Alapon

‘মাফ’ কি নিজেই লজ্জায় দেশ ছেড়ে পালাবে?

যে পরিমাণ মাফ চাওয়া চায়ি হচ্ছে দেশে, তাতে মনে হচ্ছে মাফ নিজেই লজ্জায় দেশ ছেড়ে পালাবে। পৃথিবীর কোন দেশেই এত পরিমাণ মাফ চাওয়া চায়ি হয় না; যা হচ্ছে বাংলাদেশে।তাহলে ধরে নিতে হবে যারা মাফ চাওয়ার ওপর ব্যবসা খুলেছে তারা জানে যে যা তারা আয় করেছে অবৈধভাবে। তা ফেরত দেওয়া লাগবে না শুধু মাফ চাইলেই চলবে!

জাতির এখনও খুশি হবার মত তেমন কিছু হয়নি। এই মূহুর্তে ট্রাফিকের যে করুন অবস্থা তা সবাই জানা সত্ত্বেও সরকার এখনও তেমন কিছু করেননি। কারণ ট্রাফিক রুলস কেউ মানে না বাংলাদেশে তা প্রমাণিত হয়েছে। অবাক হবারও তেমন কিছু নেই যে তারা সিগন্যাল, গতি বা ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই রাস্তাঘাটে গাড়ি চালায়।

প্রত্যেকটি জায়গাতে, মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে আইন আদালত, কোর্ট কাচারী সব খানে ফলাফল একই আসবে যদি এভাবে তদন্ত করা হয়।

জাতির পিতা যখন ইলেকশন করেছিলেন শুধু তখনই জনগণের ন্যায্য ভোটে তার বিজয় হওয়া স্বত্বেও তাঁকে ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। যার কারণে আমরা পাকিস্তানকে চিরদিনের জন্য তাড়িয়েছিলাম। তাঁর মৃত্যুর পর বাংলার বুকে আর ইলেকশন সুষ্ঠুভাবে হয়নি বিধায় সর্বত্র আজ অরাজকতা বিরাজ করছে। এখনই সময় সব নোংরামির অবসান ঘটানো।

‘মিলে মিশে সব ধুয়ে মুছে সাফ করিব মোরা সকলে মিলিয়া গড়িব বাংলা নতুন করিয়া’! একই সঙ্গে দূর করা হোক কাগজের টাকা ডিজিটালের সাহায্যে। বিদায় দেবার সময় এসেছে অযোগ্যদের যারা বসে আছে দায়িত্বে, হোক না তারা মন্ত্রী বা সচিব মহোদয়! এদের রাখলে ঘটবে ব্যাঘাত দেশের উন্নয়নে।

নতুন প্রজন্ম ধরুক বাংলার হাল, সোনার বাংলা গড়তে। যা হচ্ছে দেশে তা বড় লজ্জা এবং দুঃখের বিষয়। এমতাবস্থায় বড্ড খারাপ লাগছে সুদূর প্রবাস থেকে। দয়া করে এবার ছাড়ুন গদি দেশকে রক্ষা করতে চান যদি। দুধ-কলা দিয়ে পুষবো না সাপ, কামড় দিবে পরে, তাই দরকার কম্পোলচারি বেসিক প্রশিক্ষণ।

যা দিতে হবে ছেলে-মেয়েদেরকে যখন তাদের বয়স হবে ১৮ বছর, সবাই এমন প্রশিক্ষণ পেলে বিপদে বা দরকারে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়বে দেশ রক্ষা করতে। বিশ্বাস করা চলবে না শুধু সশস্ত্র বাহিনী বা পুলিশ বাহিনীকে, তারাও ধরা পড়েছে এবারের জালে যখনই নিয়েছে আমাদের ছাত্র সমাজ গোটা কয়েক স্যাম্পল।

পড়েছে ধরা সবাই, বাদ পড়েনি কেউ, তাই বিশ্বাস করা কঠিন এখন দেশের বেতনভুক্ত দায়িত্বরত ব্যক্তিদের। নতুন ভাবনার উদয় হয়েছে তা হল দেশে বহিঃশত্রুর আক্রমণ হলে এরা তো দেশ ছেড়ে পালাবে? কারণ এরা তো দেশকে ভালবাসে বলে মনে হচ্ছে না! নিজের স্বার্থে বা পরিবারের স্বার্থে তো সবাই কাজ করে। কিন্তু পরের স্বার্থে যারা কাজ করে বা করতে আগ্রহী তাদেরকে দিতে হবে দায়িত্ব।

যারা শুধু নিজে ভোগ করার জন্য দেশের সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করছে তারা তো কখনও সোনার বাংলা গড়তে সাহায্যের হাত বাড়াবে বলে মনে হচ্ছে না! কারণ শুধু লেখা পড়ায় ভালো ছাত্র-ছাত্রী হয়ে দেশের ভাল সুযোগ সুবিধা দখল করলেই তো হবেনা যদি তাদের মধ্যে সামাজিক দায়িত্ববোধ, মনুষত্ববোধ না থাকে? তরুণদের প্রশ্নে মুগ্ধ হয়েছি।

বলে ড্রাইভারের লাইসেন্স নাই তা জানেন না তাহলে দেশ চালান কি করে? ভাল স্কুল, কলেজে পড়াশুনা করে কি এই নোংরামি শিখেছেন? কি প্রমাণিত হলো এ বারের যুদ্ধে?

বাংলার ছেলে-মেয়েরা সত্যিই রিয়েল বেঙ্গল টাইগারের মত অ্যাক্ট করছে। যেভাবে খপ করে ধরছে তাতে রেহাই পাবার উপায় নেই। গণতন্ত্রের গণজাগরণ মঞ্চে জনগণই ক্ষমতার শক্তি এবং তারা শত্রু এলে অস্ত্র হাতে ধরতে জানে, তাদের ভয় নেই তারা প্রতিবাদ করতে জানে।

যারা এই যুদ্ধে নেমেছে এবং দেশের স্বার্থে কাজ করছে তাদেরকে সনাক্ত করে তাদের এই মহৎ কর্মের ফলাফলের ওপর নজর দিয়ে তাদেরকে সুশিক্ষার অগ্রগামী সৈনিক পদবী দিয়ে উচ্চ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক।

দেশে যেহেতু নেতা এবং নেতৃত্বর অভাব তাই এখনই সময় এদেরকে ভবিষ্যতের লিডার করে গড়ে তোলা এবং বন্দ হোক পুরনো প্রথার। যেমন ‘বেকারত্বকে দূর করতে রাজনীতি করি’ মনে হচ্ছে এই কারণেই যারা রাজনীতির সাথে জড়িত তারা পরাজিত হচ্ছে দেশকে সঠিক পথে চালাতে এবং তাদের দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে।

বিভিন্ন সেক্টর, সচিবরা তার ভিতর প্রথম সারিতে পড়ে। আমার বিশ্বাস এই নতুন প্রজন্মের শিশু তারকারা ভালো প্রশিক্ষণ পেলে তারা পরবর্তীতে দেশকে সোনার বাংলাতে রূপান্তরিত করতে পারবে। যে শিক্ষা এই নতুন প্রজন্ম দিল গোটা জাতিকে তা দেখে আমাদের কি শিক্ষা হয়নি? সে হোক না মন্ত্রী বা সচিব বা অন্যকিছু কি দেখলাম একটি নিষ্পাপ শিশুর কাছে তাদের সব ক্রিমিনালিটি ধরা পড়ে গেল যা তাদের মুখ দেখেই প্রমাণিত হয়েছে।

ধিক্কার জানাই এ জীবনের, যেখানে ‘বল বীর বল চির উন্নত মম শীর’ হঠাৎ যদি তা বিলিন হয়ে যায়! প্রায় ছয় মাসের বেশি হল কলম ধরেছি, প্রত্যেকটি লেখাতে সতর্কবাণী দিয়েছি। কেউ কেউ কমেন্টস করেছে “চোরে শোনে না ধর্মের কাহিনী“ যদিও বেশির ভাগ লেখাতে জ্ঞানের কাহিনীই ছিল। পারিনি তাদের বাঁচাতে, তারা আজ গোটা জাতির কাছে ধরা পড়েছে। পড়েছে ধরা নিজের ছেলে-মেয়ের কাছে, ভাই-বোন, বাবা-মার কাছে। এমনকি সেই ভালবাসার সঙ্গিনীর কাছেও! মনে হয় না কেউ এখন এদের সাপোর্ট দিবে।

অথচ এসব অন্যায় তারা করেছিল তাদের আপনজনের জন্য! আহারে সুশিক্ষার জন্য ছয় মাস লেগেছি, বিশেষায়িত শিক্ষা প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে তার প্রতিফলন হোক তার জন্য লিখেছি। যে প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, জানতে হলে শিখতে হবে, ভালোলাগা থেকে ভালবাসা হবে, লার্নিং বাই ডুয়িং ও লার্নিং ফর্ম লার্নার কনসেপ্ট ব্যবহার করতে হবে। আজ সেই বিশেষায়িত শিক্ষা প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়েছে সারা বাংলাদেশে এবং নতুন প্রজন্ম সেই প্রতিষ্ঠান চালাচ্ছে।

তাঁরা তাদের মূরাল ভ্যালু, মানবতা ও মনুষ্যত্বকে কাজে লাগিয়ে পুরো দেশকে সুশিক্ষার কনসেপ্ট ব্যবহার করে শিখাচ্ছে সুশিক্ষা। লার্নিং ফর্ম লার্নার ও লার্নিং বাই ডুয়িং কনসেপ্টের মধ্য দিয়ে। আমাদের সুশিক্ষার চিন্তাধারার প্রতিফলন ঘটাতে হবে এবং সুশিক্ষার জন্য আমাদের কাজ অব্যাহত রাখতে হবে। খুশি হবো যদি নতুন প্রজন্ম বাড়ি ফিরে তাদের মা-বাবার কাছে প্রশ্ন করে ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ আয়কর ঠিকমতো দেয় কিনা? ঋণ খেলাপি কিনা? চাকরিজীবী হলে বেতন কতো?

বেতন ২০ হাজার হলে ৩০ হাজার টাকার ফ্লাট ভাড়া কিভাবে আসে? ছেলে-মেয়েকে যে প্রাইভেটে পড়ায় সে টাকার উৎস কী? ছেলে-মেয়ে বা পুরা পরিবারের হাতে হাতে যে দামী স্মার্ট বা আইফোন সেগুলো কোথা থেকে এলো? এগুলোরও পরিবর্তন আনতে হবে যদি হিসাবে গড়মিল হয়।

আদর্শ লিডার হতে হলে শুধু পরের নয় ঘরের খবরও রাখতে হবে। বাংলাকেই সোনার বাংলা করতে হবে এবং এটাই হবে সুশিক্ষার গোলস এবং অবজেকটিভস।

রহমান মৃধা সুইডেন থেকে

পঠিত : ১১১৭ বার

মন্তব্য: ০