Alapon

ঘুরে আসুন চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়া হতে

সীতাকুণ্ড অপরূপ প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্যের লীলাভূমি। এ এলাকা শুধু হিন্দুদের বড় তীর্থস্থানই নয় খুব ভাল ভ্রমনের স্থানও বটে। সীতাকুণ্ডের পূর্বদিকে চন্দ্রনাথ পাহাড় আর পশ্চিমে সুবিশাল সমুদ্র।

সীতাকুণ্ড বাজার থেকে ৪কি.মি. পূর্বে চন্দ্রনাথ পাহাড় (Chandranath Hill) অবস্থিত। আপনাকে পায়ে হেঁটে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যেতে হবে। কিন্তু পায়ে হেঁ‌টে ভ্রমনের মজাই আলাদা, কারন চন্দ্রনাথ পাহাড় শ্রেণীভূক্ত ছোট পাহাড় গুলো ব্যাসকুণ্ড থেকে শুরু হয়েছে। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যাবার পথে হিন্দুদের কিছু ধর্মীয় স্থাপনাও আপনার চোখে পড়বে। এখানে কিছু নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠীর মানুষও বসবাস করে, যারা ত্রিপুরা নামে পরিচিত এবং এখানে তাদের কিছু গ্রামও আছে।

আপনি যদি পাহাড়ের গভীরে যান তবে পাহাড়ের গায়ে জুমক্ষেত দেখতে পাবেন। গভীর পাহাড়ের ভেতরে আপনি বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করা ফুলের বাগানও দেখতে পাবেন। এখানে অনেকগুলো ঝর্ণা আছে তবে চন্দ্রনাথ পাহাড়ে যাবার পথে আপনারা শুধু একটি মাত্র ঝর্ণা দেখতে পারবেন, এস্থান থেকেই পাহাড়ে উঠার পথ দু ভাগে বিভক্ত হয়েগেছে, ডানদিকের দিকের রাস্তা প্রায় পুরোটাই সিঁ‌ড়ি আর বামদিকের রাস্তাটি পুরোটাই পাহাড়ী পথ, কিছু ভাঙ্গা সিঁ‌ড়ি আছে। বাম দিকের পথ দিয়ে উঠা সহজ আর ডানদিকের সিঁ‌ড়ির পথ দিয়ে নামা সহজ, তবে আপনি আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী পথ ব্যবহার করতে পারবেন।

এখানে সীতা মন্দিরের কাছে আরও একটি ঝর্ণা আছে তবে এটা শুকিয়ে গেছে, অন্য ঝর্ণা গুলো গভীর বনের মধ্যে অবস্থিত। বর্ষাকালে বৃষ্টিতে ধুয়ে গাছের পাতা যখন পরিষ্কার, সতেজ হয়ে যায় তখন দেখতে খুবই সুন্দর লাগে তখন পাহাড়গুলোকে দেখতে পূর্ণ যৌবনা মনে হয়। কিন্তু বর্ষাকালে পাহাড়ে উঠা খুবই বিপদজনক।

এটি একটি ভাল পিকনিক স্পট, কিন্তু অন্যগুলোর তুলনায় তেমন উন্নত নয়। এখানে ব্যাসকুণ্ডের পাশে একটি বিশাল মাঠ আছে যা গাড়ী রাখা, রান্না করা সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা যায়। তবে এখানে খাবার পানির কোন সুব্যবস্থা নেই, আপনাকেই খাবার পানির ব্যবস্থা করতে হবে অথবা দোকান থেকে বোতলজাত পানি কিনে খেতে হবে।



কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে এসি, ননএসি বাস ছাড়ে সায়দাবাদ বাস ষ্টেশন থেকে। আরামদায়ক এবং নির্ভর যোগ্য সার্ভিস গুলো হল এস.আলম, সৌদিয়া, গ্রীনলাইন, সিল্ক লাইন, সোহাগ, বাগদাদ এক্সপ্রেস, ইউনিক প্রভূতি। সবগুলো বাসই সীতাকুণ্ডে থামে। চট্টগ্রাম থেকে বাসগুলো মাদারবাড়ী, কদমতলী বাসষ্টেশন থেকে ছাড়ে। তা ছাড়াও অলঙ্কার থেকে কিছু ছোট গাড়ী ছাড়ে ( স্থানী ভাবে মেক্সী নামে পরিচিত) সেগুলো করেও আসা যাবে।

এছাড়া ঢাকা থেকে ছেড়েঁ আসা দ্রুতগামী ট্রেন “ঢাকা মেইল” সীতাকুণ্ডে থামে, এটি ঢাকা থেকে ছাড়ে রাত ১১টায় এবং সীতাকুণ্ডে পৌঁছে পরদিন সকাল ৬.৩০ থেকে ৭টায়। অন্যান্য আন্তঃ নগর ট্রেন গুলো সরাসরি চট্টগ্রামে চলে যায়। শুধুমাত্র শিবর্তুদশী মেলার সময় সীতাকুণ্ডে (Sitakunda) থামে।

চট্টগ্রাম শহর থেকে আপনি নিজ উদ্যোগে পারিবারিক ভাবে সিএনজি অটো রিক্সাতে করে ঘুরে আসতে পারবেন ভাড়া নিবে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। আপনি যদি পাবলিক বাসে যেতে চান তবে আপনাকে নগরির অলংকার কিংবা এ কে খান মোড় থেকে বাসে উঠতে হবে ভাড়া নিবে ২০ টাকা প্রতি জন।

কোথায় থাকবেন
চট্টগ্রামে নানান মানের হোটেল আছে। নীচে কয়েকটি বাজেট হোটেলে নাম ঠিকানা দেয়া হলো। এগুলোই সবই মান সম্পন্ন কিন্তু কম বাজেটের হোটেল।

১. হোটেল প‌্যারামাউন্ট, স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম : নুতন ট্রেন স্টেশনের ঠিক বিপরীতে । আমাদের মতে বাজেটে সেরা হোটেল এটি। সুন্দর লোকেশন, প্রশস্ত করিডোর (এত বড় কড়িডোর ফাইভ স্টার হোটেলেও থাকেনা)। রুমগুলোও ভালো। ভাড়া নান এসি সিঙ্গেল ৮০০ টাকা, ডাবল ১৩০০ টাকা, এসি ১৪০০ টাকা ও ১৮০০ টাকা। বুকিং এর জন্য : ০৩১-২৮৫৬৭৭১, ০১৭১-৩২৪৮৭৫৪

২. হোটেল এশিয়ান এসআর, স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম : এটাও অনেক সুন্দর হোটেল। ছিমছাম, পরিছন্ন্ হোটেল। ভাড়া : নন এসি : ১০০০ টাকা, নন এসি সিঙ্গেল। এসি : ১৭২৫ টাকা। বুকিং এর জন্য – ০১৭১১-৮৮৯৫৫৫

৩. হোটেল সাফিনা, এনায়েত বাজার, চট্টড়্রাম : একটি পারিবারিক পরিবেশের মাঝারি মানের হোটেল। ছাদের ওপর একটি সুন্দর রেস্টুরেন্ট আছে। রাতের বেলা সেখানে বসলে আসতে ইচ্ছে করবেনা। ভাড়া : ৭০০ টাকা থেকে শুরু। এসি ১৩০০ টাকা। বুকিং এর জন্য -০৩১-০৬১৪০০৪

৪. হোটেল নাবা ইন, রোড ৫, প্লট-৬০, ও,আর নিজাম রোড, চট্টগ্রাম। একটু বেশী ভাড়ার হোটেল। তবে যারা নাসিরাবাদ/ও আর নিজাম রোড এলাকায় থাকতে চান তাদের জন্য আদর্শ। ভাড়া : ২৫০০/৩০০০ টাকা। বুকিং এর জন্য – ০১৭৫৫ ৫৬৪৩৮২

৫. হোটেল ল্যান্ডমার্ক, ৩০৭২ শেখ মুজিব রোড, আগ্রাবাদ, চট্টগ্রাম : আগ্রাবাদে থাকার জন্য ভালো হোটেল। ভাড়া-২৩০০/৩৪০০ টাকা। বুকিং এর জন্য: ০১৮২-০১৪১৯৯৫, ০১৭৩১-৮৮৬৯৯৭

পঠিত : ৯৪৫ বার

মন্তব্য: ০