Alapon

নারীদের চাকরি করার প্রবনতা এবং কিছু কথা...

কর্পোরেট ইমপ্যাক্টের কারণে নারীদের চাকুরিজীবী হওয়ার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে এখনকার বিষাক্ত শিক্ষাব্যবস্থার কারণে মেয়েদের মাথায় এটাই জেকে বসেছে যে চাকুরি না করলে স্বাধীন হওয়া যায় না। একটা পরিবারের নিউক্লিয়াস যখন ভেঙে চুরমার হয় তখন অটোমেটিক্যালি পুরো ফ্যামিলিই রসাতলে যায়।

এই করুণাবস্থার জন্য দায়ী করা যায় একাধারে-

- স্বামীকে।

- মাকে।

- ‎স্ত্রীকে।

- শিক্ষাব্যবস্থাকে।

প্রথমতঃ স্বামীর দোষ হল সে তার স্ত্রীকে ঘরের বাইরে যেতে দেয়। বিয়ের সময় চাকুরিজীবী মেয়ে বিয়ে করে। অথবা বিয়ের শুরুতে বলে নেয় না যে চাকুরি করা যাবে না।হতে পারে স্বামী বেশী স্বচ্ছলতার আশায় বউ-কে দিয়ে চাকরি করায়। পরিশেষে পরিণত হয় দায়ূসে। পরে স্ত্রীর অপপ্রভাবে সংসারে শান্তি চলে যায়।

ঠান্ডা মাথায় একটু ভাবুন-তো পরপুরুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আপনার স্ত্রী ৮ ঘণ্টা কাজ করে। সেখানে কি অল্পটুকুও হাসিঠাট্টা বা আড্ডা হয় না? অফিস কলিগদের কথাবার্তা কতটা অশালীন মূহুর্তে পৌছায় তা যদি আপনি চাকরিজীবী হন তবে অবশ্যই কল্পনা করতে পারবেন। সেখানে প্রতিমূহুর্তে মুখের ও অন্তরের যিনা হয়, যা স্পষ্ট হারাম। এই হারাম কাজটাই হচ্ছে আপনাকে কেন্দ্র করেই। আপনি আপনার বউকে বাধ্য করতে পারতেন ঘরে থাকতে কিন্তু আপনি তা করেননি। কারণ কিঞ্চিৎ লোভ আপনাকে বেআক্কেল নির্বোধ বানিয়ে ফেলেছে। শুধু কি তাই বউ চাকরি করে এজন্য কখনো কখনো নিজেকে ভাগ্যবানও মনে করেন।

আপনি শুধু এতটুকু চিন্তা করুন। আপনি সকাল হলেই পর-পুরুষের চোখের লোলুপ আকষর্ণের মধ্যে আপনার প্রিয়তমাকে ছেড়ে দিচ্ছেন। কতো আগ্রাসী চিন্তার পুরুষ আপনার প্রিয়তমাকে চিন্তা করে অন্তরের যেনা করছে আল্লাহই সর্বোত্তম জানেন। এমতাবস্থায় আপনি কি করে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন?

আল্লাহ বলেন,"আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ। [১৭:৩২]

অশ্লীলতা তো দূরের কথা, বিনা প্রয়োজনে যেখানে কোমলভাবে কথাবার্তা বলারও বৈধতা নেই মাহরাম নারী-পুরুষের মধ্যে। সেখানে আপনার বউ ৮ ঘণ্টা পর-পুরুষের সাথে কাটিয়ে ঘরে এসে আদর্শ মা আর আদর্শ স্ত্রী হওয়ার ভাষণ দেই, চাকরী করলেও নাকি সুগৃহিনী হওয়া যায়। সুগৃহিনী হওয়ার পথে চাকরী বাধা নয়।

দ্বিতীয়তঃ মেয়েদের মাকে আর কি বলবো তারা-তো লোভকে নফসের অলঙ্কার বানিয়ে ফেলেছে। মেয়েকে সঠিক দ্বীনি শিক্ষা দেওয়া-তো দুরের কথা বরং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে মেয়েকে সে এই কু শিক্ষায় দিয়েছে যে তার মতো সে যেনো সারাদিন হাড়ি ঠেলার কাজে ব্যস্ত থেকে নিজের জীবন নষ্ট না করে। শুধু তাই না ঘরের কর্তাকে সে সাফ জানিয়ে দেয়, 'মেয়ে স্বাবলম্বী না হলে মেয়েকে সে বিয়ে দিবে না। হাড়ি ঠেলতে ঠেলতে আমার জীবন আমি নষ্ট করেছি কিন্তু আমার মেয়ের জীবন আমি নষ্ট হতে দিবো না।'

সবচেয়ে অবাক ব্যাপার আমাদের সমাজে এমন মা-ও আছেন অবিবাহীত মেয়েকে চাকরির জন্য কখনও মহিলা মেসে আবার কখনও বা কোনো আত্মীয়ের বাসায় ফেলে রাখেন।

তৃত্বীয়তঃ স্ত্রীর অপরাধ হল সে তার স্বামীর আনুগত্য করার থেকে বসের আনুগত্য করাকে পছন্দ করেছে। ঘরই যে সম্মানের, এটাই যে তাদের সেক্টর, এতটুকু বুঝকে বিসর্জন দিয়েছে। তাদের ফিতরাত বিকৃত হয়ে যাওয়ায় সংসারের দায়দায়িত্ব তাদের নিকট অপমানজনক বোঝা মনে হয়।

সবশেষে আসে শিক্ষাব্যবস্থ্যার ক্রুটি। প্রায় এক দশক ধরে এই ব্যবস্থাই মুসলিম পরিবারের সন্তানদের ব্রেনওয়াশ করে। যার ফলাফল আমাদের চোখের সামনে। যে শিক্ষায় নুন্যতম দ্বীনি জ্ঞানটুকুও থাকেনা

যাইহোক আমি সিংহভাগ দোষ স্বামী আর শিক্ষাব্যবস্থাকেই দিবো, শিক্ষাব্যবস্থা দিয়েই সিংহভাগ মানুষের ওপর প্রভাব বিস্তার করা হয়। সে সাধ্যমত স্ত্রীকে বুঝালে সর্তক করলে, শরিয়াহ মোতাবেক স্ত্রীকে যে ভাবে শাসন করা যেতে পারে সেভাবেই শাসন করলে কেন স্ত্রী বুঝতে চাইবে না। আর যদি স্ত্রী আপনের আয়ত্বের বাহিরে চলে যায় তাহলে আপনার ভালো আপনাকেই বুঝতে হবে। তাই লাস্ট অপশন হিসেবে স্ত্রীকে তালাক দিবেন।

আর মায়েরা মনোযোগ দিয়ে শুনুন আপনার কন্যাকে প্রজাপতির ডানায় উড়ার স্বপ্ন দেখাবেন না। সংসার মানে স্বামীর গোলামী করা এই বলে সংসারকে মেয়ের সামনে বীতশ্রদ্ধ করে তুলবেন না। আপনার মেয়েকে একজন মুসলিম নারী হিসেবে গড়ে তুলুন।

মনে রাখবেন, সব দোষ যেমন নারীরও নয়, আবার তেমনই সব দোষ পুরুষেরও নয়।



cltd

পঠিত : ১৬১৩ বার

মন্তব্য: ০