Alapon

সব সুযোগ কাজে লাগাতে নেই!

বেগানা নারী-পুরুষ পরস্পরের প্রতি ছোট-বড়-মাঝারি ধরণের আকর্ষণ বোধ করবে না, তা হতেই পারে না। আকর্ষণ বোধ না থাকাটাই বরং ব্যতিক্রম কিছু। এমতাবস্থায় বিপদসীমা অতিক্রম না করার প্রথম বাঁধা আল্লাহর ভয়। দ্বিতীয় বাঁধা স্বামী-স্ত্রী পরস্পর বা অভিভাবকের তাদারকি। তৃতীয় বাঁধা সামাজের ভয় এবং সর্বশেষ প্রতিবন্ধক হচ্ছে সুযোগের অভাব।

এ দুষ্টু ক্ষতটি তৈরীতে 'সুযোগ' শব্দটির রয়েছে উল্লেখ যোগ্য ভুমিকা। একেবারে দুষ্ট নর-নারীরাও সুযোগের অভাবে নোংরামী থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হয়। আবার এই সুযোগ নামক অন্ধকার যায়গাটি কুরআন-হাদীস নিয়ে গবেষণারত কোন মানুষকেও শয়তানিতে নিমজ্জিত করতে পারে। আল্লাহ ক্ষমা করুন, বিভিন্ন দ্বীনি মাদ্রাসায় যে দু'চারটি লুৎ নবীর(আঃ) উম্মতের খাসলত প্রকাশ পাচ্ছে তা সুযোগের অসদ্ব্যবহারের ফল।

বর্তমানে ফেসবুকসহ যাবতীয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে আমরা 'সুযোগ' নামে আখ্যায়িত করতে পারি। আপনি আমি যত বড় মুফতি মুহাদ্দিস হই না কেন, সুযোগ আমাকে আপনাকে ঘায়েল করতে খুব একটা সময় নেবে না।

সেজন্য যদি আমাদের নিজেদের এবং আমাদের সন্তান-সন্তুতিদের জন্য যথা সম্ভব 'সুযোগ'টাকে অন্ধকার থেকে আলোতে রাখতে পারি তাহলে কিছুটা হলেও সুফল পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এজন্য যা করতে হবে-
১. বিবাহিত হলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমস্ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পাসওয়ার্ড উম্মুক্ত রাখতে হবে। এর পরও কোন ফাঁক ফোকরে শয়তানীতে জড়িয়ে পড়লে তা ভিন্ন কথা।

সেদিন এক বন্ধুর একটা স্ট্যাটাস পড়ে মনে মনে বেশ হাসলাম। তিনি নিজেকে খুবই সংযমী এবং নারীদের প্রতি খুবই সম্মানজনক দৃষ্টিভঙ্গী রাখেন, এমনকি বেগানা নারী-পুরুষের মধ্যে যে একটা অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটতে পারে তা চিন্তার করার মানসিকতাও পোষণ করেন না, এমন একজন মানুষ হিসেবে নিজেকে চিত্রিত করলেন। সাথে আরো ককটি মজার খবর দিলেন যে, তাঁর ৫০/৬০ বছর বয়স এবং বিবাহিত জেনেও ৩/৪ জন নারী তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব পেশ করেছেন। একটু ভাবুন তো! কোন নারীর সাথে একজন পুরুষের কোন পর্যায়ের কথাবার্তা হলে পরে তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব করতে পারে? তাও ৩/৪জন! আমি নিশ্চিত, যদি তাঁর স্ত্রীর নিকট তাঁর পাসওয়ার্ড সংরক্ষিত থাকতো এবং তিনি সচেতনভাবে তাদারকি করতেন তাহলে কোন অবস্থাতেই তার স্বামীর সাথে কোন মহিলাকে এতদূর অগ্রসর হতে দিতেন না।

কিছুক্ষন আগে এক বন্ধুর স্ট্যটাস পড়লাম, তাঁর কোন গ্রুপের তিনজন বন্ধু ফেসবুকের সুযোগ নিয়ে প্রেম পরবর্তী বিয়ে করে নিয়েছেন, যাঁরা বিবাহিত এবং ভালো চরিত্রের অধিকারী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

২. সন্তানদেরকে স্ক্রিন-টাচ মোবাইল দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং প্রয়োজনে ডেক্সটপ কম্পিউটার দেওয়া যাবে, কিন্তু কোন অবস্থাতেই রুমের দরজা বন্ধ রেখে কম্পিউটার চালনার সুযোগ দেওয়া যাবে না এবং রাতে ঘুমাতে যাবার আগে কম্পউটার বন্ধ করতে হবে এবং পাসওয়ার্ড নিজের নিকট রাখতে হবে যাতে রাতে একলা বসে কম্পিউটারে কোন অনাকাঙ্খিত কিছু করতে না পারে।

৩. ছেল মেয়ে কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে ওঠবস করছে, স্কুল-কলেজ ফাঁকি দিচ্ছে কি না ইত্যাদি খোঁজ খবর রাখাও জরুরী। কয়দিন আগের ঘটনা। আমার বাসার পাশে একটি ব্যচেলর রুমে ভাড়া থাকতেন একজন উকিল। তার রুমে ধরা পড়লো একজন কলেজ ছাত্রী। কলেজের ব্যগ ইত্যাদি নিয়ে উকিলের সাথে ক্লাস করছিল। মেয়েটিকে তার সাথে বিয়ে করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করাতে সে হাতে পায়ে ধরে কোন রকমে পালিয়ে বেঁচেছে। বাপ প্রবাসে থাকে, মা মেয়েকে পাঠিয়েছেন কলেজে আর সে ক্লাস করছে একটা বেগানা পুরুষের সাথে একলা ঘরে!

আল্লাহর নিকট তাওবা ইস্তিগফারের সাথে সাথে যথাসম্ভব ছিদ্রগুলো বন্ধ রাখারও ব্যবস্থা করতে হবে। আল্লাহ্ তাওফিক দান করুন।


পঠিত : ৬২০ বার

মন্তব্য: ০