Alapon

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে স্থায়ী শত্রু বা স্থায়ী মিত্র বলে কিছু নেই...


একাত্তরে পাকিস্থানীদের হারানোটা সহজ হয়েছিল ভারতীয় সাহায্যের কারনে। প্রবাসী সরকারকে সেল্টার দেয়া , ১০ মিলিয়ন রিফিউজিকে আশ্রয় দেয়া , বিশ্বজুড়ে ডিপ্লোম্যাটিক এসিস্টেন্স , ডিসেম্বরের দিকে এসে সরাসরি যুদ্ধে নেমে পড়ে ইণ্ডিয়া আমাদের স্বাধীনদেশ অর্জনে সাহায্য করেছে।

কিন্ত সাহায্যটা সে বাংলার সবুজ প্রকৃতি আর শেখ মুজিবের তর্জনী কিংবা জয় বাংলা শ্লোগানে মুগ্ধ হয়ে করেনি। করেছে তাদের চির শত্রুকে দুর্বল করতে। পাকিস্থান ভাগ করে পঙ্গু করতে। ইন্দিরা গান্ধির ভাষায় 'মাথার এক পাশে ব্যাথা সহ্য করা যায়, দুই পাশের ব্যাথা সহ্য করা যায় না'।

অর্থাৎ না চাইতেই একাত্তরে আমরা ইন্দো-পাক কনফ্লিক্টের এডভান্টেজ নিয়ে নিয়েছিলাম। সফল হয়েছিলাম।

ইন্ডিয়ার সাথে আমাদের নানান সেক্টরে নানান ঝামেলা আছে। সাউথ এশিয়ান তথা বিশ্বের বিভিন্ন ফোরামে বরাবরই আমরা দেখি ইন্ডিয়া আমাদের প্রতিযোগী হয়ে দাড়াচ্ছে। আমাদের স্বার্থে বাগড়া দিচ্ছে। রিসেন্ট ক্লাইমেট ফান্ডের টাকা দাবী করা থেকে শুরু করে রামপাল , তিস্তা , আম , জামদানীর প্যাটেন্ট , আইসিসি , গার্মেন্টস , আইটি সব ক্ষেত্রেই।

কাজেই বিশ্ব ফোরামে ইন্ডিয়াকে কুপোকাত করতে হলে, নিজেদের স্বার্থ ঠিক রাখতে হলে , পাকিস্থানকে বয়কট করা যাবে না। তাদের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক রেখে ইণ্ডিয়াকে চাপে রাখতে হবে (স্বাভাবিক রাখা মানে মাথায় নিচে নাচা নয়)।

যেটা শেখ মুজিব ১৯৭৪ সালেই বুঝে ছিলেন এবং লাহোরে ওআইসি সম্মেলনে গিয়েছিলেন। ওআইসি সম্মেলনে যাবার পথে তাজউদ্দিন পরামর্শ দিয়েছিলেন, একটু দিল্লিতে যাত্রা বিরতি করে যান। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, 'কারো মাখা তামুক মুজিব খায় না।'

পাকিস্থান আমাদের এমন শত্রু যাকে আমরা হারিয়ে কবর দিয়ে ফেলেছি। পাকিস্থান আমাদের আর কোন ক্ষতিই করতে পারবে না।

ইংল্যাণ্ড আর ফ্রান্সের ইতিহাস মানেই শত্রুতার ইতিহাস। যুদ্ধের ইতিহাস। সেই ফ্রান্সকে নাৎসি বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা করতে আইজেনহাওয়ার টেনস অফ মিলিয়ন সৈন্য পাঠিয়েছে। ফ্রান্সকে নাৎসি অকুপেশন থেকে উদ্ধার করেছে।

আমরা ফেইসবুকীয় মাতালরা নিশ্চয় মুজিব , আইজেনহাওয়ার থেকে ডিপ্লোম্যাসি ভালো বুঝি না!

ভিয়েতনাম বিশ বছর আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলো চীনের সাহায্য নিয়ে । আজ চীনের সাথে ভিয়েতনামের রাজনৈতিক ঝামেলা চলছে আর আমেরিকা তার বানিজ্যিক সহযোগি ।

এই আধুনিক যুগে পার্মানেন্ট শত্রু বলে কিছু নাই। সবার আগে জাতীয় স্বার্থ। সেজন্য যাকে যেভাবে ব্যবহার করা যায়। কাউকে প্রভুর আসনে বসানো যাবে না। সবার আগে দেশের স্বার্থ।

সৌজন্য : Ekjon Ghunpoka

পঠিত : ৫০৮ বার

মন্তব্য: ০