Alapon

পাল্টে যেতে পারে রাজনীতির গতিপথ।

রাজনীতির গতিপথ যেকোনো সময় পরিবর্তন হয়ে জেতে পারে। আর রাজনীতির দলগুলোর মধ্যে চলে আসতে পারে ভাঙ্গন ও পরিবর্তন। বাংলাদেশের ইতিহাসে দল পরিবর্তন সেটা খুব মামুলী ব্যাপার মাত্র। মুসলিম লীগ থেকে শুরু করে আওয়ামীলীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ও বিভিন্ন ইসলামীক দল সমূম ও ভাঙ্গন থেকে বাদ যায়নি। যারা মুসলিম লীগের জন্য রাতদিন কাজ করেছেন এবং একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন তাদের অনেকেই পরে আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত করেছেন।রাজনীতির নানা জটিলতা ও ঐক্যের বিকাশ ব্যাহত হওয়া আওয়ামীলীগের সভাপতি পদ ত্যাগ করে মজলুম জননেতা মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। যিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুব কাছের মানুষ ছিলেন।

যারা ১৯৬৯, ১৯৭০ ও মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দেশ স্বাধীন করেছেন তাদের মধ্যে অনেকেই ১৯৭২ সালের ৩১অক্টোবর ছাত্রলীগের বিভক্তির কারনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) প্রতিষ্ঠিত করেন।আর এরাই পরবর্তীতে আওয়ামীলীগ তথা বঙ্গবন্ধুর প্রধান বিরোধী দল হয়েছেন এবং ১৯৭৪ সালের ১৭ মার্চ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের প্রায় ৫০ জনের মত মানুষকে হত্যা করেছে ও তারপরে শুরু হয় জাসদের উপর স্টিম রুরাল তখন শাসক দল আওয়ামীলীগ।আর এখন জাসদ হল আওয়ামীলীগের প্রধান অঙ্গ সংগঠন, এটাই রাজনীতির আসল খেলা মনে হয়।

তৎকালীন RAW এর পরিচালক কাও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও তাকে হত্যার পরিকল্পনা যারা করছে, তাদের নাম প্রকাশ করেন ও তাদের গতিবিধি সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু কে বলেন কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেটা কোনভাবে বিশ্বাস করেননি। বঙ্গবন্ধু তাকে বলেন আপনি যাদের নাম বলেছেন তারা হল আমার সন্তানের মত। বঙ্গবন্ধু ও বা বিশ্বাস করবে কিভাবে এরাই ছিল তার খুব কাছের মানুষ।কিন্তু ১৫ আগস্ট তার সামনে এই মানুষ গুলোই একেএকে তার পরিবারের সকলকে ও তাকে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধুর প্রিয় বন্ধু, যার সাথে অনেক বছর কেটেছে বঙ্গবন্ধুর সে খোন্দকার মোশতাক ও বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে তিনি ভাষণ দিয়েছেন যে, যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে তারা হল এদেশের সূর্যসন্তান।

সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল জিয়াউর রহমান কে সিপাহির একটা অংশ বন্দি করে রেখেছে, তখন জেনারেল জিয়া তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহযোদ্ধা কর্নেল তাহেরকে খবর পাঠান তাকে উদ্ধার করার জন্য। কর্নেল তাহের বন্ধুর আহ্বানে তাকে উদ্ধার করেন।এবং জেনারেল জিয়া মুক্তির পর তাহেরকে জড়িয়ে ধরে বলেন বন্ধু তোমার এই উপকার আমি কখনো ভুলবনা। কিন্তু অবাক হওয়ার বিষয় হল জেনারেল জিয়া এই কর্নেল তাহেরকে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়েছেন। ক্ষমতার কক্ষপথ যেকোনো সময় পাল্টে যেতে পারে।

আজ যারা লাঠিয়াল বাহিনী কাল হয়তো তারাই শান্তির অগ্রদূত হতে পারে।এই দেশের ইতিহাস দেখলে বুঝা যায়, আওয়ামীলীগের অনেক প্রভাবশালী নেতাকর্মীরা অন্যদলে যোগ দিয়েছে।আবার অন্যদলের নেতাকর্মীরা একই কাজটি করেছে। এই দেশে জাতীয়বাদী ও বাম অাদর্শের নেতাকর্মী গুলো ক্ষমতার জন্য যেকোনো সময় দল পরিবর্তন ও প্রিয় ব্যক্তিকে হত্যা পর্যন্ত করেছে। তাই আজ যারা সামনের কাতারে শ্লোগান দিচ্ছে কাল হয়তো তারাই কলিজার মধ্যে আঘাত করতে পারে।এটাই অস্বাভাবিক কিছুই নয়, ইতিহাস কিন্তু তাই বলে। সর্বশেষ একটা উদাহরণ দিতে চাই, বাংলাদেশের ইতিহাসে এরশাদকে সবছেয়ে বড় স্বৈরশাসক ও বিশ্ব বেহায়া হিসাবে আমরা জানি। তিনি গত ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামীলীগের সাথে যাবেনা এসব কথা বলতেন এবং যদি যান তাহলে লোকে তাকে থুথু দিবে কিন্তু দিনশেষে তিনি আজ প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত।

প্রতিযোগিতা- জুলাই'১৮

পঠিত : ১১৮৪ বার

মন্তব্য: ০