Alapon

শোভন-রাব্বানী ফৌজদারি অপরাধে অপরাধী; আইন তাদের পাকড়াও করবে তো?

বর্তমানে দেশের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছাত্রলীগ। অতি সম্প্রতি আওয়ামিলীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের শোভন-রাব্বানীর কমিটি ভেঙ্গে দিয়েছেন। সেইসাথে শোভন-রাব্বানী তাদের স্ব স্ব পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তাদের বহুবিধ অপরাধের মধ্যে চাঁদাবাজির বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে।

বহু আলোচনার পর তাদের চাঁদাবাজির বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক তাদের চাঁদাবাজির বিষয়টি যখন মিডিয়ায় প্রকাশিত হল, তখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চাঁদাবাজির ঘটনা সামনে চলে আসে। একইসাথে কুষ্টিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে তাদের পদ বাণিজ্যের বিষয়টিও মিডিয়ার সামনে চলে আসে।

জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের চাঁদাবাজির বিষয়ে ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ি সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা ভিসি ম্যাডামের কাছে ন্যায্য হিস্যা চেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট বরাদ্দের নাকি ৪-৬ শতাংশ টাকা ছাত্রলীগের।’
এই শতাংশের হিসেবে ছাত্রলীগ পায় ৮৬ কোটি টাকা। কিন্তু তাদের ১ কোটি ৬০ লাখ দিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে বলা হয়। কিন্তু ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা পেয়েও শোভন-রাব্বানীর মন ভরেনি। আর এটি নাকি তাদের ন্যায্য পাওনা।

অবশেষে, পরিস্থিতি সামাল দিতে না পেরে জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ম্যাডাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন। আর প্রধানমন্ত্রী সব শুনে বিষ্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘তারা (শোভন-রাব্বানী) তোমাকেও ঝামেলায় ফেলেছে!’

প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, শোভন-রাব্বানীর এহেন অপকর্ম নতুন কিছু নয়। বরং তারা ক্ষমতা পাওয়ার পর থেকেই দল গোছানো বাদ দিয়ে নিজেদের আখের গোছানো শুরু করে। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি করে নিজেদের ব্যাংক ব্যালেন্স বাড়াতে থাকে।

আর এইসব বিষয় একত্রিত হয়ে তাদের ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, শোভন-রাব্বানী চাঁদাবাজির অপরাধে অপরাধী। চাঁদাবাজি একটি ফৌজদারি অপরাধ। তাই এই ফৌজদারি অপরাধের শাস্তি কেবল পদ থেকে অপসারণ করাই যথেষ্ঠ নয়। যেহেতু চাঁদাবাজি ফৌজদারি অপরাধ তাই তাদের আইনের আওতায় এনে, বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।

সেইসাথে তারা কিরূপ চাঁদাবাজি করেছে এবং চাঁদাবাজি করে তারা কতটা সম্পত্তি করেছে, তা অনুসন্ধানের দায়িত্ব দূর্নীতি দমন কমিশনকে প্রদান করা হোক। সেইসাথে আয়কর বিভাগকে তাদের সম্পত্তির উৎস অনুসন্ধানের আদেশ প্রদান করা হোক। দূর্নীতিদমন কমিশন এবং আয়কর বিভাগ যদি একযোগে অভিযান চালায়, তাহলে জাতি বুঝতে পারবে ছাত্রলীগের এদুই নেতা আঙুল ফুলে কতটা বড় কলাগাছ হয়েছে।

দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে বলব, শোভন-রাব্বানীকে কেবল পদ থেকে বহিষ্কার করাই সমাধান নয়। তাদের দল থেকে বহিষ্কার করে আমাদেরই বা কী লাভ! তারা অপরাধী। তারা ফৌজদারি অপরাধে অপরাধী। তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হোক। এইসকল অপরাধীদের বিচারের মুখোমুখি করা হলে, ছাত্রলীগ সারাদেশে যে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে, তা কিছুটা হলেও নিবৃত হবে। কিন্তু আদৌ কি এই দাবি পূরণ করা হবে?

পঠিত : ৮৪৫ বার

মন্তব্য: ০