Alapon

একজন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার ১৪,২০১টা মিথ্যা!


অবিশ্বাস্য এ কাহিনীর জন্ম আমেরিকায়। এবং জন্মদাতা এমন একজন যিনি এ মুহূর্তে পৃথিবীর সবচাইতে ক্ষমতাধর চেয়ারটায় বসে আছেন। ডোনাল্ড জন ট্রাম্প!

অবশ্য আমরা যারা বাংলাদেশে জন্ম নিয়ে এর লতায় পাতায় বড় হয়েছি তাদের জন্যে এ কাহিনীতে কোন চমক নেই। কারণ জোচ্চুরি আর জালিয়াতিকে লালন করেই আমরা বেঁচে থাকি। ভুয়া কোম্পানির ফাঁদ পেতে জনগণের সাথে প্রতারণা এখানে ডাল-ভাত।

এক অর্থে সুস্বাদু আহার। যার অন্যতম ব্যাংক ও বীমা ব্যবসা। কিন্তু একই ঘটনা যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মত উন্নত দেশে ঘটে কিছুটা হলেও থমকে যেতে হয় এবং নিজ দেশ নিয়ে হতাশায় কিছুটা হলেও প্রলেপ দেয়া যায়।

তিনি তখনও রাজনীতিতে নিয়মিত নন। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী হিসাবে মার্কিন অর্থনীতিতে জায়গা করে নিয়েছেন। এক পর্যায়ে ভাটার টান লাগে এই ব্যবসায়। নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের আটলান্টিক সিটির ক্যাসিনো ব্যবসা বিক্রি করতেও বাধ্য হন।

এ হতে উত্তরণের উপায় হিসাবে বেছে নেন নতুন এক ধান্ধা। ইউনিভার্সিটি ব্যবসা। প্রতিষ্ঠা করেন ট্রাম্প ইউনিভার্সিটির। ২০,০০০ ডলার পর্যন্ত ফি দিয়ে ছাত্ররা ভর্তি হয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

কিন্তু অল্প কিছুদিনের ভেতর ছাত্ররা বুঝতে সক্ষম হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে এ এক বিশাল প্রতারণা। বুঝতে পারে ট্রাম্প ইউনিভার্সিটি আসলে কোন ডিগ্রী দেয়ার ক্ষমতা রাখে না'। এখানে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার উপর সেমিনার কন্ডাক্ট করা হয় মাত্র।

ছাত্রদের খুব একটা বেশী সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। দলে দলে ওরা ভিড় জমায় আদালতে। নিউ ইয়র্ক শহরে একে একে ৩৫০০ মামলার মুখোমুখি হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউনিভার্সিটির নামে ভুয়া ব্যবসা রাতারাতি বন্ধ করতে বাধ্য হন এই জালিয়াত।

বরাবরের মত মিথ্যাকে পুঁজি করে এড়িয়ে যেতে থাকেন এসব মামলা। মিডিয়াতে বড় গলায় ঘোষণা দেন এসব মামলার কোন মেরিট নেই , তাই অফ টেবিল ফয়সালা করার কোন হেতু নেই।

২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে প্রমাদ গোনেন জনাব ট্রাম্প। ইউনিভার্সিটি ব্যবসার এই স্ক্যাম জণসন্মুখে প্রকাশিত হওয়ার ভয়ে ফয়সালায় আসেন ঝুলতে থাকা ৩৫০০ মামলার। বিচারকের মধ্যস্থতায় ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে বিদায় করেন ছাত্রদের।

এ ধরণের প্রতারণা কেবল ডোনাল্ড ট্রাম্পই করেন এমনটা নিশ্চয় সত্য নয়। খুঁজলে আমেরিকায় আরও অনেককে পাওয়া যাবে। বিশেষ করে ওয়াল স্ট্রীটে। কিন্তু ব্যতিক্রম হচ্ছে বাকিদের কেউ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্যে প্রতিদ্বন্দিতা করেনা।

গতকাল পর্যন্ত ডোনাল্ট ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসাবে ১৪,২০১টা মিথ্যা বলেছেন যা দেশের ফ্যাক্ট চেকাররা রেজিস্ট্রি করেছেন। এই তিনি যখন দাবি করেন ইরানের কাসেম সুলায়মানিকে হত্যার কারণ ইমিনেন্ট থ্রেট অবিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ আছে।

৩০ লাখ কম ভোটে নির্বাচিত এই প্রেসিডেন্টের তৃতীয় স্ত্রী যখন একমাত্র সন্তানের জন্ম দিয়ে হাসপাতালে অবস্থান করছিলেন তিনি তখন পর্ণষ্টার ভাড়া করে হোটেলে সুখময় সময় কাটাচ্ছিলেন।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় যাতে এই 'সুসংবাদ' বাইরে না আসে তার জন্যে ১ লাখ ৩৫ হাজার ডলার দিয়ে মুখ বন্ধ করেছিলেন এই পতিতার।

ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন প্যথালজিক্যাল লায়ার , ফ্রড এবং বিশ্বচীট। পৃথিবীকে অস্থির করার এই কারিগরকে অনেকে তুলনা করেন হিটলারের সাথে। কারণ হিটলারের উত্থানের পেছনেও কাজ করেছিল সুপ্রেমেসী।
.
Azim Rahman

পঠিত : ৪৬৮ বার

মন্তব্য: ০