Alapon

জামায়াতে রাজাকারের সংখ্যা এবং আমার কিছু কথা...


ভাইয়েরা গবেষণা করে দেখাচ্ছেন যে জামায়াতের স্কোর ৩৭ থেইকা বাইড়া ৭৮ হইসে। আমি বললাম আলহামদুলিল্লাহ। এই তালিকায় আমার কোনও অবিশ্বাস নাই। কিন্তু সমস্যা হইতেছে আপনারা তো তালিকাতে এর পরেও ইমান আনতে পারতেছেন না। ধরেন জামায়াতের স্কোর আরও বাড়াইলাম, আপাতত গ্রেস দিয়া ১০০০ পর্যন্ত গেলাম। পরে আপনারা চাইলে আরও বাড়াবো। এখন আপনারা বলেন- এই তালিকার কতটুকু বিশ্বাস করলে আপনার চুলকানি থামে আর কতটুকু বিশ্বাস করলে আপনার চুলকানি বাড়ে? অনেস্টলি বলেন ভাই, লজ্জা শরমের কিছু নাই। জামায়াতের ইঞ্জিন হাউজ ভেঙ্গে গেছে, এই দলের মাথাগুলো ফাঁসির মঞ্চে চলে গেছে। দরকারে আরও যাবে। আপনি এই তালিকা দিয়া জামায়াতকে ধোয়া তুলসীপাতা বানাইলেও যেমন কিছু যায় আসে না আবার পুনরায় আরেকটি মুক্তিযুদ্ধের আগাম রাজাকারীর দায়ে ফাঁসির বন্দোবস্ত করলেও কিছু যায় আসে না। ফাইনাল প্রশ্ন হইতেছে, এই তালিকার কিছু কিছু জিনিস আপনি কেন বিশ্বাস করতে চাইবেন না? আপনি যদি কিছু অংশ অবিশ্বাস করার ইরাদা করেন তাহলে অন্যজনেরও কিছু অংশকে রিজেক্ট করার অধিকার থাকে।

এই তালিকাটা আমাকে যেই রিয়াল ফ্যাক্টটা খোলাসা কইরা বলে সেইটা হল, রাজাকারির ক্ষেত্রেও একটা সার্বজনীন বিষয় ছিল- মানে সকল দলেই আপনি পর্যাপ্ত পরিমান রাজাকার পাচ্ছেন এবং পাবেন (আনলেস আপনি একটা পক্ষের শক্তির চশমা দিয়া দুনিয়া দেখার ব্যাপারে অন্ধত্বে একীন হন)। সুতরাং প্রশ্ন হইতেছে এরকম একটা হিস্টোরিক্যাল পরিস্থিতিতে এক্সক্ল্যুসিভলি একটা দলকে রাজাকার বলার সুযোগ কতটুকু আছে এইটা আপনি আপনার চুলকানিরে এক সাইডে রাইখা ভাবতে রাজি কি না?

কেউ কেউ বলতে চাইতেছেন এই তালিকাটাই আসা উচিৎ হয় নাই। এইটা গুড পয়েন্ট, কিন্তু এই গুড পয়েন্টের মা মইরা গেছে। কথায় আছে- "তীর ছোঁড়া হয়ে গেলে সেটা কোথাও না কোথাও আঘাত করবেই"। এই তীর বহুত আগে ছোড়া হইসে, এখন তালিকার পর তালিকা আসবে, ভার্সনের পর ভার্সন আসবে। এখন যুক্তিতে প্রচুর যুক্তি থাকলেও কাজ নাই।

যদি তালিকার সবাই জামায়াত হয়, তাইলেও জামায়াত হিসেবে জামায়াতের জন্য এইটা কোনও সমস্যা না। কারণ জামায়াত স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতা করেছিল এইটা দিবালোকের মতো সত্য। যুদ্ধের সময় দুই পক্ষের মধ্যে রোমান্স হয় না, পরম আলিঙ্গনের সঙ্গম হয় না, এক পক্ষ আরেক পক্ষকে চুমায় না। যুদ্ধের সময় যা অতিস্বাভাবিক ভাবে হয় ৭১ এর সময় বাংলাদেশে সেইটাই হইসে। নাৎসিজম ও যায়োনিজম প্যাটার্নের থিংকিং থেইকা বাহির হইলে আমি এই পক্ষ বিপক্ষের মধ্যে কোনও সমস্যা দেখি না। এখন এখানে প্রশ্ন হচ্ছে যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে আপনি কি করবেন? এই ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের সাজানো বিচার নাটক গুলোই জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ যে- যুদ্ধাপরাধ কিংবা গণহত্যার সাথে জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা ছিল না। আগেই বলেছি, যেহেতু যুদ্ধাবস্থায় দুই পক্ষের মধ্যে পরম আলিঙ্গনের সঙ্গম হয় না সেহেতু সিভিলিয়ানদের দ্বারা কিছু অরাজকতা হইসে। এইখানে সামরিক পক্ষের অবদান কতটুকু কিংবা সিভিলিয়ান একটিভিস্টদের অবদান কতটুকু সেইটা একটা বড় বিষয়। বাংলাদেশের কনটেক্সটে এইজায়গাটা সম্পুর্নভাবে ঘোলাটে। শহীদের সংখ্যা নিয়াও এইখানে ভালোমাপের বিতর্ক আছে। এই ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের ধান্দা শয়তান ছাড়া আর কেউ করবে না। বাংলাদেশে এইটাই হইসে। মোদ্দা কথা, ফিতন ফিতনই- ফিতনার সময়ের জটিলতা নিয়া ধান্দাবাজী করা মানেই জাতিরে শুলের আগায় রাইখা স্বার্থসিদ্ধি করা। এইটা বুঝলে বুঝ পাতা না বুঝলে কাঠাল পাতা। গত ১৫ বছরে এই ধান্দাবাজী দিয়া দেশের প্রতি কি চুলবালের অবদান হইসে তা তো দেখাই যাচ্ছে।

Jabal At Tariq

পঠিত : ৬৮৩ বার

মন্তব্য: ০