Alapon

শিবির করা অপরাধ নয়, শিবির করা অধিকার...


সবচেয়ে ধাড়ি শয়তান কোনগুলো জানেন? যেসব মুখচোরারা বলছে- "শিবির করলেও" পিটিয়ে মেরে ফেলা ঠিক নয়'। এই কথা এবং এই ধরণের কথার মধ্যে লুকিয়ে আছে জগতকুলের সর্বাধিক ঘৃণ্য মুনাফেকি এবং হারামিপনা। নীতিহীন পশু না হলে এই কথা কোনও বিবেকবানের মুখে ফুটতে পারে না।

কেউ যখন বলে "শিবির করলেও পিটিয়ে মেরে ফেলা ঠিক নয়" তখন সেই মুনাফিকের বাচ্চা আদতে দুইটা অপরাধের বৈধতা দিয়ে দেয়। প্রথমত শিবির করাটাকে অপরাধ মনে করার মাধ্যমে ব্যক্তির রাজনৈতিক ও আদর্শিক অধিকারকে খর্ব করার অপরাধ। দ্বিতীয়ত, শিবির করলে পিটিয়ে মেরে ফেলা ঠিক না বলার মাধ্যমে মূলত এই বৈধতা দেয়া যে পিটিয়ে মেরে ফেলার আগ পর্যন্ত যা যা করা যায় তা তোমরা করতে পার। এজন্য তাঁরা 'ও' প্রত্যয় এবং 'ঠিক না' যোগ করে এই মুনাফেকি বাক্য তৈরি করেছে। এই মুনাফেক গুলোই আবার ভিন্নমতের অধিকারের নামে নবী ও রাসুলকে গালাগালি করা নাস্তিক, ও মুরতাদদেরকে নিরপরাধ মনে করে এবং তাঁদের পশম ছেঁড়াকেও অপরাধ বলে প্রচার করে। নগ্নতা, পরকিয়া, সমকাম ও বেহায়াপনাকে এরাই প্রশ্রয় দেয় অথচ শিবির করাকে এরা অপরাধ ও শাস্তিযোগ্য বিবেচনা করে। শুয়োর কুকুরেরও কিছু নীতি আদর্শ থাকে- এদের সেটাও নেই।

শিবির করা দুনিয়ার কোনও স্ট্যান্ডার্ডেই অপরাধ হতে পারে না। কারণ শিবির একটি ভিন্ন মত যার সাথে আপনি একমত হতেও পারেন আবার নাও হতে পারেন। কিন্তু শিবির করাকে অপরাধ মনে করাটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় অপরাধ। একইভাবে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্রমৈত্রি- ইত্যাদি দল করা কখনও অপরাধ নয়। এটাই হল ভিন্নমতের প্রতি সহনশীলতা এবং শ্রদ্ধা। কিন্তু এই দলগুলো করাকে অপরাধ মনে করাটাই হল ঘৃণ্য অপরাধ। এই মুনাফেকগুলো শিবিরের ক্ষেত্রে এসে এ কাজটাই করে। সেক্যুলার মুনাফিকদেরকে দেখে দেখে অনেক ইসলামী দলের লোকও এই মুনাফেকিতে যোগ দেয়। এগুলোই একেকটা পটেনশিয়াল খুনি বাপ্পাদিত্য বসু, বদরুল, অমিত সাহা এবং অগণিত অন্য ছাত্রলীগের খুনিরা এরাই।

এই 'ও' প্রত্যয় এবং 'ঠিক না' যোগ করে এরকম মুনাফেকি বাক্য প্রডিউস করে করেই মানুষ পেটানোর এই সংস্কৃতি চালু হয়েছে। এতে খুনিদের জন্য প্রশস্ত হয়েছে ছাত্ররাজনীতির ময়দান। আজকে আবরার মরে গেছে বলে খুনিগুলোর প্রায় সবাইকে পুলিশ গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়েছে। ইসকনের আশির্বাদে অমিত সাহা বেঁচে গেছে। কিন্তু শিবির সেক্রেটারী জেনারেল সিরাজুল ইসলামের মতো আবরার যদি বেঁচে থাকতো তাহলে কি হত? তাহলে এই খুনিদের কেউ কেউ ক্যাম্পাসের অপ্রতিদ্বন্দ্বী বড়ভাই'র সম্মান পেতো। বুক ফুলিয়ে ঘুরতো। আড্ডায় হাসির ছলে বলাবলি হতো- বেশি বুঝার জন্য আবরার এমন বাটাম খাইসে না! উফ সেই! একদম সেই! খুনিরা সামনে পড়লে রাস্তা ছেড়ে দিয়ে "ভাই স্লামালেকুম" বলত। চায়ের দোকানে ভাইকে দেখে তাহেরি হুজুরের মত বলত- ভাই চা খাবেন? ঢেলে দেই!

আমরা জানি শিবির সেক্রেটারি সিরাজকে কারা মেরেছে এবং সেই মাইরের জন্য তাঁরা এখন কতোটা সম্মান ও প্রতিপত্তি হাসিল করেছে। এই ধারা আজকে থেকে শুরু হয় নাই- শহিদ মালেক ভাইয়ের খুনিরা মন্ত্রীও হয়েছিল। এই খুনিদের ভিত্তিমুলই হচ্ছে "শিবির করা" কে অপরাধ মনে করা। এই মুনাফেকি ও হারামি মতবাদ বাংলাদেশের রাজনৈইতক খুনের প্রধান ভিত্তি। সুতরাং যারা এসব কথা বলে তাঁরা সবাই একেকটা পটেনশিয়াল খুনি। এদের মুখে একদলা থু দিন। কারণ শিবির করা অপরাধ নয়- শিবির করা হল যার যার ব্যক্তিগত অধিকার।

লিখেছেন: জাবাল আত তারিক

পঠিত : ১৭৫৩ বার

মন্তব্য: ০