Alapon

মিস‌ওয়াকের কান্না...


প্রিয় মুসলিম ভাই , আধুনিক প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের উৎকর্ষের ফলে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি , আবিষ্কার করেছি অনেক কিছুই যা বলার অপেক্ষা রাখেনা । তার মধ্যে একটি হল দাঁতকে সুন্দর ও সূস্থ রাখতে ব্রাশের আবিষ্কার । যা আমরা ডাক্তারের পরামর্শে দিনে চার থেকে পাঁচবার ব্যবহার করে থাকি । কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিসকে বিদায় দিয়েছি ! হয়তো এখন ভাবছেন সেই জিনিসটি কি ?
প্রিয় মুসলিম ভাই , হ্যাঁ আমি সেই মিস‌ওয়াকের কথা বলছি যার গুরুত্ব ইসলামি শরীয়াতে অপরিসীম । এ সম্পর্কে রাসূল ( সাঃ) বলেনঃ-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَأَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ لَوْلَا أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي أَوْ عَلَى النَّاسِ لَأَمَرْتُهُمْ بِالسِّوَاكِ مَعَ كُلِّ صَلاَةٍ.

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

আল্লাহ্‌র রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আমার উম্মাতের জন্য অথবা তিনি বলেছেন, মানুষদের জন্য যদি কঠিন মনে না করতাম, তাহলে আমি প্রত্যেক সালাতের সাথে তাদের মিস্‌ওয়াক করার আদেশ করতাম। (৭২৪০; মুসলিম ২/১৫, হাঃ ২৫২, আহমাদ ৭৪১৬) (আ.প্র. ৮৩৬, ই.ফা. ৮৪৩) (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৮৮৭ )

অন্য বর্ণনায়,
عَنْ عَائِشَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: " عَشْرَةٌ مِنَ الْفِطْرَةِ: قَصُّ الشَّارِبِ، وَقَصُّ الْأَظْفَارِ، وَغَسْلُ الْبَرَاجِمِ، وَإِعْفَاءُ اللِّحْيَةِ، وَالسِّوَاكُ، وَالِاسْتِنْشَاقُ، وَنَتْفُ الْإِبْطِ، وَحَلْقُ الْعَانَةِ، وَانْتِقَاصُ الْمَاءِ " قَالَ مُصْعَبٌ: وَنَسِيتُ الْعَاشِرَةَ إِلَّا أَنْ تَكُونَ الْمَضْمَضَةَ

আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:

রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ দশটি কাজ স্বভাবগত : গোফ কাঁটা, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ধৌত করা, দাড়ি লম্বা করা, মিসওয়াক করা, নাকে পানি দেওয়া, বগলের পশম উপড়ে ফেলা, নাভির নীচের পশম কামানো, পেশাবের পর পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা এবং শৌচকর্ম করা। মুসআব ইব্‌ন শায়বা (রাঃ) বলেনঃ আমি দশম কথাটি ভুলে গেছি, সম্ভবত তা হল কুলি করা। (সুনানে আন-নাসায়ী, হাদিস নং ৫০৪০) (হাদিসের মান: হাসান)

প্রিয় পাঠক , উক্ত হাদীসদ্বয় হতে আমরা বুঝতে পারছি মিস‌ওয়াকের গুরুত্ব কতটুকু রয়েছে । কারণ রাসুল ( সাঃ) বলছেন , আমার উম্মাতের উপর কঠিন মনে না করলে আমি তাদেরকে প্রত্যেক সালাতের সময় মিস‌ওয়াক করার আদেশ দিতাম ।
আর আমরা এই মিস‌ওয়াককে ছেড়ে দিয়ে গ্রহণ করেছি ইহুদী খ্রীষ্টানদের আবিষ্কার করা ব্রাশ ।
প্রিয় ভাই , আমি বলছিনা যে ব্রাশ করা নাজায়েয , আপনি এটা ব্যবহার করতে পারেন কোন সমস্যা নেই ।
তবে আমি যেটা বলতে চাচ্ছি তা হল , ব্রাশের মাধ্যমে আপনার দাঁত পরিষ্কার হতে পারে কিন্তু রাসুলের সুন্নাত পালন হবে না । মিস‌ওয়াক করা সুন্নাত এটা মিস‌ওয়াকের মাধ্যমেই করতে হবে , অন্য কিছুর দ্বারা এটা আদায় হবে না ।

তাই আসুন আমরা রাসুলের সুন্নাতকে পুনরুজ্জীবিত করি , নিজে মিস‌ওয়াক করি এবং অন্যকে মিস‌ওয়াক করার আহ্বান জানায় এবং হাদিয়া দিই ।
আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।

পঠিত : ৫৪৫ বার

মন্তব্য: ০