Alapon

বই রিভিউঃ দাওয়াম (আমার সংগ্রাম)

রিভিউঃ দাওয়াম (আমার সংগ্রাম)




লেখকঃ প্রফেসর ড. নাজমুদ্দিন এরবাকান 




প্রথমেই লেখক সম্পর্কে কিছু জেনে নেয়া দরকার। ছাত্রজীবনে
অত্যন্ত মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। জীবনের কোনো পরিক্ষায় দ্বিতীয় হননি। তার মেধার
কারনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় বর্ষেই তাকে ভর্তি করানো হয়। পেশায় ছিলেন
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।
 গবেষণা করেছেন অটোমোবিল ইঞ্জিন নিয়ে। জার্মানির বিখ্যাত
বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করেছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত লিওপার্ডো ট্যাংক নিয়ে।
এবং গবেষণায় উৎকর্ষতার সাথে সফলতা লাভ করেন




তিনি তুরস্কের ভারী শিল্পায়নের অগ্রদূত ছিলেন। কিন্তু নানা
প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়ে উপলদ্ধি করেন যে, দেশের সুবিধাবাদী গোষ্ঠী ভারী
শিল্পায়ন তথা স্বাবলম্বী তুরস্ক চায় না। তাই তিনি রাজনীতিতে আসার সিদ্ধান্ত নিলেন।




প্রতিষ্ঠা করেন ‘মিল্লি গুরুশ’ পার্টি। এর মাধ্যমে তুরস্কে আনুষ্ঠানিকভাবে
ইসলামী আন্দোলন যাত্রা শুরু করে। ‘মিল্লি গুরুশের’ উদ্দেশ্য হল-




১. আধ্যাত্নিক উন্নতি

২. অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা




৩. সকল মুসলিমদের একই প্লাটফর্মে নিয়ে আসা




নানা প্রতিকূলতা, জেল-জুলুম পার হয়ে নির্বাচনে ব্যাপক জয়লাভ
করে ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসে মিল্লি গুরুশ পার্টি
কিন্তু ইয়াহুদী ষড়যন্ত্রের কারণে ক্ষমতায় থাকতে পারে মাত্র ১১ মাস । এই ১১ মাসেই তুরস্কের ঈর্ষণীয় উন্নতি করেছেন। প্রতিষ্ঠা
করেছেন
D-8 (বাংলাদেশ
এর সদস্য)। কমিয়েছেন সুদের হার। বেতন বৃদ্ধি করেন ১০০ ভাগ, কোনো ক্ষেত্রে ১৫০ ভাগ।
শিল্পায়নের গতি ফিরিয়ে আনেন, মুসলিম দেশগুলোকে নিয়ে কমন মার্কেট চালু করেন। চক্ষুশুলে
পরিণত হন ইয়াহুদী গোষ্ঠীর




এই মহান নেতা ২০১১ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তুরস্কের বর্তমান
ক্ষমতাসীন একে পার্টির তাত্ত্বিক নেতা তিনি। তার জানাযায় সমাগত হন ৩৫-৪০ লাখ
মানুষ। লাশের খাটিয়া বহন করেন তার ছাত্রদ্বয় বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোগান ও
আব্দুল্লাহ গুল।




ড. এরবাকান ছিলেন একজন বিজ্ঞানের ছাত্র। মহাবিশ্বের এই
বিপুল সৃষ্টি যে আল্লাহর মহিমা প্রকাশ করছে তা বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে
বইটিতে তিনি দেখিয়েছন। বিজ্ঞানের ছাত্রদের জন্য অবশ্য পাঠ্য এই বইটি। বিজ্ঞান যে
আমাদের গতানুতিক চিন্তাধারার উর্ধ্বেও আরেকটি জিনিস তা দেখিয়েছেন তিনি। আজ জ্ঞান
বিজ্ঞানে মুসলিমরা পিছিয়ে, প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা নতি স্বীকার করতে চায় যেন পাশ্চাত্যকে।
কিন্তু পাশ্চাত্যের এই জ্ঞান বিজ্ঞানের ভিত্তি মুসলিমরাই তৈরি করে দিয়েছে। তাই
মুসলিমদের তিনি নিজস্ব চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে বলেছেন।




আপনি কি মনে করছেন? এই বিশ্ব শাসন করছে কে? আমেরিকা, ইউরোপ?
না, এই বিশ্ব শাসন করছে ইহুদী নিয়ন্ত্রিত গোপন বিশ্ব সরকার। যারা সংখ্যায় অল্প,
কিন্তু প্রভাব অপরিসীম। এই বিশ্ব সরকার সম্পর্কিত অবিশ্বাস্য তথ্য পাবেন বইটিতে।
অবিশ্বাস্য মনে হলেও লেখক যখন একজন বরণ্যে রাজনৈতিক নেতৃত্ব তখন বিশ্বাস আপনাকে
করতেই হবে।




মুসলিম বিশ্বকে এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে হলে জিহাদের
চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে। শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে হবে রাজনীতি, অর্থনীতি, বিজ্ঞান ও
প্রযুক্তিসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে। প্রতিষ্ঠা করতে হবে একটি ন্যায়ভিত্তিক বিশ্ব সমাজ।




তিনি ছিলেন একজন মুজাহিদ। মানুষের ন্যায়ভিত্তিক অধিকার
বাস্তবায়ন করার জন্য আজীবন সংগ্রাম করেছেন। বইটি মূলত বর্তমান শিক্ষিত যুবকদের
নিজেকে তৈরি করার জন্য একটি পাথেয়। একটি ইসলামী বিশ্বসমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আজীবন
সংগ্রামরত একজন মুজাহিদের জীবনী থেকে বর্তমান যুবকেরা নিজেদের অনুপ্রাণিত করতে
পারে
দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দেয়ার মত বই এটি, যা সৃষ্টি
করে শিহরণ
বইয়ের শেষে লেখক বলেছেন,




“যা কিছু করেছি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করেছি।”




Pdf- http://www.pathagar.com/book/detail/2141

Hard copy- 
https://goo.gl/btX5C7

পঠিত : ১৩৩১ বার

মন্তব্য: ০