Alapon

বাংলাদেশের মালিকানা তিন ভাগে বিভক্ত...


১। এদেশের রাজনৈতিক মালিকানা আওয়ামীলীগের। এখানে আওয়ামীলীগ একমাত্র পলিটিক্যাল লেজিটিমিসি অউন করে। সুতরাং অন্য যেকোনও দলের রাজনৈতিক লেজিটিমিসির লাইসেন্স পেতে হলে তাদেরকে প্রকাশ্যে বা অপ্রকাশ্যে আওয়ামীলীগের আশির্বাদের ছায়ায় থাকতে হবে। এইটা ফাইনাল। এখানে কে মুক্তিযোদ্ধা, কে দেশকে ভালোবেসে ছিড়ে ফেলসে এইটা শুধুই চেতনার ত্যানা পেঁচানি। চেতনার ত্যানা পেঁচানি দিয়া কি হাসিল হয়? এটা দিয়ে হুজুগ ও আবেগ নির্ভর বাংলাদেশি এবং মগজবেচে খাওয়া বাংগালীকে বশে রাখা হয়। আপনারা ফুল দিবেন, পতাকায় সেলুট দিবেন, খালি পায়ে প্রভাত ফেরিতে যাবেন, স্মৃতি সৌধে ফুল দিবেন, শহীদ মিনারে জুতা খুলে উঠবেন আর বিপদে আপদে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করবেন।


২। এই দেশের আদর্শিক মালিকানা বাম গোত্রের হাতে। এরা ঠিক করে দিবে কোনটা সঠিক এবং কোনটা বেঠিক। বাংলাদেশের নাগরিকদের মধ্যে কারা মানুষ এবং কারা মানুষ না, কারা পক্ষের শক্তি এবং কারা পক্ষের শক্তি না, আপনার ধর্মের কোন কোন দিক বৈধ আর কোন কোন দিক অবৈধ, কোন খুনটা নিয়ে চুপ থাকতে হবে, কোন খুনটা উপভোগ করতে হবে, এবং কোন খুনটার জন্য ফাঁসি চাইতে হবে... এরকম বিষয় গুলো ঠিক করে দিবে বাম গোত্রের সদস্যরা। এরা কারা? এরা হল মোটা দাগে সাংবাদিক, লেখক, বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, বিনোদন ও সাংস্কৃতিক কর্মি, এনজিও প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যম কেন্দ্রিক লোকজন। এরা আপনাকে সেক্যুলারিজম, কমিউনিজম ও শাহবাগীজম দিয়ে ফিল্টার করবে এবং এর ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিবে আপনি আসলে মানুষ নাকি অমানুষ, আস অর আদারস। এখানে মুসলমান হিসাবে আপনার ঈমানের আসল টেস্ট সংগঠিত হয়। আপনি অনায়াসেই ঠিক করে নেন যে, আপনার রিলিজিয়াস এক্সপোজার কতটুকু হবে। আপনি কি কি নিয়ে ভাববেন আর কি কি নিয়ে ভাববেন না। কোন কোন বিষয়ে কথা বলবেন আর কোন কোন বিষয়ে কথা বলবেন না। আপনি নিজের দিকে তাকিয়ে দেখেন, আপনি নিজেই নিজেকে একটা সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় ফিল্টার করে থাকেন। আপনার এই সেলফ ফিল্টারিং সিস্টেম এমনি এমনি তৈরি হয় নাই। খুব খেয়াল করে দেখেন, আপনার ফিল্টারটার মৌলিক নির্যাস আর জাফরের ফিল্টারের মৌলিক নির্যাস কম বেশি একই রকম। এবার আপনি ধার্মিক/প্রাকটিসিং মুসলমান হোন আর ইসলাম দরদী মুসলিম হোন কিংবা এনি হোয়ার ইন সেক্যুলার ডাইমেনশনের লোক হোন- আপনার সেলফ ফিল্টার আর জাফরের ফিল্টার কম বেশি একই রকম।


৩। বাংলাদেশের জিও-রিজিও-পলিটিক্যাল মালিকানা হল ভারতের হাতে। এখানে কারা ক্ষমতায় থাকবে, কোন কোন ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট দ্বারা বাজার নিয়ন্ত্রণ হবে, ইলেকশনের প্ল্যান ও এক্সিকিউশন কিভাবে হবে, ন্যাচারাল রিসোর্স ডিস্ট্রিবিউশন কেমন হবে, কখন কোন ইসলাম পন্থী দলকে জঙ্গী স্ট্যাটাস দেয়া হবে, কোন ডিল কোন দিকে যাবে, বাংলাদেশ কার কাছ থেকে কতটুকু ঋণ নিবে, কোন প্রজেক্ট কার হাত দিয়ে বাস্তবায়ন হবে... এইধরনের বিষয়গুলোর সিদ্ধান্ত আসবে এই মালিক পক্ষ থেকে।

এখন আপনি যদি এই তিনটা মালিক পক্ষকে এক লাইনে রাখবেন তখন বাংলাদেশে যে পাওয়ার ডাইমেনশন তৈরি হয় সেইটা অলমোস্ট আন ব্রেকেবল। এটা থেকে একটা বাদ গেলে আপনার সাস্টেইনেবলিটি থাকে না। আমাকে যদি বলেন, এই তিনটার মধ্যে কোনটা বেশি স্থায়ী? উত্তরে আমি দ্বিতীয় কোনও ভাবনা ছাড়াই আপনাকে জানিয়ে দিব যে ২ ও ৩ নম্বর মালিকানা বেশি স্থায়ী হবে। টুডে অর টুমোরো আওয়ামী মালিকানা আলগা হতে শুরু করবে। আর আওয়ামী মালিকানার সিংহভাগ অংশ ২য় অংশে বর্নীত গোত্রের হাতে চলে আসবে। তখন এই মালিকানা দুই ভাগে রিডিউসড হবে।

এই বিষয়টা মাথায় রাখলে আপনারা বুঝবেন কেন আপনারা সংখ্যা গরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছেন না। এটা বুঝলে আপনারা বুঝবেন কেন এই সরকার অধিকাংশ জনগণ দ্বারা ঘৃণিত হওয়ার পরেও শক্তপোক্ত ভাবে টিকে আছে। এর কারণ খুব স্পষ্ট- মালিক এক জন থাকে কিন্তু দাস থাকে বহুজন, তবুও মালিকই কিন্তু টিকে থাকে। লিখেছেন: জাবাল আত তারিক

পঠিত : ৬৫৭ বার

মন্তব্য: ০