Alapon

কুয়েটে পোশাক বিতর্ক এবং প্রগতিশীলদের ডাবল স্ট্যান্ডার্ডবাজি...


কাসেম সুলাইমানির ঘটনার আড়ালে চাপা পড়ে গেছে কুয়েটের ঘটনা।অতি সম্প্রতি কুয়েটের একটি ছোট্ট ঘটনাকে কেন্দ্র করে সুশীল নামধারী কিছু সাংবাদিক এবং বুদ্ধিজীবিদের কান্ড কারখানা দেখলাম।

কুয়েটের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা র‌্যাগ ডে উপলক্ষ্যে জুব্বা এবং মাথায় পাগড়ি পরিধান করে। এই পোশাক পরে তারা মিছিল করে এবং শহীদ মিনার চত্বরে ফটোসেশন করে।

এটি অতি সাধারণ ঘটনা। র‌্যাগ ডে উপলক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যাচ বিভিন্ন পোশাক পরিধান করে উদযাপন করে। এমনকি বিভিন্ন দেশের ট্রেডিশনাল পোশাক করে আনন্দ করে। কিন্তু কুয়েটের শিক্ষার্থীরা জুব্বা পরায় ৭১ টেলিভিশন এবং তাদের ভাড়া করা কতক বুদ্ধিজীবিদের বুদ্ধির দৈন্যতা দেখে ভীষণ অবাক হয়েছি। অবাক হবার পালা শেষ হলে অট্টহাসি হেসেছি।

৭১ টেলিভিশনের সংবাদ পাঠিকা ১৫ ব্যাচের এক শিক্ষার্থীকে প্রশ্ন করেন, ‘আপনারা এতো পোশাক থাকতে জুব্বা এবং পাগড়ি পরিধান করতে গেলেন কেন? এই পোশাক কি বাঙালী সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই?’

মজার বিষয় হচ্ছে যে সংবাদ পাঠিকা বাঙালী সংস্কৃতির পোশাক নিয়ে কথা বলছেন, তিনি নিজেই পরে আছে শার্ট আর প্যান্ট! নারীদের শার্ট প্যান্ট পরা কবে থেকে বাঙালী সংস্কৃতির অংশ হল, এই কথা কিন্তু ৭১ টেলিভিশন দেয়নি। কথায় আছে ‘কৃষ্ঞ করলে লিলা খেলা আর আমি করলে ঢং’।

কুয়েটের শিক্ষার্থীরা জুব্বা আর পাগড়ি পড়লেই বাঙালী সংস্কৃতির চেতনা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, আর ৭১ টেলিভিশনের উপস্থাপিকারা শার্ট প্যান্ট, শর্টস পরলেও তাতে বাঙালী সংস্কৃতির চেতনা নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠে না। হায় সেলুকাস! একই চ্যানেলের দ্বিমুখী আচরণ আমাকে অবাক করেনি। আদর্শ আর চেতনা যাদের ব্যবসা তাদের দ্বারা এহেন কর্ম সম্পাদন করা অতি সাধারণ বিষয়।

এবার আসি মূল কথায়!
জুব্বা এবং পাগড়ি মূলত কোনো ধর্মীয় পোশাক নয়। এটা আরবদের ট্রেডিশনাল পোশাক। অতি তাপমাত্রা এবং রাতের শুষ্ক আবহাওয়া থেকে বাঁচতেই আরবরা সেই জাহেলিয়াত পূর্ব সময় থেকেই জুব্বা আর পাগড়ি পরিধান করে। পরবর্তিতে এই পোশাক আল্লাহর রাসূলও পরিধান করেছেন। আরব হওয়ার কারণেই তিনি এই পোশাক পরিধান করেছিলেন; ইসলামিক পোশাক হিসেবে নয়।

কিন্তু তারপরও আলেম-ওলামারা এই পোশাককেই নিজেদের পোশাক হিসেবে গ্রহণ করেছে। যার কারণে এই পোশাক এখন ইসলামিক পোশাক হিসেবেও পরিচিত। এই শিক্ষার্থীরা সেই পোশাক পরেই আনন্দ ও মজা করার চেষ্টা করেছে। এতে ক্ষিপ্ত হওয়ার কথা আলেম-ওলামাদের! আর আলেম-ওলামারা এ নিয়ে ক্ষিপ্ত হলে কুয়েটের তরুণ শিক্ষার্থীরাসহ সারাদেশের তরুণ শিক্ষার্থীরা আলেম-ওলামাদের উপর রুষ্ট হতো। আর এই রুষ্ঠতার কারণে তাদের মনে ইসলাম নিয়ে বিরূপ চিন্তা আসতো। ফলাফলস্বরূপ তারা ইসলাম থেকে দূরে সরে যেতো!

কিন্তু আল্লাহর পরিকল্পনা ছিল ভিন্ন! যেখানে প্রতিক্রিয়া আলেম-ওলামাদের দেখানোর কথা ছিল, সেখানে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে প্রগতিশীল দাবিদাররা। আর তাদের এই প্রতিক্রিয়া প্রমাণ করে, তারা প্রকৃত অর্থে ধর্ম বিদ্বেষী নয়। মূলত তারা ইসলাম বিদ্বেষী। ইসলামের নাম গন্ধ পেলেই তারা বুঝে না বুঝে সেটার বিরোধীতা করতে উঠে পড়ে লেগে যায়। কুয়েটের এই ঘটনা প্রগতিশীলদের ধুতি আরও একবার খুলে দিলো।

আল্লাহর পরিকল্পনা বোঝা বড় মুশকিল। আর আল্লাহর পরিকল্পনাই সর্বোত্তম। প্রগতিবাদি ও চেতনাবাদিদের এইসব নোংরামো তারা নিজেরাই ফাঁস করে দিচ্ছে! দেখে মজাই লাগে।

পঠিত : ৪৯৯ বার

মন্তব্য: ০