি প্রিয় সর্দার খুশবন্ত সিং এর 'I shall not hear the nightingale' উপন্যাস থেকে। হয়তো পুরো লেখার সাথে তা তেমন প্রাসঙ্গিক না।
"Most Indian women know of sex —
an unpleasant subjection to men’s desires — necessary in order to have sons,
bearable because of its brevity. To the mass of Indian womanhood, the sixty-five
ways of kissing and petting, the thirty-seven postures of the sex act so
beautifully portrayed in stone on temple walls make as much sense as a Greek
translation of the treatise Kama Sutra itself. Unfulfilled sexual impulses result in
an obsession with sex and in many perversions which result from frustration:
sadism, masochism, and, most common of all, exhibitionism."

লিখেছেন: শরীফ সাইদুর

পঠিত : ৮৭৪ বার

মন্তব্য: ০