Alapon

আসিফ আকবর; শিল্পী স্বত্ত্বার আড়ালে পাশবিক মনুষত্ব...

আসিফ আকবর শিল্পী মানুষ কিন্তু মনের মধ্যে পোষেন দানবীয় ঘৃণা আর অহংকার। আমার ধারনা ছিল ছিল শিল্পী মানুষের মন ভাবুক হয়, নরম হয়। কিন্তু আসিফ আকবরের রোহিঙ্গাদের নিয়ে দেয়া পোস্ট পড়ে মনে হচ্ছে উনি কোঠর বর্ণবাদী মানুষ। ওনার ভাষায় "রোহিঙ্গারা মানুষের পর্যায়ে পরেনা।" তাদের প্রতি এক বুক বিশদ্গার নিয়ে এক স্ট্যাটাস প্রসব করেছেন। সেই স্ট্যাটাসে ১৪+ হাজার লাইক পড়েছে, ৪০০ শেয়ার, আর ৮৪২ সমমনাদের কমেন্ট।

রোহিঙ্গাদের আয়ের উপায় না থাকলে, আর দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষা থেকে দূরে রাখলে তাদের পেট চালানোর দ্বিতীয় আর তৃতীয় শ্রেণীর উপায় তারা খুজে বের করে নিবে, সেটাই স্বাভাবিক। সেই ব্যাপারে না লিখে তাদের পুরাপুরি ভাবে জাতিগত ভাবে দোষ দেয়া মানে আপনি রাখাইনে তাদের উপরে করা জুলুম এর ব্যাপারে অজ্ঞ আর উদাসীন। ঘটনা কেন ঘটে, কিভাবে ঘটে তার গবেষণা আর পর্যালোচনা করতে আপনি অক্ষম। আপনি ভয়ঙ্কর মানসিকতার একজন মূর্খ মানুষ।

আপনি যদি মনে করেন কেবল সেনা পুলিশের লাঠির ভয়ে তারা সারা জীবন ভিক্ষার ঝুলি হাতে অপরের দিকে চেয়ে থাকবে তাহলে আপনি মানুষের সাইকোলজি বুঝেন না। আপনি আশা করেন যেহেতু বাংলাদেশ তাদের আশ্রয় দিয়েছে তাই তারা নতজানু হয়ে বাংলাদেশের দাশ বনে যাবে, তাদের বাচ্চা -কন্যাদের আপনাদের গুণ্ডারা তুলে নিয়ে গেলেও তারা অস্ত্র হাতে তাদের রক্ষার জন্য কোন রকম ব্যবস্থা করবে না, কিংবা এই ধরনের শরণার্থী শিবিরে শরণার্থীরা কি কি ধরনের ক্রাইমের শিকার হয় আপনার আসলেই ধারনা নাই। আপনি আসলেই গণ্ডমূর্খ। আপনি যদি আসলেই সরকারের রোহিঙ্গাদের পিছনে ৭২ হাজার কোটি টাকা খরচ করার প্রোপাগান্ডা বিশ্বাস করেন তাহলে আপনার এখনই সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম থেকে অবসর নেয়ার সময় হয়েছে। রোহিঙ্গারা এজ এ গ্রুপ আপনাদের বাড়া ভাতে ছাই দেয়নি, তাদের জন্য বাইরে থেকে টাকা আসছে, সেই টাকায় বাংলাদেশের ছেলেপুলেরও কর্মসংস্থান হচ্ছে। আরও হবে। ওরা আপনার টাকায় হাত দেয়নি বরং আপনারা ওদের কল্যানে দুই পয়সা কামিয়ে নিচ্ছেন।

রোহিঙ্গারা কেন সভা সমাবেশ করে তাতে আপনাদের আপত্তি, কারন আওয়ামী সরকার আপনাদের সভা করতে দেয় না। অর্থাৎ এখানে আপনাদের বিশাল পরশ্রীকাতরতা, হিংসা কাজ করছে। রোহিঙ্গারা জাতিসঙ্ঘের তত্ত্বাবধানে আছেরে ভাই, সেখানে সভা করে নিজেদের জন্য দোয়া করার অধিকার তাদের আছে, তাদের দাবি জানানোর অধিকারও আদের আছে। বরং বাংলাদেশে আপনাদেরই কোন মিছিল সভার অধিকার নাই। সেখানে রোহিঙ্গাদের কোন হাত নাই, কিংবা রোহিঙ্গারা করছে বলে আপানারা করতে পারছেন না তাও না। এদেশে এক দল বাংলাদেশী আরেক দল বাংলাদেশীর শত্রু।

আপনারা যারা মানুষের অসহায়ত্বের সুযোগে তাদের গালমন্দ করেন, মা বাপ তুলে গালি দেন, জাতিগতভাবে বিষদগার করেন তারা মানুষের পর্যায়ে পড়েন কিনা তা নিয়ে অন্তত আমার মনে কোন সন্দেহ নাই। যারা ভাবছেন রোহিঙ্গাদের কারনে বাংলাদেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে, তারা লম্বা করে এক দীর্ঘশ্বাস নেন, আর নিজেদের দিকে তাকিয়ে দেখুন। দেখবেন সেখানেই বসে আছে বড় বড় দানব যারা দেশকে আজ খোকলা করে দিচ্ছে।

রোহিঙ্গাদের বিষদগার না করে বরং তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ান, কেউ সারা জীবন পালঙ্কে ঘুমানর জন্য জন্ম নেন নাই। এক দিন না একদিন দশ হাত মাটির নীচে সবাইকেই যেতে হবে, সেদিন শেষ গোসল আপনাকে আর একজন রোহিঙ্গা মুসলমানকে একই ভাবে দেয়া হবে, কবরে একই ভাবে শোয়ান হবে। ঐ শেষ যাত্রায় কে রোহিঙ্গা আর কে বাংলাদেশী তার কোন ভেদাভেদ হবে না।

মানুষ হন, মানুষ। আর সরকারকে বলুন মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিকত্ব দিয়ে নিরাপত্তা বাধ্যতামুলক করে দেশে পাঠানর ব্যবস্থা করতে।



লিখেছেন: সাবিনা আহমেদ

পঠিত : ৯২১৩ বার

মন্তব্য: ০