Alapon

আওয়ামীলীগের “উন্নয়নের নামে ভয়াবহ দুঃশাসন(২০০৯-১৮)”

আওয়ামীলীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকেই একেরপর এক প্রশাসন,মিডিয়া ও বিচার বিভাগকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য কাজ করেছে।  এই কাজ বাস্তবায়নে দিনশেষে তারা সফলতা অর্জন করেছে। যেটার প্রমাণ ২০১৪ সালের পাঁতানো নির্বাচন ও বর্তমান অবস্থা(২০১৮)।

এই কাজ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে অনেকের চাকুরী খেয়েছে, গুম করেছে,দেশ থেকে নির্বাসিত হয়েছে, এভাবে অনেক মায়ের বুক খালি করেছে। পাশাপাশি মিডিয়ার সুবাদে কিছু চমকপ্রদ কাজ চালিয়ে গেছে।

সরকারের নানানমুখী ডিগ্রি ও পদক অর্জন, পদ্মা সেতুর হাওয়া, যুদ্ধপরাধীদের বিচার, ফ্লাইওভার নির্মাণ, বিদুৎ খাতে উন্নয়ণ,রোহিঙ্গাদের আশ্রয়,বঙ্গবন্ধুসেটেলাইট,জঙ্গি দমন, ইত্যাদির মাধ্যমে  সংবাদমাধ্যমকে ব্যস্ত রেখেছে। যদিও পদ্মা সেতুর কাজ এখনো চলমান,রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান হয়নি।এইতো গেলো সরকারের ব্যাপক উন্নয়নের চিত্র।

দুঃখের বিষয় হলো মিডিয়া নিয়ন্ত্রণের কারণে সরকারের অপকর্ম মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের কাছে দৃশ্যমান হয়নি, যা কিছু হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুবাদে।

সরকারের গত দশ বছরের অপকর্মের কিছু চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করছিঃ

১। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারি অনেক ব্যাংক থেকে অর্থলুঠ করেছে।

২। ইসলামী ব্যাংক ধ্বংসের চেষ্টা অব্যাহত আছে।  

৩। বিডিআর বিদ্রোহের মাধ্যমে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা হত্যা করেছে।

৪।শেয়ার বাজার,হলমার্ক কেলেঙ্কারি ও ডেসটিনি ধবংসের মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।

৫।  শিক্ষা ব্যবস্হা ধবংস করেছে।

৬। প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নিয়োগ বানিজ্য চালিয়েছে।  

৭। পুলিশ প্রশাসনে দলীয়করণ করেছে।

৮। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করেছে।

৯।  বিরোধীদল/মতের লোকদের একেরপর এক হামলা- মামলা ও গুম করেছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে।

১০।অনেক সাংবাদিককর্মী গুম, খুন ও হামলার স্বীকার হয়েছে।

১১। আমারদেশ পত্রিকা বন্ধ ও দিগন্ত,ইসলামীক ও একুশে টিভি বন্ধ করে দিয়েছে।

১২।রামপাল বিদুৎকেন্দ্রের নামে সুন্দরবন ধবংসের চেষ্টা চলছে।

১৩। জঙ্গি দমনের নামে দেশকে অস্হীতিশীল করার চেষ্টা করেছে। এর আড়ালে অনেক মায়ের বুক খালি করেছে।

১৪। পদ্মা সেতুর নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

১৫।যুদ্ধপরাধীদের বিচারের নামে শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে একদল দেশ প্রেমিক- বুদ্ধিজীবিকে হত্যা করেছে, এবং অনেককে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কারাগারে আটকে রেখেছে।

১৬। ৫ই মে,হেফাজতের উপর গনহত্যা চালিয়ে লাশ গুম করে ফেলেছে।

১৭। কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনকারীদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে।

১৮। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি, গ্যাস ও বিদুৎদের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে।

১৯।যোগাযোগ ব্যবস্হার বিপর্যয় সমাধান করতে পারেনি।         

২০। সর্বস্তরে, দলীয় নেতা কর্মীদের দ্বারা, নারীদের শ্লীলতাহানী,মাদক,ইয়াবা ব্যবসা, ধর্ষণ,চাঁদাবাজি বেড়ে গেছে। ইত্যাদি।

২১। বিভিন্ন জায়গায় মাহফিল বন্ধ করে দিয়ে “আলেমদের কন্ঠ” রোধ করেছে।

        উপরের সকল অপকর্ম আড়াল করে শুধুমাত্র মিডিয়ার দ্বারা তথাকথিত দুঃশাসনের উন্নয়নের জয়গান গেয়ে গেছে। কোন উন্নয়ন হয়নি এমন আমি বলছিনা, কিন্তু এই উন্নয়নের আড়ালে যে পরিমাণ অন্যায় মানুষের সাথে হয়েছে, সেটার পরিমাণ এত বেশি যে, দুঃশাসনের জোয়ারে উন্নয়ন ভেসে গেছে।মানুষ তার স্বাধীন মত প্রকাশ করতে পারছেনা,করলেও আড়ালে কিংবা ভিন্ন কোন মাধ্যমে।

এটাই কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা?? সরকার একমাত্র নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি দাবি করে। অথচ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে,মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। মূলত সরকার,মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে আসছে। সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরকার ব্যাপক উন্নয়নের জয়গান গেয়ে যাচ্ছে। এতে সরকারের প্রতি মানুষের বিশ্বাস এতই নিচে নেমেছে যে, সরকারকে  সাংস্কৃতিক কর্মী,ক্রিকেটার ও দলীয় মিডিয়া ভাড়া করে টাকা দিয়ে প্রচার চালাতে হচ্ছে। এটাই সরকারের উন্নয়নের অর্জন।

পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ দলীয়করণের ফলে মানুষ নির্ভয়ে চলতে ও কথা বলতে পারছেনা। মিডিয়ার লেজুড়বৃত্তি জনগণের কথা ফুটে উঠছে না।দলীয় নেতা কর্মীদের যন্ত্রনায় মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে, প্রশাসনের যন্ত্রনায় এমন হচ্ছে যে, ঘরে বালিশ আছে কিন্তু মানুষ নেই।  

এখনই “বাংলাদেশ নামক দেশটা” সংস্কার সময়ের দাবি।

তাই আসুন,

"৩০ তারিখ সারাদিন

বিবেক বুদ্ধি খাঁটিয়ে ভোট দিই"   


                                                      

                                                                                                                    

পঠিত : ১৯৬৪ বার

মন্তব্য: ০