Alapon

“ নতুন এক রাষ্ট্রনায়কের খোঁজে বাংলাদেশ “


সুজলা-সুফলা শস্য শ্যামলা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর একটি নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর দেশ বাংলাদেশ । এদেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি রয়েছে ব্যাপক প্রাকৃতিক সম্পদ। এছাড়াও জনসংখ্যার দিক দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বে অষ্টম অবস্থানে রয়েছে।আমাদের এই প্রাকৃতিক সম্পদ ও ব্যাপক জনসংখ্যাকে দক্ষ  মানবসম্পদে পরিনত করার জন্য প্রয়োজন বাস্তবসম্মত ও যুগোপযোগী শিক্ষা। বাংলাদেশে আজ শিক্ষা ব্যবস্হা ধবংসের মুখে। এখানে আজ পরীক্ষায় পাশ নির্ভর পড়ালেখা চলছে। পড়ালেখার গুনগত মানও শিক্ষার্থীদের নৈতিক মান বৃদ্ধির ব্যাপারে যুগোপযোগী কোন পদক্ষেপ নেই। এখানে আজ চলছে নৈতিকতা বিবর্জিত একটি মেরুদণ্ডহীন শিক্ষা ব্যবস্হা। যে শিক্ষা ব্যবস্হা স্বার্থপরতা ছাড়া কিছুই শিখায় না। যার ফলশ্রুতিতে প্রতিনিয়ত হাজার শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করে বের হচ্ছে ঠিকই কিন্তু তারা মাতৃভূমির টানে দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী করার ক্ষেত্রে লক্ষনীয় কোন ভূমিকা রাখছেনা।


আমাদের এই প্রাকৃতিক সম্পদ ও ব্যাপক জনসংখ্যাকে যদি সরকার পরিকল্পিতভাবে মানবসম্পদে পরিনত করতে পারতো তাহলে আমরা এতদিনে বিশ্বের দরবারে একটি  উন্নত সমৃদ্ধশালী রাষ্ট্রে পরিনত হতে পারতাম। আমরা অন্যের কাছে অনুকরনীয় ও অনুসরণীয় হতে পারতাম। অথচ এতকিছু থাকার পরও আমরা এখনো পরনির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে পারছিনা।


এদেশের রাজনীতি, সাংস্কৃতি,শিক্ষানীতি, বিচারনীতি,ব্যবসানীতি সর্বক্ষেত্রে আমরা পরনির্ভর একটি জাতিই রয়ে গেলাম। যেদেশের মানুষ ১৯৪৭ সালের পর থেকে শোষণ, নিপিড়ন, বঞ্চনার শিকার সেদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে নিজেদেরকে আলাদাভাবে স্হান করে নেওয়ার জন্যই ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের মতো স্মরণীয় নানান ত্যাগের মাধ্যমে বাংলাদেশ নামক এই ভূখণ্ডের জন্ম।পরনির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসার জন্যই যার এত ত্যাগ কুরবানী সেই রাষ্ট্রটিই এখন আবার পরনির্ভরতার শিকল পরে আছে।

এই পরনির্ভরতার পিছনে দায়ি কে? জনগন নাকি শাসক? নিশ্চয়ই শাসক। এই পরনির্ভরতা কি আমাদের বাস্তবতা নাকি শাসকের নিজের সৃষ্ট?? আসলে এই দেশটাকে পরনির্ভরতা থেকে মুক্তির জন্য একজন সাহসী দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়ক প্রয়োজন ছিল। এদেশে যারা রাষ্ট্রনায়কের ভূমিকায় এসেছে সবাই দিনশেষে নিজের ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার লক্ষ্যে কর্তৃত্ববাদীর ভূমিকায় অবর্তীর্ণ হয়েছে।কেউ তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি। যে নিজে শোষনের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলেছে দিনশেষে সে নিজেই শোষকের ভূমিকায় অবর্তীর্ণ হয়েছে। তাহলে এই জাতি কার কাছে প্রত্যাশা করবে?? কার প্রতি বিশ্বাস রাখবে?

এমনি এক পরিক্রমায় নতুন এক রাষ্ট্রনায়কের খোঁজে বাংলাদেশ পথ চেয়ে আছে।যে রাষ্ট্রনায়ক দেশের মানুষের চাহিদা বিবেচনায় নিয়ে দেশকে সুখি সমৃদ্ধশালী স্বনির্ভররাষ্ট্রে পরিনত করবে। এদেশের রাজনীতি, শিক্ষানীতি,সাংস্কৃতি,পররাষ্ট্রনীতি সবাই জনগণের চাহিদার আলোকে দেশের কল্যাণে নির্ধারিত হবে। দেশের শাসক নিজের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য অন্যের গোলামী করবেনা কিংবা নিজের দেশকে বিক্রি করে দিবেনা।দেশের শাসক সর্বদা জবাবদিহিতার অনুভূতি নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করবে।দেশের সর্বত্র সুস্থ রাজনীতি চর্চার সুযোগ থাকবে। সরকারি আমলা,শিক্ষক,বুদ্ধিজীবী,শ্রমিক, দিনমজুর, রাজনীতিবীদ ও মেধাবী ছাতজনতা সবাই তাদের যথাযথ মূল্যায়ন পাবে। হত্যা,খুন,গুম,ধর্ষণের চর্চা বন্ধ করে সর্বত্র এক অনাবিল সুখ ও শান্তি ফিরে আনবে। সরকার দক্ষ দেশপ্রেমিক ও মেধাবী ছাত্রসমাজ তৈরি করবে।কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্হাকে উন্নত করার মাধ্যমে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদকে কাজে লাগিয়ে অর্থনৈতিক চাকাকে সমৃদ্ধশালী করবে। প্রশাসনিক কাঠামোকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে ঢেলে সাজাবে এবং এর মাধ্যমে পরনির্ভরতা থেকে স্বনির্ভর জাতিতে পরিনত হবে।সর্বত্র বাকস্বাধীনতা ও মুক্ত- বুদ্ধিভিত্তিক চিন্তার স্বাধীনতা দেশকে দুর্নীতিমুক্ত,উন্নত ও অনুসরনীয় অনুকরনীয় রাষ্ট্রে পরিনত করতে ভূমিকা রাখবে।

 "সেরা ব্লগার প্রতিযোগিতা জুলাই-২০১৮"  

পঠিত : ১১৫৮ বার

মন্তব্য: ০