Alapon

এই জীবনের অর্থ কী?

অামরা এখানে কি করছি? অামাদের গন্তব্য কোথাই? 
যেন অামরা একদিন ঘুম থেকে উঠলাম, অার তারপরে অনুষ্টানে অাপনাকে স্বাগতম। কোন প্রশ্ন করবে না! তাল মিলিয়ে চলতে থাক। যত পার উপার্জন কর। চেষ্ঠা কর যেন ফতুর হয়ে না যাও। টিভি অনুসরণ কর। সাজ-সজ্জা থেকে শুরু করে জামা কাপড় পর্যন্ত। এর চেয়ে বেশি কিছু ভেব না
যা দেখানো হয় তা অনুসরণ কর।

বিভ্রান্ত হয়ে পড়লে মদ্যপানে লেগে যাও। 
এখনো মাথায় প্রশ্ন ঘুরছে?
তাহলে মিউজিকের সাউন্ডটা বাড়িয়ে দাও। ডুবে থাক মাদক সেবন, সেক্স, রক & রোল এ।

অামি শুধু জানতে চাই এই চক্রাকারে ঘুরতে থাকা জীবনধারার বাইরে কি কিছুই নেই???
বৃদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া, একটি সূখী পরিবার রেখে যাওয়া। অার রেখে যাওয়া একগাদা সম্পত্তি, যার মালিক হবে অন্য কেউ। কবরে যাওয়ার অাগে অামি অাসলেই জানতে চাই। কারণ, জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে অামি রাজি নই, রাজি নই বাজী ধরতে। এই সামান্য কিছু প্রশ্নের উত্তর খোঁজে ফিরছি।

অামরা এইখানে কি করছি???
অামাদের জীবনের লক্ষ্য কী???
অামরা এইখানে অাসলাম কিভাবে???
কে অামাদেরকে এত নিখুতভাবে তৈরি করল???
এই পৃথিবী কি অাসলেই গুরুত্বপূর্ণ???

এইসব প্রশ্নের উত্তর দিতে চাই না। কারণ প্রয়োজন নেই উত্তর জানার। এই জীবনের তু কোন উদ্দেশ্য নেই। অামাদের অস্তিত্ব তু শুধুই প্রকৃতিক। সেক্ষেত্রে অামাকে একটি প্রশ্ন করতে দিন।

তুমি কি নিজেই নিজের স্রষ্টা??? 
নাকি কেউ তোমাকে তৈরি করেছে???

কারণ, তুমি এমন এক সৃষ্টি, যা ত্রুটিমুক্ত, ক্ষমতা অসমান্তরাল, তুমি সর্বোচ্চ বুদ্ধিমত্তার অধিকারী। অামি শুধু সাধারণ যুক্তিই ব্যাবহার করছি। এমন ক্যামেরা পৃথিবীতে নেই যা মানুষের চোখের ধারেকাছেও অাসতে পারবে! না অাছে এমন কম্পিউটার যা মানুষের মতিষ্কের সমান হতে পারবে! পৃথিবীর সব মানুষ মিলেও একটি মাছিও তৈরি করতে পারবে না! এত এত নিদর্শন তবুও অামরা অস্বীকার করি।

বিজ্ঞান বলতে চাই এই সবকিছুই শূন্য থেকে এসেছে। অথচ একটি সোজা হিসেব শূন্য + শূন্য + শূন্য কখনোই 'এক' হয় না।

তবে কোথা থেকে এ মহাবিশ্বের সব নিয়ম এবং বৈচিত্র অাসল??? সবকিছুরই মূল থাকে, অাবিস্কারক কিংবা স্রষ্টা। এই লিখাটা পড়তে পাচ্ছেন কারণ কেউ একজন কিবোর্ডে টাইপ করে লিখেছে তাই। তাই অামরা বিগ ব্যং বিশ্বাস করতে পারি বা না পারি। বিশ্বাস করতে পারি যিনি তা ঘঠালেন তার উপর।

অাল্লাহ, 
সবকিছুর এবং সব প্রাণের (অাত্মার) সৃষ্ঠিকর্তা! চিরন্জ্ঞীব প্রভু, সবকিছুর একক তত্ত্বাবধায়ক! তিনি সৃষ্ঠির মত নন, কল্পনার উর্ধ্বে! না, তিনি কোন মানুষ নন, তার কোন সহযোগী নেই! তিনি এক ও অবিনশ্বর সত্ত্বা। অামাদের কখনোই একা ছেড়ে যাননি। ঠিক সব প্রস্তুতকারকের মতই, তিনি অামাদেরকে "গাইডবই" দিয়েছেন।

কুর'অান, ইসলাম।
দূঃখিত জলদি উপসংহারে চলে অাসার জন্য। কিন্তু এটাই একমাত্র সম্বভ।

এতে অাছে স্রষ্টার যৌক্তিক বর্ণনা। তিনি এক এবং অদ্বিতীয়। যিনি সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারি। তিনি কাউকে জন্ম দেননি, কেউ তাকে জন্ম দেয়নি।(১)
একটি বই যার শূণ্য ত্রুটি নেই। বৈজ্ঞানিক, ঐতিহাসিক, অার অলৌকিতত্ত্ব যা বলা হয়েছে অাজ থেকে ১৪০০ বৎসর অাগে।

যেমন, মানুষের ভ্রুণের নির্ভুল এবং পরিপূর্ণ বর্ণনা। (২)
পৃথিবীর জন্য পর্বতমালা কীলকস্বরূপ,যাতে পৃথিবী নড়ন থেকে রক্ষা পায়। (৩)
বিচ্ছিন্ন দু'টি প্রবাহিত সমুদ্রের পানি কখনোই এক হবে না। (৪)
গ্রহগুলো নির্দিষ্ট কক্ষপথে চলার তথ্য।অার এই ঘূর্ণায়মান প্রভাবে দিন এবং রাত হওয়া। (৫)
মহাবিশ্ব প্রস্তুতকরণ তত্ত্ব।(৬)
এবং প্রতিটি প্রাণির উৎস পানি থেকে হওয়ার তত্ত্ব।(৭)
অতিতের সকল শিক্ষনীয় ইতিহাস, বিশেষত ফেরাউনের লাশ রক্ষিত হওয়ার তত্ত্ব।(৮)
পৃথিবীর স্তলভাগের সর্বনিম্ন স্তানের তথ্য। যেখানে পারস্য বাহিনী রোমানদের পরাজিত করেছিল।(৯)
পুরুষের বীর্য নির্গমন পথ মেরুদন্ড ও পাঁজরের মধ্যস্তল নির্ধারণ তত্ত্ব।(১০)

এছাড়াও অারো অনেক বৈজ্ঞানিক, ঐতিহাসিক ও অলৌকিকতত্ব। এখন পর্যন্ত একটি শব্দও পরিবর্তন হয় নি। দয়া করে উত্তর দিন কিভাবে এসকল তথ্য জানা ছিল???

অাজ থেকে ১৪০০ বৎসর অাগে!
যা নাযীল হয়েছিল এমন এক ব্যাক্তির উপর যিনি লিখতে বা পড়তে জানতেন না। শুধু উচ্ছ্বারণ করতেন যা ফেরেশতা বাণী নিয়ে অাসত। 
যদি এখনো বিশ্বাস না হয়, তবে কুর'অানের মত বাণী অাবিস্কার করে দেখাও। শত চেষ্ঠা করেও পারবে না!!!
তাই তুমি নিজেদের বিকৃত ধর্ম প্রচার করতে গিয়ে সৃষ্ঠিকর্তা ও তার পাঠানো বার্তা বাহককে নিয়ে হাসি-তামাশা করে বললে "মুহাম্মদ কোন পড়ালেখা জানত না,,,,, পড়ালেখায় অজ্ঞ এমন ব্যাক্তি কিভাবে পূর্ণ ধর্ম প্রতিষ্ঠা করে!" (নাউযুবিল্লাহ)

অার তোমরা তার বইগুলোকে(হাদিস) রূপকথার গল্পবলে নাকচ করে দাও,,,,,,,,,
যাতে অামরা অামাদের জীবন গড়ি লোভ, লালসা, ইচ্ছে ধারা। বলে বেড়াচ্ছি "'জীবন তু একটাই'" যতখুশি ফুর্তি কর। অামরা বাচঁব, মরে যাব, মাটির সাথে মিশে যাব।

তুমি শুধু একবারই বাঁচবে?! ভুল!

গাছপালা মারা যাওয়ার পর বৃষ্টি অাসলে নতুন করে জীবন ফিরে পায়। অাল্লাহর প্রতিশ্রুতি এইযে, অামাদেরকেও ঠিক একইভাবে পুনরিজ্জিবীত করবেন।(১১)
অাঙ্গুলের চাপ থেকে নিয়ে পায়ের তলা পর্যন্ত অনুরূপ অবস্তায়। (১২)

যখন সর্বদ্রষ্ঠা; সর্বশক্তিমান প্রভু অামাদেরকে এত কাছ থেকে দেখছেন, তাহলে অবশ্যই অামাদের পরিক্ষা নেওয়া হচ্ছে। অামাদের সম্পদ, সাস্থ, পরিবার, ক্ষমতা, যাবতীয় সবকিছুর মাধ্যমে!

তাই বিশ্বাস কর, অামরা অবশ্যই পুনরিজ্জীবিত হব। এবং ফিরে যাব সৃস্টিকর্তার সামনে। কঠোর হিসেব নেওয়া হবে অামাদের প্রতিটা কাজের। যখন তিনি অামলনামা দিয়ে বলবেন, পড়! ভাল-মন্দ, ছোট-বড়, অার বাকি যা কৃতকর্ম করেছ। তোমার হিসেব গ্রহণের জন্য তুমিই যথেষ্ট। (১৩)

এখন অামার সাথে রাগ করো না! 
তুমি কি ভেবেছিলে অামার কাছে কখনো ফিরে অাসতে হবে না! (১৪)
তোমাকে পুরো একটি জীবন দিয়েছিলাম অামাকে খোঁজার জন্য। কিন্তু তুমি ব্যাস্ত ছিলে ঐসব নিয়ে, যা ছিল ক্ষনিকের!

পড়! সুসংবাদ তাদের জন্য যারা বিশ্বাস করেছে। অার যদি তুমি বিশ্বাস না কর তাহলে,,,, পড়! 
সেই দিনটি তোমার প্রথমদিন হতে দিও না,,,, যেদিন তুমি সত্যিই জানতে পারবে তোমার জীবনের অর্থ কি ছিল!!!

তাই,,,,,,পড়!

রেফারেন্স: (১)[বল, তিনি এক। তিনি সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারি। তিনি কাউকে জম্ম দেননি, কেউ তাকে জন্ম দেয়নি। এবং না তার সমকক্ষ অাছে কেউ।] (সূরা-ইখলাস: ১-৪)

(২)[ অামি মানুষ সৃষ্টি করেছি মাটির উপাদান হয়তে। তারপর অামি তাকে শুক্রাকারে স্তাপন করি এক নিরাপদ স্তানে। পরে অামি শুক্রানুকে পরিণত করি জমাট রক্তে, পরে জমাট রক্তকে পরিণত করি পিন্ডে, পরে পিন্ডকে পরিণত করি অস্তিতে, পরে অস্তিকে অাবৃত করি গোসত দ্বারা, সবশেষে তাকে অারো এক প্রকারে পরিণত করি; সুনিপুণ সৃষ্টিকর্তা অাল্লাহ কত বিরাট!](সূরা মু'মিনূন: ১২-১৪)
{গত শতাব্দিতে যে বিজ্ঞানী ভ্রুনের অাকৃতির অাধুনিক ব্যাবচ্ছেদ অাবিস্কার করেন তিনি বলেছেন, "মানুষের ভ্রুনের যে বর্ণনা কুর'অানে অাছে, সেটি সপ্তম শতাব্দির বৈজ্ঞানিক জ্ঞান থেকে অাসা অসম্ভব।"}

(৩) [ অামি জমীনকে শয্যা, পাহাড়সমূহকে পেরেকরূপ করি নাই?] (সূরা নাবা : ৬-৭)

(৪)[ তিনিই দুই সমুদ্র প্রবাহিত করিয়াছেন, একটির পানি সুস্বাধু-মিষ্ঠি, অপরটির পানি বিস্বাদ- লবনাক্ত, রাখিয়াছেন উভয়ের মধ্যে অবরোধ এবং অবিচ্ছেদ্য অন্তরাল।] (সূরা ফুরক্বা-ন : ৫৩)

(৫) [এবং তিনিই রাত- দিন, চন্দ্র সূর্যকে পয়দা করিয়াছেন, প্রত্যেকেই অাপন কক্ষপথে ভাসিয়া বেড়ায়।] (সূরা অাম্বিয়া:৩৩)
[ রাত্রি তাদের জন্য নিদর্শন, তা হয়তে অামি দিবালোক দূর করি, ফলে তারা অব্ধকারাচ্ছন্নে পড়ে। এবং সূর্য তার অবস্তিতী স্তলে চলিতেছে, ইহা পরাক্রান্ত সর্বজ্ঞ কতৃক নির্ধারিত। এবং চন্দ্রের জন্য বিভিন্ন অবস্তান নির্ধারিত করিয়াছি, এমনকি সে জীর্ণ খেজুর শাখার ন্যায় পরিণত হয়। চন্দ্রকে ধরিতে পারে না সূর্য রাত্রিও দিবসের অগ্রগামী নহে।] (সূরা ইয়াসিন : ৩৭-৪০)

(৬)[অাকাশ ও পৃথিবী ও এতদুভয়ের অন্তর্বর্তী সকল কিছু সৃষ্টি করিয়াছি মাত্র ছয় দিবসে, অথচ অামায় স্পর্শ করে নাই ক্লান্তি।] ( সূরা অাল-ক্বাফ : ৩৮)

(৭)[ অাল্লাহ সৃজন করিয়াছেন সকল জীব পানি হয়তে, ওদিগের একশ্রেণী চলে বুকে ভর করিয়ে, ওদের অারেক শ্রেণী চলে দুই পায়ে, কতক চলে চার পায়ে অাল্লাহ যা ইচ্ছা সৃজন করেন; অাল্লাহ সকল জিনিসের উপর ক্ষমতাবান।] (সূরা অান-নূর : ৪৫)

(৮) [ অাজ তোমার ধর, তোমার উত্তরসূরীদের নিদর্শন হিসাবে চর জমিতে অামি সংরক্ষণ করিব, মানুষের অনেকেই অামার নিদর্শন সম্পর্কে অনবহিত।] ( সূরা ইউনুস : ৯২)

(৯)[ রোমানরা পরাজিত হইয়াছে, নিকটবর্তী দেশে, কিন্তু ওরা পরাজয়ের পরে সত্বর জয়ী হবে]( সূরা রূম :২-৩)

(১০)[ সবেগ নিক্ষিপ্ত বীর্য হইতে, তাকে সৃজন করিয়াছেন, যা নরের পিঠ ও নারীর বক্ষ হয়তে নির্গত।]( সূরা ত্বা-রিক্ব :৬-৭)

(১১)[ অাল্লাহর কুফরি কিরূপে কর? অথচ ছিলে তোমরা প্রাণহীন, তিনি তোমাদের প্রাণ দিয়েছেন, পুনঃ মৃত্যু ঘটায়বেন অাবার জীবিত করিবেন; সবশেষে তারদিকেই প্রত্যাবর্তিত হইবে।] ( সূরা বাক্বারাহ : ২৮)

(১২)[ মানুষ কি ভাবে, তাদের বিচ্ছিন্ন হাড়গুলি একত্রিত করিতে পারিব না? অামি করিতে সক্ষম উহার অঙ্গুলি পুনর্বিন্যস্ত।] ( সূরা ক্বিয়া- মাহ : ৩-৪)

(১৩)[ বলিব, পাঠ কর তোমার কিতাব, নিজের হিসাবের জন্য অাজ তুমিই যথেষ্ঠ।]( সূরা বনি- ইস্রাঈল : ১৪)

(১৪)[ তোমরা ভাবিয়াছিলে, তোমাদের সৃষ্ঠি করিয়াছি অকারণে, তোমরা অামার দিকে প্রত্যাবর্তিত হয়বে না।] ( সূরা মু'মিনূন : ১১৫)

[লেখাটি 'The talk Islam' YouTube channel এর 'The meaning of life' শিরোনামের অালোচিত ভিডিওটি অনুসারে লিখা হল। এবং, প্রয়োজনীয় কিছু রেফারেন্স যোগ করা হয়েছে। যতটুকু জানি ভিডিওটি দেখে অনেক সংখ্যক অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করতে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। ভিডিওটির নির্মাতাদের যেন অাল্লাহ উত্তম প্রতিদান দেন।]

পঠিত : ১২২২ বার

মন্তব্য: ০