Alapon

মুমিন জীবনে সময়...


গত রমজান মাসের কথা। একদিন তারিক মাহমুদ ভাই মসজিদে ধরে বললেন, ‘একটা বই অনুবাদ করেছি। আপনাকে একটু পড়ে অনুভূতি জানাতে হবে। কোথায় কোথায় সমস্যা মনে হয়, একটু ধরিয়ে দিবেন; আমি সংশোধন করব।’

আমি সম্মতি জানালাম। সে-ই রাতেই তিনি আমার হাতে আল্লামা ইউসুফ আল কারজাভী রচিত ‘আল ওয়াকতু ফি হায়াতিল মুসলিম’ যার বাংলা অর্থ ‘মুসলিমের জীবনে সময়’- বইয়ের পান্ডুলিপি পৌঁছে দিলেন।

প্রথমে ভেবেছিলাম, এ আর এমন কী বিষয়; দুই রাতের কর্ম! এক পাশ থেকে ধরব, লাল কালিতে সমস্যাগুলো মার্ক করে রাখব তার পর অনুবাদকের হাতে তুলে দিবো। কিন্তু বইটা শুরু করার পরই শুরু হল বিপত্তি। প্রথমে সম্পাদকের দৃষ্টিতে পড়া শুরু করেছিলাম। সেই দৃষ্টিতে পাঠক হিসেবে যে মজা পাওয়ার কথা, তা আর পাওয়া যায় না। কিন্তু শুরু করার পর মনে হলো, আগে নিজের জন্য পড়ি। তারপর সম্পাদনা করা যাবে।

দুদিনের জায়গায় ৮ দিন পর পান্ডুলিপি অনুবাদকের হাতে ধরিয়ে দিলাম। তারপর তাঁকে বললাম, ‘এতো অসাধারণ একটি বই আপনি গত ১ বছর ধরে আটকে রেখেছেন। বিরাট অন্যায় করেছেন। পান্ডুলিপিতে কিছু ভাষাগত সমস্যা রয়েছে, সেখানে মার্ক করে দিয়েছি। অতি দ্রুত প্রকাশের ব্যবস্থা করুন।’

সে সময়ের সম্পাদনা ছিল আন-অফিসিয়াল। এর পর অফিসিয়ালি এই বইয়ের সম্পাদনার দায়িত্ব পড়ল। কারণ, তিনি পান্ডুলিপি গার্ডিয়ানে জমা দিয়েছেন। এরপর গার্ডিয়ান থেকে এই বই ‘মুমিন জীবনে সময়’- নামে প্রকাশিত হল। আলহামদুলিল্লাহ।

এই বই আমার ব্যক্তিগত জীবনে দারুণ প্রভাব ফেলেছে। কত সময় হেলাফ-ফেলায় নষ্ট করেছি। ফেসবুকে স্ক্রলিং আর ইউটিউবের কিম্ভুত কিমাকার ভিডিও দেখে হা...হা...হা... করে হেসেছি। অথচ সেই সময়টা কাজে লাগিয়ে নিজের ইহকালীণ ও পরকালীণ জীবনকে সমৃদ্ধ করতে পারতাম।

প্রত্যেক মানুষের জন্য সময় ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। মুমিন মুসলমানের জন্য আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রত্যেককে তার জীবনের প্রতিটি মুহুর্তের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। আর এই বই সেই জবাবদিহিতার দায়িত্বানুভূতি জাগ্রত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।

সর্বোপরি অন্তুর থেকে দোয়া করছি, আল্লামা ইউসুফ আল কারজাভীর জন্য। তিনি আমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে নেওয়ামাত স্বরূপ। মুসলিম উম্মাহর খেদমতে তিনি নিজের পুরো জীবনটাই বিলিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহপাক এই মজলুম মানুষটিকে হায়াতে তাইয়্যেবা দান করুন। আমীন।

পঠিত : ১১৯১ বার

মন্তব্য: ০