Alapon

বাংলাদেশ, বাঘ-রাখাল আর গোর্খা আর্মির গল্প


৪৬ তম স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা । কিন্তু এবারের দিবসটির আগ মুহূর্তে যা ঘটে গেল এই কয়েকদিনে তাতে প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পেলনা প্রিয় মাতৃভূমি ।


যেমনঃ
১. বাংলাদেশে ঢুকে বিএসএফের হামলা: ১২ গ্রামবাসী আহত [ লিংক ]
২. পরপর বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলা, আত্মঘাতী হামলা । বাদ যায়নি দেশের প্রধান বিমানবন্দর, র‍্যাব অফিস, তল্লাসি চোকি । সর্বশেষ সিলেটের ঘটনা । এগুলোর কোনটি কোনটি সাজানো বলে অভিযোগ উঠলেও কোনটি সত্য বলে মনে হয়েছে । র‍্যাব পুলিশ আর্মি বিগত সময়গুলোতে এত নাটকের জন্ম দিয়েছে যে সত্য কোন হামলা হলে এখন বুঝা দায় । কথিত বন্দুকযুদ্ধের নাটক করতে করতে একদিন ঢাকায় হলী আরটিজানে জঙ্গি হামলায় প্রান হারান পুলিশের ওসি সালাউদ্দিন[ লিংক ] । কয়েকদিন নাটক করতে করতে গতকাল সিলেটের জঙ্গি হামলার ঘটনায় প্রান হারালেন কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা[ লিংক] সহ ৬ জন [ লিংক ] । র‍্যাবের পোয়েন্দা প্রধানও মারাত্তক আহত[ লিংক] । প্রতিটি হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস বলে খবর সাইট ইন্টেলিজেন্স । সবমিলে আর্মি, র‍্যাব, পুলিশ, সোয়াত সকলের ব্যর্থতা দেখলাম আমরা । এদের দিয়ে কিছু হবে বলে মনে হয়না । এসবের পিছনে বিএনপির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ ও. কাদেরের[ লিংক] । দেশের মানুশ নাটক দেখে দেখে ক্লান্ত। এর মাঝে কোনটা নাটক আর কোনটা আসল সেটা বুঝা মুশকিল । প্লীজ এই রক্তের এই হলি খেলা বন্ধ করুন। ১৯৭১ এ যেমন দাদা বাবুদের সাহায্য নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, সে সাহায্যের বিনিময়ে দেশ লুটেপুটে খাওয়ার সার্টিফিকেট দিয়েছিলাম আমরা, আসুন বাংলাদেশের জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় ব্যর্থ আর্মি, র‍্যাব, পুলিশ, সোয়াত, বিজিবির সহায়তায় আবার ডাকি দাদাবাবুদের আর্মিদের । মোদ্দাকথা দাদাবাবুদের আমাদের দরকার । সামরিক চুক্তিটা আমাদের দরকার । আমরা একা একা আর পারছিনা । চুক্তির জন্য যতজন মানুষ মরুক লাগে মরুক, হোক সে আম জনতা বা আর্মি, র‍্যাব, পুলিশ, সোয়াত, বিজিবি , বিমিময়ে দাদাবাবুদের আমাদের দরকার । আর চুক্তি ফুক্তি না করে ভারতের ৩০ তম রাজ্যের স্বীকৃতি দিয়ে দেন, আপনার মুখ্যমন্ত্রীর পদ পাকা । বিনিময়ে অন্তত শুনতে হবেনা যে বিএসএফ বাংলাদেশে ঢুঁকে হামলা করেছে, তখন বাংলাদেশের হয়ে বাংলাদেশকে বহিশত্রুর হাত থেকে রক্ষা করবে ।


এসব চলতে থাকবে যতদিন আমরা সাধারন মানুষ সব মাথা পেতে মেনে নিতে থাকব । যতদিন দেশের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাবেদারি করবে জালিম সরকারের । যতদিন দেশের দেশের আদালত নামে মাত্র স্বাধীন হয়ে পরাধীন হয়ে থাকবে জালিম সরকারের কাছে। যতদিন দেশে মানবাধিকার থাকবেনা । থাকবেনা বাক স্বাধীনতা । আর যতদিন যে কোন সরকার ক্ষমতার লোভে অন্য দেশের কাছে নিজের দেশের অস্তিত্ত বিকিয়ে দিতে থাকবে ।


নেপালের নাম শুনেছেন ? ছোট একটি দেশ । এই দেশটিকে অন্য কোন দেশ দখল করে শাসন করতে পারেনি কখনোই। তাদের আর্মির নাম গোর্খা আর্মি। সংখ্যা, শক্তিতে ছোট হলেও তাদের রয়েছে অসীম মনোবল আর সাহস । নেপালি মানুষের রয়েছে অন্যায়ের প্রতি রুখে দারাবার হিম্মৎ । একারনে ভারত পাকিস্তান তো দুরের কথা ইংরেজ বাহিনিও বার্থ হয় নেপাল দখল করতে। বর্তমানে নেপালও ভারতের প্রতি নতজানু কিন্তু মানুষের হিম্মৎ তো আর ফুরিয়ে যায়নি । সম্প্রতি ভারতীয় বিএসএফ এর গুলিতে একজন নেপালি মারা যাওয়ার ঘটনায় ফুসে উঠে নেপালের মানুষ। ধর্মঘটের ডাক দেয় মানুষ । সরকার বাধ্য হয়ে ভারতকে চাপ দেয় ক্ষমা চাইতে । ভারত বাধ্য ক্ষমা চায় নেপালের কাছে । মাত্র একজন মানুষের জীবন যাওয়াতে নেপালের মত ছোট একটি দেশ যা করে দেখালো আমাদের ১৭ কোটি মানুষের দেশ তা কি করতে পেরেছে কখনো? উপরের ঘটনার সমসাময়িক ঘটনা, আমাদের বিজিবি আর বিএসএফ মিলে একসাথে হোলি খেলেছে। তখন হয়তোবা সীমান্তের অপর প্রান্তে গুলি খেয়ে মরেছে কোন বাংলাদেশী । বাহ কি পিরিতের নমুনা । সীমান্ত হত্যা আজ ডাল ভাত । সিমান্তে বাংলাদেশীর লাশ আজ মুড়ির মত সস্তা । বিজিবির কাজ হল মানুষ মরার পর পতাকা বৈঠক করে লাশ নেয়া আর লাশের সাথে দাঁত কেলিয়ে সেলফি তুলা। এর বিরুদ্ধে কথা বলা যাবেনা । মাহমুদুর রহমান সাহেবকে সেমিনার করতে দেয়া হয়নি সীমান্ত হত্যা নিয়ে কথা বলতে চেয়েছিলেন তিনি ।


আর কতকাল চোখ বুজে সব সহ্য করবেন । ১৯৫২ আর ১৯৭১ এ যেভাবে ভেতো বাঙ্গালী জেগে উঠেছিল, আমাদের আবারো জেগে উঠতে হবে । ১৯৭১ এ যেভাবে শেখ মুজিব জাগিয়ে তুলেছিলেন, সেরকম নেতা আমার আপনার মাঝেই লুকিয়ে আছে , নিরবে । শুধু জাগিয়ে দেয়া দরকার সেই দেশপ্রেমটাকে । আমাদের সবার হাত ধরে এগিয়ে চলুক বাংলাদেশ । মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জেগে উঠি সবাই । ভোর আসবেই ।


[ পরবর্তী পর্বে আসছি গোর্খা আর্মির আরও কিছু জানা অজানা কাহিনি নিয়ে ]


পঠিত : ৪০৪৫৯১ বার

মন্তব্য: ০