Alapon

ইরাকের ইয়েজিদিরা কি প্রাচীন বৈদিক হিন্দু ?

● ইয়েজিদিদের মন্দিরগুলি দেখতে ভারতীয় মন্দিরগুলির মতো। মধ্যপ্রাচ্যের অনান্য ধর্মস্থানের সঙ্গে মন্দিরগুলির স্থাপত্যের দিক থেকে কোনও মিল নেই। বরং ভারতবর্ষের মন্দিরগুলির গোপূরমের সঙ্গে এই মন্দিরের স্থাপত্যের হুবহু মিল দেখতে পাওয়া যায়।

● ইয়েজিদিদের পবিত্রতম মন্দির, লালিশ মন্দিরের প্রবেশ পথে সর্প-প্রতীক দেখতে পাওয়া যায়। ইয়েজিদিদের কাছে সাপ পবিত্র এক প্রাণী । দক্ষিণ ও পূর্ব ভারতের বহু মন্দিরেও, প্রবেশ পথের ওপরে ও পাশে সর্প-প্রতীক দেখা যায় । দক্ষিণ ভারতের দেবতা মূরূগন নাগদের অবতার স্বরূপ। এছাড়াও বাংলার মনসাপুজা, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে নাগপঞ্চমী , হিন্দুধর্মের পূজা অর্চনার সঙ্গে সর্পশ্রেণির যোগসূত্র প্রমাণ করে।

● ইয়েজিদিদের প্রধান আরাধ্য হলেন , দুই পাখনা মেলা ময়ূর-দেবতা মেলেক টাউস (Melek Taus)। উত্তর ভারতের কার্তিক, যিনি দক্ষিণ ভারতের দেবতা মুরুগন। একই রকম ময়ূরের পিঠে বসে থাকেন। হিন্দুদের শ্রীকৃষ্ণ ও কার্তিক ঠাকুরের সঙ্গে ময়ূরের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক আমরা সবাই জানি। ইয়েজিদিদের বাসস্থানের হাজার মাইলের মধ্যে ময়ূর পাওয়াই যায় না। অথচ , ময়ূর ইয়েজিদিদের প্রধান দেবতা। অন্যদিকে ভারতের জাতীয় পাখি ময়ূর।

● ইয়েজিদিরা ময়ূর আকৃতির প্রদীপ জ্বালিয়ে , ময়ূর মূর্তিতে চুম্বন করে পূজার্চনা করেন। ভারতের প্রায় জায়গায় , হিন্দুদের ময়ূর আকৃতির প্রদীপ জ্বালাতে দেখা যায়।

● ইয়েজিদিদের পবিত্রতম লালিশ মন্দিরের দেয়ালে আঁকা এক নারীর ছবি , ইয়েজিদিদের হিন্দু হওয়ার সপক্ষে একটি অকাট্য প্রমাণ। ছবিটি ময়ূরদেবতার সামনে বসে থাকা এক রমণীর। রমণীর পরনে আঁচল দেওয়া শাড়ি, শাড়িতে পাড়ও আছে। গায়ে আছে ব্লাউজ।খোঁপায় ফুলের মালা। ছবিটি দেখলেই মনে হবে কোনও ভারতীয় মহিলার ছবি। এই পোশাক, ইয়েজিদি জনগোষ্ঠীর হাজার মাইল চৌহদ্দির মধ্যে থাকা , অন্য কোনও জনগোষ্ঠীর মধ্যে দেখা যায় না। অন্যদিকে শাড়ি হল , ভারতে মহিলাদের জাতীয় পোশাক ।

● ইয়েজিদিদের আরেকটি প্রতীক হলো হলুদ সূর্য , যার একুশটি রশ্মি , ভারতীয় ধর্মে একুশ সংখ্যাটি পবিত্র , ইয়েজিদিরা একুশবার দেবতাকে নৈবেদ্য উৎসর্গ করেন। হিন্দুরাও গণেশপূজায় একুশবার লাড্ডু উৎসর্গ করেন।
● হিন্দুরা যে রকম ভাবে , পূজার থালায় প্রদীপ বসিয়ে থালা সমেত হাত ঘুরিয়ে আরতি করেন। ইয়েজিদিরাও সে ভাবে আরতি করেন।
● হিন্দুরা দেবালয়ে হাতজোড় করে প্রার্থনা করেন । ইয়েজিদিরাও এ ভাবেই তাঁদের মন্দিরে প্রার্থনা করে থাকেন।
● হিন্দুদের মতোই ইয়েজিদিরা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তর সময়ে পূজাপ্রার্থনা করেন।

● হিন্দুরা খতনা করেন না । মধ্যপ্রাচ্যে থেকেও ইয়েজিদিরা মধ্যপ্রাচ্যের সংখ্যা গরিষ্ঠ ধর্মাবলম্বীদের মতো খতনা করেন না।
● হিন্দুদের মতোই ইয়েজিদিরা পুজোর পর কপালে টিকা বা তিলক লাগান ।
● বড় বড় উৎসবে, মন্দিরের আঙিনায় অসংখ্য প্রদীপ জ্বালান ইয়েজিদিরা। ঠিক হিন্দুদের দীপাবলীর মতো।
● ইয়েজিদি পুরোহিত হিন্দুদের মতোই আগুন জ্বালিয়ে যজ্ঞ করেন। হিন্দুদের মতই যজ্ঞের আগুন অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করেন ইয়েজিদিরা ।

● ইয়েজিদি মন্দিরের মধ্যে ত্রিশূল আকৃতির ধাতব শলাকা , ঘট আকৃতির জলের পাত্র দেখতে পাওয়া যায় ।
● পূজার সময় শঙ্খধ্বনির মতো আওয়াজ করা হয় যন্ত্রতে ফুঁ দিয়ে ,ঢোল জাতীয় বাদ্যযন্ত্র বাজানো হয় , উলুধ্বনি দেওয়া হয় ।
● হিন্দুরাও পুনর্জন্মে বিশ্বাস করেন। ইয়েজিদিরাও পুনর্জন্মে বিশ্বাস করেন।

সংগৃহিত...

পঠিত : ১৩২১ বার

মন্তব্য: ০