Alapon

বিয়ের আলোচনায় মোহরানার আলাপ আসলে ছেলে-পক্ষ খুব ধার্মিক হয়ে যায় ...

দেখেন, ইসলাম কম মোহরানার পক্ষে, রিজনেবল মোহরানার পক্ষে, বেশি মোহরানার বিয়েতে রহমত থাকে না ইত্যাদি ইত্যাদি! কেউ কেউ আগ বাড়িয়ে ফাতমী মোহরানার কথাও বলেন (মামণি এই প্রসঙ্গে মজার উপমা দেন-আমাকে আলী'র মতো ছেলে দাও, আমিও ফাতমী মোহরানায় মেয়ে দিয়ে দিবো)।

কেউ কেউ দেখি মাঝে মাঝে শেয়ার দেন অমুকে শুধু একটা সুরা মুখস্থ করাকেই মোহরানা ধার্য্য করেছেন; কি ভালো, কি ভালো! ভালো কথা; আমিও রিজনেবল মোহরানার সমর্থক। মোহরানা সামর্থ অনুযায়ী-ই হওয়া উচিৎ। অযথা পাঁচ লাখ-দশ লাখ চাপিয়ে দেয়ার কোন মানে নেই।

কিন্তু বিয়ের পরে মেয়ের বাবা একঘর ফার্নিচার পাঠালে?
-না দেখেন আমরা তো চাই নাই, মেয়ের বাবা দিছে এখন কী আর করা!
--আপনি জানেন না এটা ইসলাম পছন্দ করে না? ফিরাইয়া দেন নাই কেন? (মানে মোহরানা ধার্য্যের আগে যেমন ধার্মিক ছিলেন আর কি!)!
-কেউ গিফট দিলে সেটা কি ফেরত দেয়া যায়! এটা কি বললেন? আমাদের খান্দানে আমরা কেউ কোন গিফট দিলে ফিরাইয়া দেয়াকে অসম্মান মনে করি।
--সাধারণত বাংলার ঐতিহ্যবাহী কালচারে তো কেউ কাউকে কিছু গিফট দিলে সেইম কিছু গিফট পালটাও পাঠানো হয়। তো, আপনারা কি ভাবছেন? আপনাদের খান্দানে আপনারা কী করেন? একঘর ফার্নিচার মেয়ের বাড়িতেও পাঠাবেন? একটা ভদ্রতা আছে না?
-আপনি কি সব বলেন না!

--ও ভালো কথা, আপনি কি জানেন এটা হিন্দু ধর্মের কালচার? এটা পালন করলে হিন্দু ধর্মের রিচুয়াল ফলো করলেন! ধর্মানুভূতিতে কষ্ট লাগে না বিজাতীর ধর্ম পালন করলে?
-আরে ভাই আপনি যৌতুক আর গিফটের মধ্যে প্যাঁচ লাগাইয়া ফেলছেন! যেটা চেয়ে বা শর্ত দিয়ে নেয়া হয় সেটার নাম যৌতুক; এটা খারাপ। আর যেটা মেয়ের বাবা স্বেচ্ছায় দেয় এটা গিফট। এতে কোন সমস্যা নেই বুঝলেন! জোর করলেই সমস্যা বুঝলেন, জোর করলেই সমস্যা! মিচুয়ালি যা করতে পারেন তাতে ধর্মের কোন বাধা নাই।

--আপনার কি মনে হয় কেউ কাউরে এমন গলা সমান জিনিস-পাতি গিফট দেয়? আপনি কাউরে গিফট দিলে কী দেন? যেকোন একটা/দুইটা টোকেন আইটেম, তাই না? এই যে মেয়ের বাবা ঋণ করে আপনার ঘরভর্তি ফার্নিচার দিচ্ছে এটা কি খুব খুশি হয়ে দেয়? আপনার কি মনে হয়?
-একটা জিনিস কেনো বুঝতেছেন না! আমরা কিছু চাই নাই। এমন ও না যে মেয়ের বাবা কিছু না দিলে আমাদের বাড়ির কেউ মেয়েকে খোঁটা দিবে। আমরা এরকম না বুঝলেন?
--এই জন্যই বলি মেয়ের বাবাকে আপনার শক্তভাবে নিষেধ করা উচিৎ। কারন কেউ যখন নিজের ক্যাপাসিটি না থাকার পরও ঋণ করে আপনার ঘরে ফার্নিচার পাঠাচ্ছে তার মনে কি আছে জানেন?
-কি আছে?
--মেয়ের বাবার মনে আছে- আরে না চাইলে আরো বেশি দিতে হয়। ভদ্র ফ্যামিলি গুলো চায় না। কিন্তু মনে মনে ঠিক-ই আশা থাকে। না হলে দিলে তো মানা করে না! বলে না তো যে আমাদের লাগবে না। বরং না দিলে ভিতরে ভিতরে মন কালা করবে, ফোস্ফাস করবে। সুতরাং না দিয়ে উপায় নাই। ঋণ করে হলেও দিতে হবে।

এই যে মেয়ের বাবা আপনাদের সম্পর্কে একটা খারাপ ধারণা করে রাখলো এটা তো খারাপ। সে জন্যেই আপনার প্রতিবাদ করা উচিৎ। নিজের ইজ্জত রক্ষার জন্যই। নিজের ইজ্জত রক্ষার জন্য আরেকবার ধার্মিক হোন। অন্যায্য মোহরানা, অন্যায় যৌতুক/ফার্নিচার সকল অনৈসলামিক কাজের বিরুদ্ধেই সোচ্চার হউন। কষ্ট করে সংসার শুরু করেন, দু'জনে স্ট্রাগল করা শিখেন। আল্লাহ বরকত দিবে ইনশাআল্লাহ!

Collected

পঠিত : ১৫২১ বার

মন্তব্য: ০