Alapon

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে প্রচারণা, নেপথ্যে মূল কারণ...

রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে খুব পরিকল্পিতভাবে একটা প্রচারণা শুরু হয়েছে। কয়েকটা প্রিন্ট, অনলাইন ও টিভি গণমাধ্যম এতে লাগাতার ইন্ধন যোগাচ্ছে এবং নতুন নতুন কল্পকাহিনী তৈরি করে ছড়াচ্ছে। আর ভোগবাদি চিন্তায় আকণ্ঠ ডুবে থাকা বর্তমান সেক্যুলার শিক্ষাব্যবস্থার নীতি-নৈতিকতা ও মানবিকতাবোধে বিভ্রম শিক্ষিত কিছু তরুণ-তরুণীও তাতে সায় দিয়ে ক্ষোভ ঝাড়তে তাল মিলাচ্ছে। আর এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে বামপাড়ার সেক্যুলার পৌঢ়-বৃদ্ধরাও খোলস ছাড়তে শুরু করেছে....।

আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি এদের ঘৃণা ও আক্রোশ অনেকটাই মিয়ানমারের খুনিরা যেভাষায় কথা বলে, সে রকমই। রোহিঙ্গারা তো দেশে ফিরে যেতে চায় না - এমন বলেনি। বরং তারা শুধুমাত্র নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তাটুকুই চাচ্ছে। এটা পেলে তারা এক সাথেই মিয়ানমার ফিরে যাবে, এটাও বার বার বলেছে। এখানে রোহিঙ্গাদের দোষটা কোথায়???

যেই বিভীষিকাময় বিপদ থেকে প্রাণ বাঁচাতে তারা বাড়ি-ঘর, সহায়-সম্বল ও দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিল, সে চরম নিরাপত্তাহীনতার সামান্যতমও সমাধান ছাড়া মানুষগুলো মৃত্যুকূপে কি করে যেতে চাইবে- একবারও এসব রোহিঙ্গা বিদ্বেষীরা ভেবে দেখেছে?! রোহিঙ্গাদের প্রাণ বাঁচানোর দাবি একদম ন্যূনতম মানবিক দাবিটুকুই বড় অপরাধ হয়ে গেল? এতে রাতারাতি সবাই খুনি-সন্ত্রাসী ও অসভ্য বনে গেল??

আমরা একবারও কি ভেবে দেখেছি, এই মানুষগুলো আজন্ম ঘৃণা, লাঞ্ছনা ও মারপিঠ ও খুনাখুনির ঝড় মোকাবেলা করতে করতেই বেঁচে থাকে। মিয়ানমার রাষ্ট্রের তরফ থেকে এই মানুষগুলো শিক্ষা, সভ্যতা, সামাজিকতা শেখার একটুও তো সুযোগ কখনো পায়নি। তাদের অশিক্ষা ও মূর্খতার জন্য তো মিয়ানমারসহ এই সভ্য বিশ্বেরই লজ্জিত থাকবার কথা। কারণ, মিয়ানমার ও এই সভ্য বিশ্ব তাদরেকে লাঞ্ছনা-গঞ্জনা ও খুনাখুনি-দাঙ্গাহাঙ্গামা ছাড়া কিছুই শিখাতে পারেনি।

রোহিঙ্গা হতভাগাদের এতসব সংকট সত্ত্বেও ১১ লাখ মূর্খ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাঝে যে মাত্রায় অপরাধের কথা শোনা যায়, একটু হিসাব মেলান তো- বাংলাদেশের সভ্য ও সুশিক্ষিত সমাজে আমাদের মোট জনসংখ্যা অনুপাতে যে পরিমাণ অপরাধমূলক ঘটনা ঘটে, তা কি এই অসভ্য মূর্খদের চেয়ে আরো অনেক বেশি নয়??!!!

তাহলে এরা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের ভাষায় রাতারাতি ঘৃণা ছড়ানো শুরু করার কারণ কি??? এর উত্তর হল- ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষ থেকে, আর কিছু না।

একটু অনুসন্ধান করলেই দেখবেন, আজ রাতারাতি যারা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বিরুদ্ধে প্রচারণায় নেমেছে, তাদেরকে খুনি, অশিক্ষিত, মূর্খ ও অসভ্য বলে ঘৃণা উগলাচ্ছে, এদের একজনকেও কিন্তু কাশ্মীরের নিপীড়ত জনতা বা রাতারাতি রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়া লাখ লাখ বাঙালি অসমীয় মুসলমানদের বেলায় একটুও সমবেদনা প্রকাশ করতে দেখেবেন না।

যা আলামত দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশেই মনে হয় ইসলামোপোবিয়ার সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটতে চলছে। দুর্ভাগ্য আমাদের।।
সংগৃহিত...

পঠিত : ১৩০৭ বার

মন্তব্য: ০