Alapon

কেমন আছে ঘূর্ণিঝড় সিডরের কোলে জন্ম নেয়া সিডর সরকার?

১১ বছর পেরিয়ে গেল প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড় সিডরের। কেউ ভোলেনি সিডরের কথা। বিশেষকরে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের অধিবাসীদের হৃদয় আজও সেই কালরাত্রির স্মৃতিতে শিহরিত হয়ে ওঠে। ঘূর্ণিঝড় সিডরের সঙ্গে শিশু সিডরকেও মনে রেখেছেন অনেকে। আজ তার শুভ জন্মদিন।

বলে রাখা ভালো ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর রাতে দেশের উপকূলীয় ১১টি জেলায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড়টি । সরকারি মতে সিডর কেড়ে নেয় ৩৩০০ হাজার লোক। কিন্তু রেডক্রস এর মতে মৃত্যের সংখ্যা ২০ হাজারের উপরে। ব্ন্ধ হয়ে যায় সকল যোগাযোগের ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, টেলিফোন, মোবাইল, ইন্টারনেট সহ সকল ধরনের ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪৫ কোটি ডলার বা ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

যাকে নিয়ে আজ কথা বলতেছি তার নাম সিডর সরকার। নাম শুনেই কিছুটা আঁচ করা যাচ্ছে এই নামের এর পেছনের রহস্য। ঘূর্ণিঝড়ের দিনে অনেকের সঙ্গে মোংলা উপজেলার চিলা গ্রামের সেন্ট মেরিস গির্জাসংলগ্ন আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছিলেন জর্জি সরকার ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সাথী সরকার। সেদিন রাতেই আশ্রয়কেন্দ্রে সাথী জন্ম দেন ফুটফুটে এক শিশুকে। শিশুটির নাম রাখা হয় ‘সিডর’।

ঘুর্ণিঝড়ের সিডরের সমানই বয়স সিডরের। সিডর সরকার আজ ১১ পেরিয়ে ১২ বছরে পা দিল। কেমন আছে সিডর? খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তেমন একটা ভালো কাটছেনা সিডরের শৈশব।

উপকূলীয় এলাকার অন্য পরিবারগুলোর মতো সিডরের পরিবারও অভাব–অনটনে দিন কাটাচ্ছে। মা-বাবার মমতা থেকে অনেকটা বঞ্চিত সিডর। অর্থাভাবে সিডরের জন্য মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছেন তারা জানিয়েছেন সিডরের দাদি রিভা সরকার। অর্থাভাবে সিডরকে ভর্তি হতে হয়েছে খুলনার দাকোপ উপজেলার হরিণটানা গ্রামে হোম অব লাভ নামের একটি মিশনারি বোর্ডিং স্কুলে। সেখানে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে সে।

জর্জি সরকার সাগরে মাছ ধরে পরিবারের দায়িত্ব পূরণ করতে পারছেন না বলে সিডরের মা ঢাকায় গৃহপরিচারিকার কাজ করছেন। ঘূর্ণিঝড় জয়ী সিডরের অবশ্য সেই আক্ষেপ নেই। সে জানায়, ‘পড়াশোনা করে অনেক বড় হব।’ মিশনারি স্কুলেই ভালো আছে জানিয়ে সিডর উত্তর দেয়, ‘বড়দিনে বাড়ি যাব।’

পঠিত : ৮২১ বার

মন্তব্য: ০