Alapon

মন খারাপের রাত...


রাত ১০ টা বাজে! হঠাৎ আব্বা কল দিলেন। রিসিভ করতেই বললেন, ‘তোমার নাম্বারে অনেকক্ষণ ধরে কল দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু যাচ্ছে না কেন?’
বললাম, ‘সম্ভবত মোবাইলের নেটওয়ার্কের মন খারাপ! তাই কল আসছে না।’
আব্বা প্রশ্ন করলেন, ‘তোমার কি মন খারাপ?’
বললাম, ‘জানেন আব্বা, মনে হচ্ছে আজ ঢাকা শহরটারও মন খারাপ। কেমন যেন শান্ত আর নিশ্চুপ! পরিবেশটা বড় অচেনা।’

ওপাশ থেকে আব্বা চুপচাপ শুনে যাচ্ছেন। তারপর বললেন, ‘তোমার আম্মাকে দেই? কথা বল, হয়তো মন ভালো হতে পারে।’
বললাম, ‘না থাক! আম্মার সাথে কথা বলব না। কারণ, মন খারাপ এক ধরণের ছোঁয়াছে রোগ। আম্মা দুর্বল চিত্তের মানুষ। ছেলে-মেয়েদের অকারণেই অধিক ভালোবাসেন। আমার মন খারাপ শুনলে আম্মারও মন খারাপ হয়ে যাবে। আম্মা খামোখা মন খারাপ করুক, তা চাচ্ছি না।’

তারপর আব্বা আর আমি দুজনেই নীরব।

নীরবতা ভেঙ্গে বললাম, ‘আব্বা, এই মুহুর্তে আমার কি ইচ্ছে করছে জানেন? বিদুৎ অফিসে বোমা মারতে ইচ্ছে করছে। বোমা মেরে গোটা শহরটাকে অন্ধকার করে দিতে ইচ্ছে করছে। তারপর ঘুটঘুটে অন্ধকার শহরে আমার পদযুগল ক্লান্তিহীণ হেটে চলবে...!
বোমা কোথায় পাওয়া যায় আপনি জানেন কি? ’

আব্বা বললেন, ‘তারপর...?’
তার আর পর নেই।
বললাম, ‘আব্বা আপনার কপাল মন্দ! মন্দ কপাল নিয়ে এমন সময় কল দিলেন, যখন আমার মন খারাপ। আর আমার ইচ্ছে হল, আপনারও মনটা খারাপ করে দেই। তাই এতো কথা বললাম। এখন কি হবে জানেন, না চাইলেও আপনার মন খারাপ হবে। ভীষণ মন খারাপ হবে। শত চেষ্টা করেও মনটাকে ভালো করতে পারবেন না। তবে আগামীকাল সকালে ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মন খারাপ হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে।‍’

তারপর আবার নীরবতা!

নীরবতা ভেঙ্গে বললাম, ‘জানেন আব্বা, মন খারাপেরও সঙ্গি দরকার হয়। বন্ধুর দরকার হয়। কিন্তু আমার তেমন কোনো বন্ধু নেই, যার সঙ্গে মন খারাপটা ভাগাভাগি করা যায়।

আপনি কি আমার মন খারাপ ভাগাভাগি করে নেওয়ার মত বন্ধু হবেন...?

পঠিত : ২৩৭০ বার

মন্তব্য: ০