Alapon

বাংলাদেশ কি ভারতের স্বার্থরক্ষায় গিনিপিগের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে?


লক্ষ্য করে দেখেছি, মুসলিম দেশগুলোতে যখনই কোনো ঘটনা ঘটে তখন ইহুদি নাসারা তথা মোসাদের ষড়যন্ত্রের কথা শোনা যায়। আর বাংলাদেশে রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক ও অসাম্প্রদায়িক যে ঘটনাই ঘটুক না কেন, তার সাথে পাশ্ববর্তি রাষ্ট্র ভারতের নাম এবং ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর নাম।

মুসলিম বিশ্বগুলোতে মোসাদের যোগসাজস আছে কিনা তা সঠিকভাবে বলা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে বাংলাদেশের ঘটনাগুলোতে যে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে সে কথা আমি যেমন জানি, বাংলাদেশের সাধারণ জনতাও জানে।

গতকাল ফেনীর বোরহানউদ্দিনে সাম্প্রদায়িক বিষয়কে কেন্দ্র করে পুলিশ চারজন মুসলিমকে গুলি করে হত্যা করে। আহত হয় আরও বহু মানুষ।

আমি অন্য কোনো বিশ্লেষণের দিকে যাবো না, মূল বিষয় ভারত ও ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-কে নিয়ে আলোচনা করব। বর্তমানে ভারতের রাষ্ট্রক্ষমতায় রয়েছে হিন্দুত্ববাদি সরকার। আর হিন্দুবাদি সরকারের হিন্দুগিরি করতে গিয়ে ভারতের অর্থনৈতিক অবস্থা প্রায় ভেঙ্গে পড়েছে। অন্যদিকে ভারতের রাজ্যগুলোতে শুদ্ধির নামে এনআরসি পরিচালনা করছে। এর ফলে প্রভাবিত রাজ্যগুলোর মানুষের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। এছাড়াও খুব শীঘ্রই বাবরি মসজিদ কেন্দ্রীক মামলার রায় হতে যাচ্ছে।

এমতাবস্থায় মোদি সরকারের দরকার অসন্তোষ। রাজ্যসহ পাশ্ববর্তি রাষ্ট্রগুলোতে হিন্দুত্ববাদ বিরোধী অসন্তোষ জাগ্রত করা দরকার। ভারতের রাজ্য এবং পাশ্ববর্তি দেশগুলোতে হিন্দুত্ববাদ বিরোধী অসন্তোষ জাগ্রত হলে আখেরে লাভ বিজেপি সরকার তথা মোদি সরকারের। কারণ, হিন্দুত্ববাদ বিরোধী আন্দোলন যতবেশি জাগ্রত হবে ভারতের মানুষের কাছে বিজেপি সরকারের প্রয়োজনীয়তা ততই বৃদ্ধি পাবে। ফলে ভারতের মানুষের কাছে বিজেপি ছাড়া বিকল্প কোনো পথ থাকবে না।

যত বেশি হিন্দুত্ববাদ বিরোধী আন্দোলন জাগ্রত করা যাবে, ভারতের সাধারণ মানুষের মানস থেকে অর্থনৈতিক বিষয়টি ততটা ম্লান হয়ে যাবে। আর অর্থনৈতিক বিষয়টি ম্লান হলেই বিজেপি সরকারের রক্ষা! আর ভারতের মানুষ যদি কেবল অর্থনৈতিক বিষয়ের দিকেই ফোকাস রাখে তাহলে এ কথা নিশ্চিত করেই বলা যায়, আগামী নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি হবে।

আর এই ভরাডুবি থেকে রক্ষা পেতে হলে বিজেপির প্রয়োজন সাম্প্রদায়িক সংঘাত। প্রয়োজনে উপমহাদেশ জুড়ে দাঙ্গা লাগাতেও বিজেপি পিছপা হবে না বলে আমার বিশ্বাস।

এগুলো প্রমাণসাপেক্ষ কথা নয়! আর এগুলো প্রমাণ করাও সম্ভব নয়। কারণ, বাংলাদেশের রন্থে রন্থে যেভাবে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’- এর প্রভাব দেখা যায়, তার ফলে সাম্প্রদায়িক কারণে যেসব সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে তার কোনোটিরই সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। সাম্প্রদায়িক প্রায় সব ঘটনার তদন্ত ফাইলই কোনো এক অজানা কারণে অপ্রকাশিত থেকে যায়। তা না গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, আর না বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

আর এসব কিছুই সরকার জানে। কিন্তু নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশ সরকার সব ঘটনাই মুখ বুঝে সয়ে যাবে। মাঝখান দিয়ে কিছু ধর্মপ্রাণ মুসল্লির জীবন যাবে। বহু মুসলিম জনতাকে পুলিশ হয়রানি করবে। আর মধ্যস্বত্বভোগি হিসেবে ফলাফল ঘরে তুলবে ভারতের হিন্দুত্ববাদি সরকার। অর্থাৎ, বাংলাদেশ এখন ভারতের স্বার্থরক্ষায় গিনিপিগের ভূমিকায় অবতির্ণ হয়েছে।

পঠিত : ৭০২ বার

মন্তব্য: ০