Alapon

হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতার নেশায় নষ্ট হচ্ছে অনেক প্রতিভা...

আমাদের সাথে একজন ছাত্রভাই ছিলেন, বেফাকে হিফজে ১ম স্থান অধিকার করেন। মীযান জামাত একসাথে পড়ি আমরা। তেলাওয়াত ছিল অনেক চমৎকার। পড়ালেখায়ও খারাপ ছিল না। কিতাব বিভাগে পড়াকালীনও তার নেশা ছিল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সৌদি/কাতার যাওয়া।
কাতার যাওয়া হয়নি। কিতাব বিভাগেও পড়া হয়নি। দাওরা শেষ করতে পারেনি। শুনেছিলাম উত্তরায় কোনো এক মসজিদের ছানী ইমাম।

হিফজ করতে পারা অনেক বড় নেয়ামত। কিন্তু শুধু হিফজ করে কিতাব বিভাগে পড়তে না পারলে দীন ও শরীয়ত সম্পর্কে কোনো জ্ঞানই হয় না। যে কারণে শুধু হাফেজরা উল্টাপাল্টা করে বেড়ায়।
হিফজ শেষ করার পর প্রয়োজন অনুপাতে ৬ মাস/১ বছর বা আরেকটু বেশি সময় শুনাতে পারে। এরমধ্যে কোনো প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করলে করতে পারে। কিন্তু হিফজ শেষ হওয়ার পর কেবল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করানোর জন্য ৩/৪/৫ বছর বা তারও বেশি সময় শোনানোর কোনো মানে হয় না। তার জীবন নষ্ট ছাড়া কিচ্ছু না।
ছাত্র ও গার্জিয়ানরা তখন বুঝে না; বরং স্বর্ণপদক, রৌপ্য পাওয়া অথবা কুয়েত/কাতার/সোদি গমন এবং সম্মান অর্জনের চেষ্টায় বুঁদ হয়ে থাকেন৷ পরবর্তী সময়ে যখন বুঝতে পারে তখন আর কিছু করার থাকে না। বয়স হওয়ার কারণে আর কিতাব বিভাগে পড়া হয় না অথবা নামকাওয়াস্তে শেষ করে।

হিফজ প্রতিযোগিতার নামে প্রতিভাদের ধ্বংস করা হচ্ছে। কেবল প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে অনেক হিফজখানা মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। হিফজ শেষ করার পর ইয়াদ ভালো হওয়ার আগপর্যন্ত ১/২ বছরের বেশি শোনানো হতে বিরত থাকা আবশ্যক। কোন হিফজখানা কয়টা পুরস্কার বাগিয়ে আনল, এটাকেই শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি নির্ধারণ করা হয় ইদানীং। আগে এমন ছিল না। বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ ও ভালো হিফজখানার মধ্যে প্রথম সারিতে থাকবে আরজাবাদ মাদরাসার হিফজ বিভাগ। তারা তো প্রতিযোগিতার পেছনে ছুটেনি।

সচেতন হোন, সচেতনতা গড়ে তুলুন। শুধু প্রতিযোগিতা কেন্দ্রিক হিফজখানাগুলোর সাথে আলোচনা করে গতিপথ পরিবর্তন করা উচিত।

লিখেছেন: কাসেমি


পঠিত : ৭৮৫ বার

মন্তব্য: ০