Alapon

কাণ্ডজ্ঞানহীণ সরকারের দেশে কাণ্ডজ্ঞানহীন ঈদ!

এবারের রমজানে ইহতেকাফে বসেছিলাম। জীবনের প্রথম ইহতেকাফ তাই স্বাভাবিক
কারণে বেশ রোমাঞ্চিত ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ হতাশ করেননি। ইহতেকাফে
পার করা এ দশটা দিন ছিল আমার জীবনের অন্যতম সেরা সময়।

যা হোক
নিয়্যাত ছিল, চাঁদ ওঠার পরই মসজিদ থেকে বের হবো। আল্লাহর রসূলের সুন্নাহও
তাই। কিন্তু ২৯ রমজানের দিন দেখলাম, ইহতেকাফ পালনকারী প্রায় সকলেই ব্যাগ
গুছাচ্ছে। তাদের ভাষ্যমতে যেহেতু আজ সোদি আরবে ঈদ হচ্ছে তার মানে আগামীকাল
আমাদের এখানে ঈদ হবেই। একজনকে প্রশ্ন করলাম, যদি চাঁদ না ওঠে তাহলে!

তখন
একজন বলল, ১১০ % নিশ্চিত থাকো আগামীকাল ঈদ। সেদিন সকাল থেকে বৃষ্টি
হচ্ছিল। আর আকাশ মেঘলা থাকার কারণে চাঁদ দেখা না গেলে ৩০ টি রোজা পালন করাই
শরীয়তের নিয়ম। আমার এ কথা শুনে অপর একজন হাসতে হাসতে বলল, এ দেশের মানুষ
শরীয়তের চেয়ে সৌদি আরবকে বেশি মান্য করে!

ইফতার এবং মাগরিবের
নামাজের সবাই বাসায় যাওয়ার জন্য একে অপরের কাছে বিদায় নিতে লাগল। এরই মাঝে
একজন জানালো, চাঁদ ওঠেছে। প্রশ্ন করলাম, কোথায় দেখলেন?
তিনি বললেন, ফেসবুক ওয়ালে। আগে মানুষ চাঁদ খুঁজত আকাশে এখন খোঁজে ফেসবুক ওয়ালে। তার কথা শুনে আমরা সকলে মসজিদ থেকে বেরিয়ে এলাম।

কিন্তু
বাসায় ফিরে টিভি খুলে দেখি তখনো চাঁদ দেখা যায়নি। একসময় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী
সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দিলেন, দেশের কোথাও চাঁদ দেখা যায়নি! আমি আশাহত
হলাম। আমরা ইহতেকাফে ৮২ জন ছিলাম, হয়ত সেসময় প্রত্যেকেই আশাহত হয়েছিলেন;
ইহতেকাফের সুন্নাত আদায় করা হলো না! মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল।

এর
ঘন্টাখানেক বাদে ধর্মপ্রতিমন্ত্রী পুনরায় সংবাদ সম্মেলন করলেন এবং এইবার
ঈদের চাঁদ দেখার ঘোষণা দিলেন। ততক্ষণে রাত ১১ টা বেজে গেছে। সারাদেশের
মানুষ অন্যান্য দিনের মতই তারাবির নামাজ আদায় করেছে। আবার কেউ কেউ তারাবির
নামাজ পড়ে পরিবার নিয়ে ঘুমিয়েও পড়েছিলেন। তেমনি এক ভাইয়ের সাথে কথা হল, যে
কিনা সেহরি মসজিদে ফজরের নামাজ পড়তে এসে জানতে পারে আজ ঈদ!

আমি সবকিছুতেই সরকারকে দোষারোপ করতে চাই না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্বহীনতা এবং কান্ডজ্ঞানহীনতা দেখে খুবই বিরক্ত লেগেছে।

মুরুব্বীদের কাছে জানতে পারলাম আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ১৯৯৯ সালেও নাকি এমনই ঘটনা ঘটেছিল।

পঠিত : ৩৩৩৫ বার

মন্তব্য: ০