Alapon

গোপন গুনাহ : ভয়ংকর এক রোগের সূত্র

গোপন গোনাহ_ভয়ংকর এক রোগের সূত্র :
ইদানীং একটি রোগ মহামারির রূপ ধারণ করেছে। অনেক দ্বীনদার ভাইয়েরাও এ মারাত্মক ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। রোগটি খুবই ভয়ানক, অত্যন্ত সংবেদনশীল। রোগটির স্বরূপ হলো, আল্লাহর অস্তিত্ব, ইসলামের সত্যতা, আখিরাতের বিশ্বাস, কুরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা ইত্যাকার বিষয়ে প্রকাশ অযোগ্য ভাবনার উদয়। অনেকেরই এখন এসব ব্যাপারে আজেবাজে চিন্তার উদ্রেক হচ্ছে। সন্দেহ ও সংশয় ব্যাপক আকার ধারণ করছে। অনেকের তো অবিশ্বাসের মাত্রা এতটাই বেড়ে গেছে যে, ইতিমধ্যে তারা দ্বীনদারি থেকে পুরোমাত্রায় দূরে সরে যাচ্ছে। ইসলাম থেকে ক্রমান্বয়ে অন্ধকার জগতের দিকে সরে যাচ্ছে। রোগটি এখন আর ব্যক্তিকেন্দ্রীক নেই; বরং ধীরে ধীরে ব্যাপকভাবে সামাজিক ব্যাধিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়ে ইমানি মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে।
অনেক তাতব্য-তালাশ ও সময় ব্যয় করে যা বুঝতে পারলাম, তার সারসংক্ষেপ হলো, এ রোগের উৎস হলো, গোপন গোনাহ। মানুষ যখন জেনেবুঝে ইচ্ছাকৃতভাবে গোপনে গোনাহ করতে অভ্যস্ত হয়ে যায়, তখন অন্তর থেকে আল্লাহর ভয় বিদায় নিতে থাকে। অন্তর যখন তাকওয়াশূন্য হয়ে যায়, তখন অন্তর পাথরের মতো শক্ত হয়ে যায়। আল্লাহর ভয় আর জাগ্রত হয় না। মোনাজাতে চোখের পানি আসে না। এক পর্যায়ে শয়তান তার দুর্বল ইমান ও বিশ্বাসের ওপর আঘাত হানতে শুরু করে। বিভিন্ন শিরকি ও কুফরি চিন্তা তার মনে আসতে শুরু করে। সে না এগুলোর খণ্ডন জানে, আর না জানার জন্য কোনো আলিমের শরণাপন্ন হয়। যখন অবিশ্বাস অন্তরে একেবারে গেঁথে যায়, তখন সে হয়ে পড়ে সেক্যুলার বা নাস্তিক। অনেকে পরিবার ও সমাজের ভয়ে তা প্রকাশ না করলেও শেষে ইমানহীন অবস্থাই তার মৃত্যু ঘটে।
পূর্বের ও বর্তমানের একাধিক ঘটনা পাওয়া যায় যে, সারাজীবন দ্বীনদার ও পরহেজগার হিসাবে পরিচিত লোকটির মৃত্যুর সময় কালিমা নসিব হচ্ছে না। যতই চেষ্টা করছে, মুখ থেকে কালিমা বের হচ্ছে না। অনেকে তো শেষ সময়ে এসে সরাসরি ইসলামকেই অস্বীকার করে বসছে। কেউ কুরআন সামনে নিয়ে বলছে, আমি এর সবকিছু অস্বীকার করলাম। নিজ স্বীকারোক্তি বা পরিবার ও ভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সে বাইরে সবার কাছে ভালো দ্বীনদার হিসাবে প্রকাশ করলেও গোপনে নিয়মিত কবিরা গোনাহে লিপ্ত হতো।
বর্তমান সময়ে গোপনে গোনাহ করার আসবাব অনেক বেশি। উপকরণগুলো অত্যন্ত সহজলভ্য। তাই আমাদের যুবসমাজ দিনদিন গোপন গোনাহে বেশি জড়িয়ে পড়ছে। সামান্য ব্যতিক্রম ছাড়া দ্বীনদার শ্রেণিও বাদ পড়ছে না। এর ভয়াবহ ফলাফলও দেখতে পাচ্ছি। প্রচুর মানুষ এখন সংশয়ের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। দু,চারজন এটা নিয়ে চিন্তিত ও চিকিৎসা করার ব্যাপারে উদ্যোগী হলেও অধিকাংশ মানুষ এ ব্যাপারে উদাসীনই থেকে যাচ্ছে। শেষ জমানায় যে মানুষ ব্যাপকহারে ইমানহারা হতে থাকবে, তার বাস্তবায়ন বোধহয় শুরু হয়ে গেছে। বর্তমানের ভয়ংকর এ সময়ে কতজন যে মুক্তি পাবে, তা একমাত্র মহান রাব্বুল আলামিনই ভালো জানেন!
ইবনে জাওজি রহ. বলেন :
ﻭﺍﻟﺤﺬﺭ ﺍﻟﺤﺬﺭ ﻣﻦ ﺍﻟﺬﻧﻮﺏ، ﺧﺼﻮﺻًﺎ ﺫﻧﻮﺏ ﺍﻟﺨﻠﻮﺍﺕ، ﻓﺈﻥ ﺍﻟﻤﺒﺎﺭﺯﺓ ﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﺗﺴﻘﻂ ﺍﻟﻌﺒﺪ ﻣﻦ ﻋﻴﻨﻪ . ﻭﺃﺻﻠﺢ ﻣﺎ ﺑﻴﻨﻚ ﻭﺑﻴﻨﻪ ﻓﻲ ﺍﻟﺴﺮ، ﻭﻗﺪ ﺃﺻﻠﺢ ﻟﻚ ﺃﺣﻮﺍﻝ ﺍﻟﻌﻼﻧﻴﺔ ،
গোনাহ থেকে পরিপূর্ণরূপে বেঁচে থাকা; বিশেষত গোপন গোনাহ থেকে। কেননা, আল্লাহর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বান্দাকে তাঁর নজর থেকে ফেলে দেয়। আল্লাহ ও তোমার মাঝে গোপনীয় বিষয় সংশোধন করো; তাহলে তিনি তোমার বহিরাগত বিষয় সংশোধন করে দেবেন। (সাইদুল খাতির : ২০৭, প্রকাশনী : দারুল কলাম, দিমাশক)
ইবনে আরাবি রহ. বলেন :
ﺃﺧﺴﺮ ﺍﻟﺨﺎﺳﺮﻳﻦ ﻣﻦ ﺃﺑﺪﻯ ﻟِﻠﻨَّﺎﺱِ ﺻَﺎﻟِﺢ ﺃﻋﻤﺎﻟﻪ، ﻭﺑﺎﺭﺯ ﺑﺎﻟﻘﺒﻴﺢ ﻣﻦ ﻫُﻮَ ﺃﻗﺮﺏ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻣﻦ ﺣﺒﻞ ﺍﻟﻮﺭﻳﺪ .
সবচেয়ে নিকৃষ্ট ও ক্ষতিগ্রস্ত সে-ই, যে মানুষের সামনে ভালো আমল করে, কিন্তু যে সত্তা তার শাহরগ থেকেও অধিক নিকটবর্তী, তাঁর সামনে বদ আমল করে। (তারিখু দিমাশক : ৫/৩৫৬, প্রকাশনী : দারুল ফিকর, বৈরুত)
ইবনে রজব হাম্বলি রহ. বলেন :
ﺃَﻥَّ ﺧَﺎﺗِﻤَﺔَ ﺍﻟﺴُّﻮﺀِ ﺗَﻜُﻮﻥُ ﺑِﺴَﺒَﺐِ ﺩَﺳِﻴﺴَﺔٍ ﺑَﺎﻃِﻨَﺔٍ ﻟِﻠْﻌَﺒْﺪِ ﻟَﺎ ﻳَﻄَّﻠِﻊُ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ، ﺇِﻣَّﺎ ﻣِﻦْ ﺟِﻬَﺔِ ﻋَﻤَﻞٍ ﺳَﻴِّﺊٍ ﻭَﻧَﺤْﻮِ ﺫَﻟِﻚَ، ﻓَﺘِﻠْﻚَ ﺍﻟْﺨَﺼْﻠَﺔُ ﺍﻟْﺨَﻔِﻴَّﺔُ ﺗُﻮﺟِﺐُ ﺳُﻮﺀَ ﺍﻟْﺨَﺎﺗِﻤَﺔِ ﻋِﻨْﺪَ ﺍﻟْﻤَﻮْﺕِ
বান্দার গোপন গোনাহ ও অবাধ্যতার কারণে মন্দ মৃত্যু হয়ে থাকে, যা মানুষ জানে না; চাই তা খারাপ কোনো আমল হোক বা অন্য কিছু। তার এ গোপন চরিত্রই তার মন্দ মৃত্যুর কারণ হয়। (জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম : ১/১৭২/১৭৩, প্রকাশনী : মুআসসাসাতুর রিসালা, বৈরুত)
ইবনে কাইয়িম জাওজিয়া রহ. বলেন :
ﺃﺟﻤﻊ ﺍﻟﻌﺎﺭﻓﻮﻥ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﺃﻥ ﺫﻧﻮﺏ ﺍﻟﺨﻠﻮﺍﺕ ﻫﻲ ﺃﺻﻞ ﺍﻻﻧﺘﻜﺎﺳﺎﺕ .
সব আল্লাহওয়ালা এ ব্যাপারে ঐক্যমত্য পোষণ করেছেন যে, গোপন গোনাহ-ই অধঃপতন ও অবনতির প্রধান কারণ। (মাউকিউ দুরারিস সুন্নিয়্যা : ১/২৪৩)
গোপন গোনাহ থেকে বেঁচে থাকার উপায়সমূহ :
১. রোনাজারি করা ও আল্লাহর কাছে দোয়া করা; যেন তিনি তাঁর নাফরমানি ও সকল গোনাহ থেকে হিফাজত করেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন :
ﻭَﺇِﺫَﺍ ﺳَﺄَﻟَﻚَ ﻋِﺒَﺎﺩِﻱ ﻋَﻨِّﻲ ﻓَﺈِﻧِّﻲ ﻗَﺮِﻳﺐٌ ﺃُﺟِﻴﺐُ ﺩَﻋْﻮَﺓَ ﺍﻟﺪَّﺍﻉِ ﺇِﺫَﺍ ﺩَﻋَﺎﻥِ ﻓَﻠْﻴَﺴْﺘَﺠِﻴﺐُﻭﺍ ﻟِﻲ ﻭَﻟْﻴُﺆْﻣِﻨُﻮﺍ ﺑِﻲ ﻟَﻌَﻠَّﻬُﻢْ ﻳَﺮْﺷُﺪُﻭﻥَ
আর আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে; বস্তুত আমি রয়েছি সন্নিকটে। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করি, যখন তারা আমার কাছে প্রার্থনা করে। কাজেই আমার হুকুম মান্য করা এবং আমার প্রতি নিঃসংশয়ে বিশ্বাস করা তাদের একান্ত কর্তব্য, যাতে তারা সৎপথে আসতে পারে। (সুরা আল-বাকারা : ১৮৬)
২. নফসের সাথে মুজাহাদা করা, তার কুমন্ত্রণা দূর করা এবং আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমে অন্তরকে পরিশুদ্ধ করার চেষ্টা করা।
আল্লাহ তাআলা বলেন :
ﻭَﻧَﻔْﺲٍ ﻭَﻣَﺎ ﺳَﻮَّﺍﻫَﺎ . ﻓَﺄَﻟْﻬَﻤَﻬَﺎ ﻓُﺠُﻮﺭَﻫَﺎ ﻭَﺗَﻘْﻮَﺍﻫَﺎ . ﻗَﺪْ ﺃَﻓْﻠَﺢَ ﻣَﻦْ ﺯَﻛَّﺎﻫَﺎ . ﻭَﻗَﺪْ ﺧَﺎﺏَ ﻣَﻦْ ﺩَﺳَّﺎﻫَﺎ
শপথ প্রাণের এবং যিনি তা সুবিন্যস্ত করেছেন, তাঁর। অতঃপর তাকে তাকে অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন। যে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে, সেই সফলকাম হয়। আর যে নিজেকে কলুষিত করে, সে ব্যর্থ মনোরথ হয়। (সুরা আশ-শামস : ৭-১০)
তিনি আরও বলেন :
ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺟَﺎﻫَﺪُﻭﺍ ﻓِﻴﻨَﺎ ﻟَﻨَﻬْﺪِﻳَﻨَّﻪُﻡْ ﺳُﺒُﻠَﻨَﺎ ﻭَﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻟَﻤَﻊَ ﺍﻟْﻤُﺤْﺴِﻨِﻴﻦَ
(সুরা আল-আনকাবুত : ৬৯)
৩. হাদিসে বর্ণিত ওই অবস্থার কথা চিন্তা করা, কিয়ামতের দিন যখন গোপন গোনাহকারীদের আমলসমূহ ধূলিকণার ন্যায় উড়িয়ে দেওয়া হবে।
রাসুলুল্লাহ সা. বলেন :
ﻟَﺄَﻋْﻠَﻤَﻦَّ ﺃَﻗْﻮَﺍﻣًﺎ ﻣِﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻳَﺄْﺗُﻮﻥَ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﺑِﺤَﺴَﻨَﺎﺕٍ ﺃَﻣْﺜَﺎﻝِ ﺟِﺒَﺎﻝِ ﺗِﻬَﺎﻣَﺔَ ﺑِﻴﻀًﺎ، ﻓَﻴَﺠْﻌَﻠُﻬَﺎ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﺰَّ ﻭَﺟَﻞَّ ﻫَﺒَﺎﺀً ﻣَﻨْﺜُﻮﺭًﺍ ‏» ، ﻗَﺎﻝَ ﺛَﻮْﺑَﺎﻥُ : ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻِﻔْﻬُﻢْ ﻟَﻨَﺎ، ﺟَﻠِّﻬِﻢْ ﻟَﻨَﺎ ﺃَﻥْ ﻟَﺎ ﻧَﻜُﻮﻥَ ﻣِﻨْﻬُﻢْ، ﻭَﻧَﺤْﻦُ ﻟَﺎ ﻧَﻌْﻠَﻢُ، ﻗَﺎﻝَ : ‏« ﺃَﻣَﺎ ﺇِﻧَّﻬُﻢْ ﺇِﺧْﻮَﺍﻧُﻜُﻢْ، ﻭَﻣِﻦْ ﺟِﻠْﺪَﺗِﻜُﻢْ، ﻭَﻳَﺄْﺧُﺬُﻭﻥَ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻠَّﻴْﻞِ ﻛَﻤَﺎ ﺗَﺄْﺧُﺬُﻭﻥَ، ﻭَﻟَﻜِﻨَّﻬُﻢْ ﺃَﻗْﻮَﺍﻡٌ ﺇِﺫَﺍ ﺧَﻠَﻮْﺍ ﺑِﻤَﺤَﺎﺭِﻡِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻧْﺘَﻬَﻜُﻮﻫَﺎ
আমি আমার উম্মতের কতক দল সম্পর্কে অবশ্যই জানি, যারা কিয়ামতের দিন তিহামার শুভ্র পর্বতমালার সমতুল্য নেক আমল নিয়ে উপস্থিত হবে। কিন্তু মহামহিম আল্লাহ সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত করবেন। সাওবান রা. বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, তাদের পরিচয় পরিষ্কারভাবে আমাদের নিকট বর্ণনা করুন, যাতে অজ্ঞাতসারে আমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত না হয়ে যাই। তিনি বললেন, তারা তোমাদেরই ভ্রাতৃগোষ্ঠী এবং তোমাদের সম্প্রদায়ভুক্ত। তারা রাতের বেলা তোমাদের মতোই ইবাদত করবে। কিন্তু তারা এমন লোক, যারা একান্ত গোপনে আল্লাহর হারামকৃত কর্মে লিপ্ত হবে। (সুনানু ইবনি মাজাহ : ২/১৪১৮, হা. নং ৪২৪৫ প্রকাশনী : দারু ইহইয়াইল কুতুবিল আরাবিয়্যি)
৪. আল্লাহ তাআলার পর্যবেক্ষণের কথা চিন্তা করা যে, তিনি আমাকে সর্বদাই দেখছেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন :
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠّﻪَ ﻛَﺎﻥَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺭَﻗِﻴﺒًﺎ
নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের ওপর পর্যবেক্ষক। (সুরা নিসা : ১)
৫. গুনাহ করার সময় এ চিন্তা করা যে, আমার শ্রদ্ধেয় বড় কেউ দেখলে কি আমি এ গোনাহ করতে পারতাম?
রাসুলুল্লাহ সা. বলেন :
ﻭَﺍﺳْﺘَﺢِ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺍﺳْﺘِﺤْﻴَﺎﺀَ ﺭَﺟُﻞٍ ﺫِﻱ ﻫَﻴْﺒَﺔٍ ﻣِﻦْ ﺃَﻫْﻠِﻚِ
তুমি তোমার পরিবারের কোনো প্রভাবশালী সদস্যকে যেমন লজ্জা পাও, আল্লাহকে (কমপক্ষে) তেমন লজ্জা করো। (মুসনাদুল বাজ্জার : ৭/৮৯, হা. নং ২৬৪২, প্রকাশনী : মাকতাবাতুল উলুম ওয়াল হিকাম, মদিনা)
৬. এ চিন্তা করা যে, গোনাহরত অবস্থা যদি আমার মৃত্যু হয়ে যায় তাহলে কিভাবে আমি আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করব।
রাসুলুল্লাহ সা. বলেন :
ﻳُﺒْﻌَﺚُ ﻛُﻞُّ ﻋَﺒْﺪٍ ﻋَﻠَﻰ ﻣَﺎ ﻣَﺎﺕَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ
প্রত্যেক ব্যক্তিকে (কিয়ামতের দিন) ওই অবস্থায় উঠানো হবে, যে অবস্থায় সে মৃত্যুবরণ করেছে। (সহিহ মুসলিম : ৪/২২০৬, হা, নং ২৮৭৮, প্রকাশনী : দারু ইহইয়াইত তুরাসিল আরাবিয়্যি, বৈরুত)
৭. আল্লাহর নিয়ামত ও জান্নাতের সুখ-শান্তির কথা স্মরণ করা এবং জাহান্নামের আজাব ও ভয়ানক শাস্তি কল্পনা করা।
আল্লাহ তাআলা বলেন :
ﺇِﻥَّ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﻳُﻠْﺤِﺪُﻭﻥَ ﻓِﻲ ﺁﻳَﺎﺗِﻨَﺎ ﻟَﺎ ﻳَﺨْﻔَﻮْﻥَ ﻋَﻠَﻴْﻨَﺎ ﺃَﻓَﻤَﻦ ﻳُﻠْﻘَﻰ ﻓِﻲ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ﺧَﻴْﺮٌ ﺃَﻡ ﻣَّﻦ ﻳَﺄْﺗِﻲ ﺁﻣِﻨًﺎ ﻳَﻮْﻡَ ﺍﻟْﻘِﻴَﺎﻣَﺔِ ﺍﻋْﻤَﻠُﻮﺍ ﻣَﺎ ﺷِﺌْﺘُﻢْ ﺇِﻧَّﻪُ ﺑِﻤَﺎ ﺗَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ ﺑَﺼِﻴﺮٌ
নিশ্চয় যারা আমার আয়াতসমূহের ব্যাপারে বক্রতা অবলম্বন করে, তারা আমার কাছে গোপন নয়। যে ব্যক্তি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে সে শ্রেষ্ঠ, না যে কিয়ামতের দিন নিরাপদে আসবে? তোমরা যা ইচ্ছা করো। নিশ্চয় তিনি দেখেন যা তোমরা করো। (সুরা ফুসসিলাত : ৪০)
আল্লাহর কাছে আমরা ইমানের জন্য নিয়মিত দুআ করতে থাকি। গোপন গোনাহ থেকে সর্বাত্মকভাবে বেঁচে থাকি। মোবাইল ও ইন্টারনেটের অপব্যবহার থেকে দূরে থাকি। দ্বীনদার আলিমদের সোহবত বেশি বেশি ইখতিয়ার করি এবং কুরআন তিলাওয়াত, জিকির-আজকার ও ইসলামি বই অধিকহারে অধ্যয়ন করতে শুরু করি। 

আল্লাহ আমাদের হিফাজত করুন। 
শিরকমুক্ত ইমান ও বিদআতমুক্ত আমল দান করুন। 
ইমানের হালতে দুনিয়া থেকে বিদায় নেওয়ার তাওফিক দান করুন।

মুফতী তারেকুজ্জামান হাফি.

পঠিত : ১৩২৬ বার

মন্তব্য: ০