Alapon

ইসলামপন্থিদের নারী ভাবনা...


আমাদের মনে রাখতে হবে- প্রায় ৫০ শতাংশ মহিলাদের #উপেক্ষা করে ইসলামী সমাজ ব্যবস্থা বিনির্মাণের কোন স্বপ্নই এদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবেনা, না না না। একটি সফল ইসলামী বিপ্লব সাধনের জন্য টোটাল পপুলেশনের এই অর্ধেক জনগোষ্ঠীর মননে ও মগজে ইসলামের চির অম্লান বার্তা প্রোথিত করে দিতে হবে। তাদেরকে ইসলামের জ্ঞানে জ্ঞানান্বিত হবার সুযোগ করে দিতে হবে। ইসলামের কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারীদেরকেও ব্যুৎপত্তি অর্জন করতে হবে। অসংখ্য আলেমা ও মহিলা দ্বায়ী তৈরী করতে হবে। সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি পারিবারিক উদ্যোগে তাদেরকে ইসলামী শরীয়ত তথা দ্বীনের সার্বিক প্রয়োজনীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে হবে।

(এখানে এই 'উপেক্ষা' শব্দটা RAND কর্পোরেশন, উইমেন অ্যামপাওয়ারম্যান্ট সাপ্লাইকারী, তথাকথিত প্রগতিবাদী ও ফেমিনিস্টরা যে অর্থে ব্যবহার করে আমরা তা সে অর্থে ব্যবহার করবনা। তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন, তারা মুসলিম পরিবারের নারীদেরকে বেপর্দা, বেপরোয়া ও '#ন_ডরাই' করে আল্লাহর অমোঘ সৃষ্টি বিন্যাস ও কৌশলকেই বানচাল করে দিতে চায়। ইসলামী অনুশাসনের চৌহদ্দিতে রাখতে গিয়েও যে আমরা বিভিন্নভাবে নারীদেরকে নিগৃহীত ও উপেক্ষা করি এবং তাদেরকে প্রয়োজনীয় ইসলামী শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করি- সেটুকু তুলে ধরাই আমাদের উদ্দেশ্য)।

ইসলামী তাহযীব তমুদ্দুনের ওপর চতুর্মুখী আগ্রাসনের এই সংকটজনক সময়ে এদেশে মহিলাদের শিক্ষা, চিকিৎসা, স্বাস্থ্য, বিনোদন নিয়ে ইসলামপন্থীদের বিশেষায়িত ও সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া সময়ের অনিবার্য দাবিতে পরিণত হয়েছে। এ দাবীর প্রতি অবহেলা না করে মা-বোন-স্ত্রীদেরকে ইসলামী ধাঁচে গড়ে তোলার জন্য প্রত্যেক পরিবারের ইসলামপন্থী পুরুষকুলকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। ইসলামপন্থী রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোকে এ ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হবে।

মহিলাদের কোমল হৃদয়ে সত্য ও সুন্দরের বীজ বুনে দেওয়া তুলনামূলকভাবে খুবই সহজ। পরিবার বা সংসারে একজন মহিলা শিক্ষিত, ধার্মিক ও নৈতিক গুণাবলী সমৃদ্ধ মানুষে পরিণত হলে একটা জেনারেশন সত্যের ইমারতে দাঁড়িয়ে যায়। মুসলিম পরিবারগগুলোতে মায়ের এ অনন্য সাধারণ অর্জনকে কাজে লাগিয়ে জেনারেশন টু জেনারেশন বিল্ড আপ করতে পারলে একটা ভূ-খণ্ডে ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ইসলামপন্থীদের তেমন বেগ পেতে হবেনা, ইন শা আল্লাহ্।

একটি ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে নারীদের স্বতস্ফূর্ত অংশ গ্রহণ ব্যতিরেকে কখনোই সফলতা লাভ সম্ভব নয়। পরিবারে নারীদের ধার্মিকতায় নিহিত রয়েছে প্রভূত সামাজিক কল্যাণ। যদিও শক্তি, সামর্থ, পারগতা ও সক্ষমতার দিক দিয়ে পুরুষ নারীর চেয়ে সৃষ্টিগতভাবে এগিয়ে, তথাপি বিশ্ব জগতের মানব ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়- প্রেম, ভালবাসা, সহানুভূতি, মমত্ব, কোমলতা, দয়া, মায়া ইত্যাদির মাধ্যমে নারীরাই পুরুষের লাগাম হাতে নিয়ে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করেছে।

নারীর কারণে, যেমন- হেলেনের কারণে ট্রয় নগরীর ধ্বংস, সীতার কারণে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ, রাণী ইসাবেলার স্পেন থেকে মুসলিম বিতাড়নে ভূমিকা রয়েছে, তেমনি নারীর কারণেই পৃথিবী সুন্দর ও সুষমাবিভায় গড়ে ওঠেছে। মুসলিম উম্মাহ্'র সোনালী সময়ের নারীদের অনুকরণ ও অনুসরণ করে বর্তমানকালে যেসব নারীগণ মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনের পথ নির্দেশিকা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করবে তাদের দ্বারা আগামীর পৃথিবী হয়ে উঠবে সুষমামণ্ডিত, মানব জাতি হবে তাদের গৌরবে গৌরবান্বিত।

লিখেছেন: আহাদ উম্মাহ

পঠিত : ৯৩৫ বার

মন্তব্য: ০