Alapon

নিষ্পাপ কিশোর হত্যা করে 'কি আনন্দ' আনিসুল-প্রথম আলো গংদের



আনিসুল হকের কিশোর আলোর সিগনেচার ইভেন্ট কিআনন্দ চলার সময়ে রেসিডেন্সিয়ালের এক বাচ্চা ইলেকট্রিক শকে আহত হয়েছে। পরে তাকে হাসপাতালে নেয়ার পরে ছেলেটা মারা যায়। ছেলেটা ক্লাস নাইনে পড়ে।

ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে কিশোর আলোর আনন্দ উৎসব ‘কি আনন্দ’ অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে আয়োজকদের অবহেলায় নবম শ্রেণীর এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু দায় এড়ানো চেষ্টা করছেন কিশোর আলো কর্তৃপক্ষ। ছাত্রটির নাম নাইমুল আবরার রাহাত।

এ ঘটনায় অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকাসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। প্রশ্ন তুলেছেন আয়োজকদের মানবিকতা নিয়ে। তারা বলছেন, একজন ছাত্র মৃত্যু অবস্থায় রেখে কিভাবে অনুষ্ঠান পরবর্তিতে চালানো হয়। আয়োজকদের এতো অবহেলা! একটা ইভেন্ট শেষ করার জন্য এভাবে জীবন শেষ হয়ে যাবে। একজন ছাত্রের মৃত্যুর খবর আড়াল করে কিভাবে কনসার্ট অনুষ্ঠান চলতে পারে? আয়োজকদের এতো অবহেলা! একটা ইভেন্ট শেষ করার জন্য এভাবে জীবন শেষ হয়ে যাবে?

শিক্ষার্থীরা বলছেন, অনুষ্ঠান চলাকালীন সময় বিকেল ৩ টার দিকে বিদ্যুত স্পৃস্ট হলে তাকে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়। কিন্তু কোথায় তাকে নেওয়া হচ্ছে এ বিষয়ে আমাদের জানানো হয়নি। পরে বিকেল ৫ টার দিকে জানতে পারি মহাখালীর এক হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ক্যাম্পাসের আশেপাশে এতোগুলো হাসপাতাল থাকতে মহাখালীতে কেন? তাহলে কি অনুষ্ঠানের বিঘ্ন ঘটার শঙ্কায় তাকে দূরে নেওয়া হলো। মানুষের জীবনের চেয়ে তাদের অনুষ্ঠানের গুরুত্ব বেশী?

তারা বলছেন, নাইমুল আহত হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে নেয়া হলেও কাউকে জানানো হয়নি। আমরা জানতে চাইলেও আমাদের কাউকে জানাতে নিষেধ করে কিশোর আলো কতৃপক্ষ।

এছাড়া শিক্ষার্থীরা বলছেন, কিশোর আলো যতবার আমাদের ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠান করেছে তখনই কোনো না কোনো সমস্যা হয়েছে। তারা বলছেন, এই নিয়ে তিনবার কিশোর আলো আমাদের কলেজে নিজেদের জন্মদিনের ইভেন্ট আয়োজন করল। প্রত্যেকবার দুর্ঘটনা না ঘটালে যেন তাদের মন ভরে না। ২০১৭ সালে তারা আমেদের মাঠ নষ্ট করেছিল, ১৮ তে ছোট ছোট গাছগুলো মেরে ফেলেছে। সেগুলো নাহয় মেনে নিতে পেরেছিলাম, কতটাই বা যাবে, আনন্দ তো করতে পেরেছি।। কিন্তু এবার? একটা ১৫ বছরের বাচ্চার জীবনের দাম কী দিয়ে পূরণ করবেন? এ দায় এড়াতে পারবেন না কখনো।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যা জানা গেছে

১। পুরা প্রোগ্রাম জুড়ে সিকিওরিটি প্রটোকল মানা হয় নাই। লাইভ ইলেকট্রিক ওয়্যার ছড়ানো ছিল। এমন একটা তার থেকেই শক লেগেছে।

২। শক খাওয়ার পরে ছেলেটাকে পাশের সোহরাওয়ার্দী হসপিটালে না নিয়ে দূরে মহাখালীতে পাঠানো হয়েছে, কারণ ফেস্টের স্পন্সর নাকি কোন এক মেডিক্যাল কলেজ আর হাসপাতাল। রিমেম্বার, ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা না করে ছেলেটাকে কাছের হাসপাতালে নিলে হয়তো সারভাইভ করতে পারত! নিজেদের বাঁচাতে স্রেফ মেরে ফেলল অর্গানাইজাররা, কোল্ড ব্লাডেড মার্ডার!

৩। ছেলেটা জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকার সময়ে তারা কিআনন্দ উদযাপন করে গেছে। কাউকে ঘুণাক্ষরেও জানতে দেয়া হয় নাই। একটা দুর্ঘটনা ঘটার পরেও তারা কন্টিনিউ করসে বাকি বাচ্চাদের কথা চিন্তা না করে। কনসার্ট করেছে সিকিওরিটি এনশিওর না করে!

৪। ভলান্টিয়ারদের বাই ফোর্স ঘটনা চেপে যেতে বলা হয়েছে! মিডিয়াতেও এই ঘটনা ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে।

আনিসুল হক গং রা যে নিজেদের স্বার্থের জন্যে বাচ্চা ছেলেমেয়েদের ইউজ করতে দ্বিধাবোধ করে না এইটা জানতাম। কিন্তু এরা যে একটা বাচ্চার জীবনের বিনিময়ে কিআনন্দ মারিয়ে পিশাচের সমপর্যায়ে নামবে, এইটা কল্পনাতেও আসে নাই! একটা ফেস্টে একটা বাচ্চা ইলেকট্রিফাইড হইসে মানে রিস্ক আছে যে অন্যান্য বাচ্চারাও সেইম জিনিসের শিকার হইতে পারে! কিন্তু কিসের কী? নিজেদের স্বার্থই সব!

পঠিত : ১০০০ বার

মন্তব্য: ০