Alapon

ইমরান খান কি কাশ্মীর বিক্রি করে দিয়েছেন...?

ইমরান খান কাশ্মীর বিক্রি করে দিয়েছে!

এমন কথা দু’একজন বিজ্ঞ বাঙাল ফেসবুকার বলছেন। এই সংবাদ এখন পর্যন্ত বাংলার আকাশ-বাতাস এবং নীল-সাদার ফেসবুকে ঘুরলেও, পাকিস্তানিরা কিন্তু কেউই এ কথা বলছে না। এখন পর্যন্ত টুইটার বা ফেসবুকে কোনো পাকিস্তানিকে এমন মন্তব্য করতে দেখিনি।

তবে বাঙাল ফেসবুকার এই তথ্য পেলো কোথায়?

বিজ্ঞ বাঙাল ফেসবুকাররা এই তথ্য পেয়েছে কোথায়, তা আমি জানি না। তবে এতোটুকু বলতে পারি, ইমরান খান কাশ্মীর বিক্রি করে দিলে তার আর দেশে ফেরত আসা লাগত না। ঐ আমেরিকাতেই অথবা আফ্রিকার কোনো গহীণ জঙ্গলে পালিয়ে যেতো হতো। কারণ, এই কাজ করলে স্বয়ং পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-ই তাকে হত্যা করতো!

এখন প্রশ্ন করবেন, আইএসআই তাকে কেন হত্যা করবে?

কারণ, প্রকৃত অর্থে কাশ্মীর না থাকলে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এতোটা ক্ষমতা পেতো না! কাশ্মীরের দাবি না থাকলে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীরও আর সেভাবে প্রয়োজন পড়বে না।

কেবল, ভারত ও কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করেই ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর থেকে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে অনেক বেশি শক্তিশালী করা হয়েছে। পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তার নিজের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যতোটা ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে, খুব সম্ভবত বিশ্বের আর কোনো দেশের সেনাবাহিনী এতোটা পারে না।

ইমরান খান যদি সেই কাশ্মীরই ছেড়ে দেয়, তাহলে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আর প্রয়োজন থাকল কোথায়? অতএব নিজেদের ক্ষমতা জিইয়ে রাখতেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং আইএসআই কখনোই কাশ্মীর ইস্যুতে ছাড় দিতে দিবে না! আর বিক্রি করে দেওয়া তো দূর কি বাত!

দ্বিতীয়ত, পাকিস্তানের রাজনীতির প্রধান আদর্শই হল ভারত বিরোধীতা। সেখানকার রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্ন ভিন্ন আদর্শ থাকতে পারে। কিন্তু তারা সকলেই একটি জায়গায় একমত; ভারত বিরোধীতা। ভারত বিরোধীতা না করলে, পাকিস্তান জনগনই তাদের দূর দূর করে দাড়িয়ে দিবে। আর রয়েছে আইএসআই!

আইএসআই-কে বলা হয়, রাষ্ট্রের ভিতরেই আর এক রাষ্ট্র! আইএসআই-কে এতো বেশি ক্ষমতায়ন করার কারণও, সেই ভারত। সেই ভারতের সাথে লিয়াজো করে কেউ রাজনীতি করতে চাইবে, আর আইএসআই তা চুপচাপ বসে বসে উপভোগ করবে; এমনটা হয়ত পাগলও করবে না।

বিজ্ঞা বাঙাল ফেসবুকার সবসময় তার বিজ্ঞতা জাহির করতে মুখিয়ে থাকে। কোনো একটা ঘটনা ঘটলেই, দুই একটা কঠিন ইংরেজি শব্দের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে, প্যাচানো সমীকরণ টেনে কোনো একজনকে বলির পাঠা বানিয়ে দেয়। কিন্তু কাশ্মীর বিষয়টি এতোটাও সহজ কোনো বিষয় নয়। অতএব, আপাতত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গাদ্দার প্রমাণ করা থেকে ক্ষ্যান্ত দেন! নতুন কোনো ইস্যুতে, অন্য কোনো ব্যক্তিকে গাদ্দার প্রমাণ করার জন্য বিজ্ঞ বিজ্ঞ ফেসবুক স্ট্যাটাস লিখুন। ধন্যবাদ।

পঠিত : ৬৭৭ বার

মন্তব্য: ০