Alapon

"পৃথিবী কাঁপানো এক বিখ্যাত মনিষীর কাহিনী "

পৃথিবীকাঁপানো এই বিখ্যাত মনিষীর
কাহিনী পড়ে আমি স্তম্ভিত হয়ে গেছি।
হায়রে মানব জীবন!
১৯৬১ সালে পুরো ভারতবর্ষে মাধ্যমিক
পরীক্ষায় প্রথম। এরপর ১৯৬৩ সালে
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া
থেকে মাত্র দুবছরের মাঝে গণিতে
মাস্টার্স ডিগ্রী লাভ করে ১৯৬৯
সালে গণিতে পিএইচডি।
Reproducing Kernels and
Operators with a Cyclic Vector- এর
জনক হিসাবে স্বীকৃতি। ১৯৬৯ সালেই
নাসার গবেষক হিসাবে যোগদান করে
১৯৭৩ সালে দেশ সেবার মহানব্রত
নিয়ে ফিরে আসেন ভারতে। নাসা'তে
উনার অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য বলা
হয়েছিলো- গণিতে যদি কোনো নোবেল
পুরস্কার থাকতো তবে সেটা উনারই
প্রাপ্য হতো। আইআইটি সহ ভারতের
একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনায়
নিজেকে নিয়োজিত করেন। তারপর শুরু
হতে থাকে ধীরে ধীরে উনার মানসিক
ভারসাম্য হীনতা। তিনি সিজোফ্রেনিয়া নামক একটি রোগে আক্রান্ত হন। (এ রোগের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ভুলভাল শোনা, উদ্ভট, বিভ্রান্তিকর বা অলীক কিছু দেখা এবং অসঙ্গতিপূর্ণ কথাবার্তা এবং চিন্তাধারা এবং অনুভূতির প্রকাশের মধ্যে সঙ্গতি থাকে না। এ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি সামাজিক বা কর্মক্ষেত্রে প্রায়শঃই অক্ষমতাজনিত অসুবিধার সম্মুখীন হন।)
উনি স্ত্রী, ঘর ,সংসার সবকিছু থেকে আলাদা হয়ে যান। প্রায় তিন বছর ব্যাঙ্গালোরের একটি মেডিকেলে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ১৯৮৮
সালের পর থেকে একেবারেই নিঁখোজ ।
কারো সাথে কোনো যোগাযোগ নেই। কেউ
জানেনা উনি বেঁচে আছেন নাকি মারা
গেছেন।
তারপর, ১৯৯২ সালে উনাকে পাওয়া
যায় গৃহহীন হয়ে বিহারের রাস্তার
ফুটপাথে অর্ধউলঙ্গ হয়ে শুয়ে আছেন।
কোনো কথা নেই, কাউকে চিনেন না।
গণিতের অসংখ্য সূত্র যিনি পৃষ্ঠার পর
পৃষ্ঠা মুহুর্তেই বলে দিতে পারতেন-
সেই বিদ্বান, মনিষী, গণিত বিজ্ঞানী
নিজের নামটিও আর বলতে পারেননা।
শুধু ভারত নয় , ক্যালিফোর্নিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ে উনি একনামে পরিচিত
গণিত বিজ্ঞানী হিসাবে -
ড: বশিষ্ঠ নারায়ণ সিংহ।
Dr. VashishthaNarayanSingh।
বিহারে যখন উনাকে ভবঘুরে অবস্থায়
পাওয়া যায় তখনকার এই ছবি-
পুরো ভারতবর্ষের মানুষ বিশেষ করে
শিক্ষিতজন উনার এই ছবি দেখে চমকে
ওঠেছিলো। টাইমস অব ইন্ডিয়ায়
হেডলাইন হয়। পাটনার এক ঘরে এখন
তিনি বলতে গেলে একেবারে একাকী
জীবন যাপন করেন।এই অসামান্য গুণী
মানুষের জীবন কাহিনী পড়ে আমি
নিথর,নীরব, নিস্তব্ধ হয়ে গেছি।
হারিয়ে গেছি এক ভাবনার জগতে।
হায়!! মানব জীবন!! আমরা কত বেশি
অসহায়!!! কত রহস্যময় এই পৃথিবী।
কখন,কেমন করে,কীভাবে যে কি হয়ে
যায়। নিমিষেই বদলে যায় মানুষের
জীবন। এই রকম জীবন্ত একটা দৃষ্টান্ত
থেকে যদি শিখার কিছু না থাকে তবে
আমাদের চেয়ে হতভাগা আর কেউ নেই।
নিমিষেই সবকিছু চূর্ণ হয়ে যায়।

পঠিত : ৭২৭ বার

মন্তব্য: ০