Alapon

পর্দার আড়ালে জায়োনিজমের দুই খেলাঃ

বর্তমান সময়ে প্রত্যেক দেশে জায়োনিজম ও তাদের সহযোগী সংগঠন কর্তৃক দুটি বড় খেলা বিদ্যমান। বিশেষ করে মুসলিম দেশসমূহে জিনিসটা প্রকট।।
এ দুটি খেলা হচ্ছে পর্দার আড়ালের দুটি খেলা। জাতি চোখের সামনে যা দেখে সে অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেটার প্রতিই নিবদ্ধ থাকে। কিন্তু পর্দার আড়ালে যে দু ধরণের খেলা চলছে সেগুলোর-
প্রথমটি হচ্ছে-- বড় খেলা।।
দ্বিতীয়টি হচ্ছে-- ছোট খেলা।।
বড় খেলা কী????
--আজ সকল জায়গায় জায়োনিজম ঘাটি গেড়ে বসে আছে। ওদের বিশ্বাস হচ্ছে- "ওরাই পৃথিবীর একমাত্র যোগ্য বাসিন্দা। ওরা প্রথমে বৃহৎ ইসরাঈল প্রতিষ্ঠা করবে। এরপর পুরো বিশ্বের শাসনভার নিজেদের হাতে নিবে এবং বাকি সবাই ওদের দাস হবে।"
তুরস্কের উপর ওদের চালিত ক্রীড়া হচ্ছে সেই বড় খেলার একটি অংশ বিশেষ। ওরা একে হাইয়িম নাউন প্ল্যান বলে থাকে। এটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। ওদের এই বড় খেলার পরিকল্পনা হচ্ছে, ধীরে ধীরে-
- আমাদের তুরস্ককে ক্ষুধার্তে পরিণত করা,
অর্থাৎ দেশের উৎপাদন ধীরে ধীরে কমিয়ে দেয়া
- তুরস্কে কাজের অভাব তৈরী করা, বেকারত্বকে চরমে নিয়ে যাওয়া,
- তুরস্ক দেশটিকে ঋণে জর্জরিত করে ফেলা।
- দ্বীন ইসলাম থেকে আমাদের দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া।
আর তা বাস্তবায়নের জন্য ওরা IMF এবং অন্যান্য বেসরকারী(ইহুদী) অর্থনৈতিক সংস্থাকে ব্যবহার করছে।
তুরস্কের বর্তমান সরকারের মাধ্যমে ওরা এই পরিকল্পনা খুব দ্রুতই বাস্তবায়ন করছে। কিন্তু তুরস্ক সরকার শুধুমাত্র ঋণের টাকা ওদের কাছ থেকে এনে জনগণের কাছে দিয়েছে। সরকার ভাবছে আমাদের কাছে অনেক টাকা। কিন্তু ক্ষমতার ফ্যান্টাসীতে আক্রান্ত এই অবুঝরা এখনো বুঝেনা যে- এর পেছনের মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে ইহুদীবাদী জায়োনিস্টরা।
এভাবে তুরস্ক সরকারকে ব্যবহার করে বিগত কয়েক বছরে(২০০২ থেকে ২০০৯) ওরা তুরস্ককে চতুর্দিকে আক্রমন করে অক্ষম করে তুলছে।
আজ ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বেকারত্বের হার দিনকে দিন বেড়েই চলছে।
উৎপাদন কমে গিয়ে এখন সম্পূর্ণ বৈদেশিক আমদানির উপর নির্ভর হয়ে পড়ছে তুরস্ক।
মানুষকে দ্বীন থেকে দূরে সরিয়ে নেয়ার জন্য সেক্যুলারিজমকে ইসলামের মোড়কে জনগণের সামনে হাজির করে ইসলামী জযবা ও দ্বীন ধ্বংসের সকল ধরনের উপকরণ তৈরী করেই পরিকল্পনা মাফিক ধীরে ধীরে সামনে এগুচ্ছে জায়োনিস্টরা।
এটা ওদের বৃহৎ সেই খেলা।। এই খেলার পরিধি অনেক বড় এবং মেকানিজম অনেক দীর্ঘ ও বিস্তারিত। এই খেলার আরেকটি বড় দিক হচ্ছে- ওরা সরকারকে দিয়ে মুসলিমদের চোখে ইসলামের অতি ক্ষুদ্র ও বাহ্যিক বিষয়সমূহকে বড় করে তোলে। অপরদিকে সেক্যুলারিজমের মাধ্যমে জিহাদী জযবাকে ধ্বংস করে দেয়।
আর এসকল কিছুই বৃহৎ ইসরাঈল প্রকল্পের একটি অংশ।
কেননা মুসলিমরা যদি জযবাহীন হয়ে পড়ে তাহলে এই জাতি থেকে কখনো ঈমানদীপ্ত বীর বেরিয়ে আসবে না। মুসলিমকে মুসলিম হিসেবে পরিপূর্ণ করে তার জিহাদী জযবা।
আর একে ধ্বংস করে দেয়াই ওদের উদ্দেশ্যে। কারণ তা করতে না পারলে ওরা কখনোই সুলেমান হাইকেল বানাতে সক্ষম হবে না।
(আজ মুসলিম শাসকরা শুধু অনলবর্ষী বক্তব্যই দিতে পারে অথচ অপরদিকে জায়োনিস্টরা সুলেমান হাইকেল বানানোর দ্বারপ্রান্তে। জেরুজালেমকে ওদের রাজধানী ঘোষণা দিয়ে দিয়েছে।।)
-------------------------------------------------
এখন ছোট খেলাটি কী???
ছোট খেলাটি হচ্ছে মোরগ_লড়াই
কেন বললাম এ কথাটি??
মনে করেন, মাহমুদ নামের সাধারণ একজন লোক পত্রিকা ও টিভির মাধ্যমেই সকল খবরা খবর নিয়ে থাকে। সে টেলিভিশনে মাধ্যমে রাজনীতির মাঠে শুধুমাত্র দুইটি শব্দই শুনতে পায়।
একটি A দল, অপরটি C দল।
A দল হচ্ছে ডানপন্থী, C দল হচ্ছে বামপন্থী।
দুটির নিয়ন্ত্রকই হচ্ছে জায়োনিস্ট শক্তি। প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে।
এখন সে যদি ডানপন্থী হয়ে থাকে তাহলে A দলকে কে ভোট দিবে।
আর বামপন্থী হয়ে থাকলে C দলকে ভোট দিবে।
এটিই হচ্ছে গনতন্ত্র তথা ডেমোক্রেসি। এটিই হচ্ছে তার স্বাধীনতা। এখানে মাহমুদ তো ভাবছে সে নিজেই পছন্দ করছে দুটির যে কোন একটিকে।। তাই সে নিজের গনতান্ত্রিক অধিকার পূর্ণ হয়েছে ভেবে আত্মতৃপ্তি অনুভব করে।
সাধারণ মোরগ লড়াইয়ের সাথে উপরে উল্লেখিত মোরগ লড়াইয়ের পার্থক্য এই যে-
এখানে একটি লাল মোরগ ও অপরটি সাদা মোরগ হলেও এদের মালিক কিন্তু একই অর্থাৎ জায়োনিজম।
------------------------------
(উপরের বক্তব্যটি প্রফেসর এরবাকান ২০০৮ সালে একটি কনফারেন্সে দিয়েছিলেন।)
উনি বক্তব্যটি তুরস্কের আলোকে মানুষকে বুঝিয়েছেন। কিন্তু এটা ইউনিভার্সাল। প্রত্যেক দেশের জন্যই খাটে উনার এই বক্তব্যটি।।
নিজের দেশের আলোকেই একটু গভীরভাবে চিন্তা করেন।
উত্তর পেয়ে যাবেন।
অন্য উদাহরণ দেই...
- আপনি যদি আমেরিকার দিকে তাকান। তাহলে দেখবেন দুটি দল থেকে একটিকে আপনার পছন্দ করতেই হবে--
#ডেমোক্রেট_অথবা_রিপাবলিকান
- ইন্ডিয়ার দিকে তাকান। সেই দেশের শর্তানুসারে সেখানে দুটি দলের মধ্যে একটিকে পছন্দ করতে বাধ্য গণতান্ত্রিক নিয়মে--
#বিজেপি_অথবা_কংগ্রেস

পঠিত : ২৪৩৩ বার

মন্তব্য: ০