Alapon

ভোটে দাঁড়ালেই যত সমস্যা!

বন্যা হয়েছে! সবার আগে ত্রাণের বহর নিয়ে দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ায় জামায়াতে ইসলামী। ঝড় হয়েছে? অগ্নিকান্ড হয়েছে? রোহিঙ্গা এসেছে? দুর্যোগ এসেছে? সবসময় যে সংগঠনের উপস্থিতি চোখে পড়ে তারা হলো জামায়াতে ইসলামী।

উন্নত চিকিৎসার জন্য যখন এদেশের মানুষের মাদ্রাজ, কোলকাতা, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর লন্ডনে যেতে হতো, সেই বাংলাদেশেই উন্নত চিকিৎসার মডেল তৈরী করেছে জামায়াত। 

বেকারত্ব নিয়ে লম্বা লম্বা বক্তব্য দেয়ার লোক ও সংগঠন আছে অনেক। কিন্তু বেকারত্ব দূর করতে বাস্তবমুখী কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতের চেয়ে কি কেউ এগিয়ে আছে?

ভাগ্যাহত, দারিদ্র পীড়িত, অভাবী ও দুঃস্থ মানবতার সেবা দরকার? উদার চিত্তে হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে জামায়াতে ইসলামী।

এরকম ফিরিস্তি তুলে ধরতে গেলে বড়সড় গবেষণার প্রয়োজন আছে। আমি সেই গবেষণার দিকে আজ অন্তত যাচ্ছি না। জামায়াতে ইসলামীর এসব ইতিবাচক কর্মকাণ্ড নিয়ে কারো আপত্তি নেই। বরং জামায়াতের ঘোর বিরোধী লোকদেরকেও জামায়াতের নিকট থেকে এসব সুবিধা দেদারসে গ্রহণ করতে দেখেছি। 

তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে জামায়াত নিয়ে সমস্যা কোথায়?

উত্তর হলো ভোটে দাঁড়ালেই সমস্যা। জামায়াতে ইসলামী আর যাই করুক, রাজনীতি করতে পারবে না। রাজনীতি করতে পারবে, ভোটে দাঁড়াতে পারবে না। ভোটে দাঁড়াতে পারবে কিন্তু নিজেদের দলীয় প্রতীক নিয়ে দাঁড়াতে পারবে না।

যদি সব বাধা ঠেলে দাঁড়ায় তাহলে?

তাহলে একশ্রেণীর রাজনীতিবিদরা বলবে রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরাধী, একাত্তরের পরাজিত শক্তি। আরেক শ্রেণীর রাজনীতিবিদরা বলবে - আঁতাত, দালাল, বেঈমান, সুবিধাবাদী। আরেক শ্রেণীর রাজনীতিবিদরা বলবে দাঁড়ি কম, টুপি পরে নাই, লম্বা জামা নাই ইত্যাদি ইত্যাদি। বুদ্ধিজীবী নামধারী বুদ্ধিসন্ত্রাসীরা বলবে প্রতিক্রিয়াশীল, ধর্মান্ধ আরও কত কি!

সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি নিয়ে নির্বাচনে নেমেছেন সিলেট মহানগরী জামায়াতের আমীর এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। এই নির্বাচনে নেমেই যেন তিনি মহা অপরাধটি করে ফেলেছেন। এখন তাকে বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন তকমা দেয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। সিলেটে সিটি নির্বাচনে নামা সকল প্রার্থীদের মধ্যে তিনি সর্বোচ্চ শিক্ষিত। তিনি একনাগাড়ে একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ, সজ্জন ব্যক্তিত্ব, সাবেক ছাত্রনেতা। যেমন তেমন ছাত্রনেতা নন। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন যাবত সিলেটের রাজনীতির সাথে জড়িয়ে থাকলেও তাকে মেয়র হিসেবে দেখতে বেশ কয়েকটি পক্ষ কোন কারণ ছাড়াই নারাজ। কিন্তু তাতে কি দমে যাবেন এডভোকেট জুবায়ের?

১২ টি সিটি নির্বাচনের মধ্যে ১১টিতেই ২০ দলীয় জোটের স্বার্থ তথা বৃহত্তর স্বার্থের কথা চিন্তা করে জোটের মূল শরীককে ছাড় দিয়েছে জামায়াত। তাতে বাহবা মিলেছে। কিন্তু যেই ১ টিতে জামায়াত মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করেছে, অমনি শুরু হয়ে গেল কুচক্রীদের ষড়যন্ত্র আর অপপ্রচার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি ষড়যন্ত্রকারীরা বিজয়ী হবে?

পঠিত : ১৪০১ বার

মন্তব্য: ০