Alapon

জামায়াতে ইসলামী ক্বওমী শিক্ষার শত্রু নয়...


প্রথমত যদি কাউকে প্রশ্ন করা হয় থাকে যে ক্বওমী সমর্থিত একটি রাজনৈতিক দলের নাম বলুন, এর প্রকৃত জবাব কোন ক্বওমী শিক্ষিত ভাই দিতে পারবেন না,কারণ ক্বওমী মুল আক্বীদায় প্রচলিত গণতন্ত্র হারাম,তাই সরাসরি ক্বওমী বোর্ডের সমর্থিত কোন রাজনৈতিক সংগঠন নেই।

কেউ বলতে পারেন, খেলাফত মজলিশ, ইসলামী ঐক্যজোট এবং চরমোনাইও তো ক্বওমী ঘরনার,তার জবাব হলো ক্বওমী শিক্ষা বোর্ডের সাথে এবং ক্বওমী আক্বীদার সাথে এই দলগুলোর উল্লেখযোগ্য কোন সম্পর্ক নেই, এক কথায় বুঝে নিতে পারেন,ক্বওমী একটি শিক্ষা ব্যবস্থা,কোন রাজনৈতিক সংগঠন নয়, কিংবা বিশেষ কোন সংগঠনের প্রতি ক্বওমী শিক্ষিতদের নির্দিষ্ট কোন সমর্থনও নেই, এর বাহিরে যারা পেরেছে সবাই নিজ নিজ দল গঠন করেছে,যা তাদের ব্যক্তিগত আকীদার মধ্য দিয়েই গড়ে উঠেছে।

তাই ক্বওমী শিক্ষার কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক সংগঠন না থাকলেও জামায়াতে ইসলামী রাজনীতিতে ইসলামী নেতৃত্বের সুচিন্তা মাথায় রেখে দল গঠনের মধ্য দিয়ে যে খেদমত করে যাচ্ছে,তা ইসলামী শিক্ষার প্রতিফলন হিসেবে সকল মুসলমানদেরই করা উচিত,ক্বওমী একটি ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শিক্ষার যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে,তাতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকারের ক্ষমতায়নে তাদের প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক ভুমিকা পালন কোন ভাবেই সম্ভব নয়,তাই কোন ইসলামী প্রতিষ্ঠানের উপর রাজনৈতিক পরিচিতি চাপানো উচিত নয়,যার ফলে একজন মুসলিম আদর্শিক চিন্তা থেকে যেই ধরেনর ইসলামী রাজনীতি করা প্রয়োজন, জামায়াতে ইসলামী ক্বওমী শিক্ষার সেই অসমাপ্ত কাজটিরই আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছে।

যদি ক্বওমী আক্বীদার কোন সংগঠন থাকতো এবং সেই মতে তাদের ইসলামী রাজনীতি গড়ে উঠতো,তাহলে হয়তো জামায়াতে ইসলামী রাজনীতিরও কোন প্রয়োজন থাকতো না,তখন জামায়াতে ইসলামীও এক বাক্যে ক্বওমীর নেতৃত্বে ইসলামী নেতৃত্ব মেনে নিতো,যেমনটি ক্বওমী ঘরনার গণমূখী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে জামায়াতে ইসলামীর কোন দূরত্ব নেই,বরং কেউ যদি দূরত্ব প্রদর্শন করেই থাকে,সেটি নিজ স্বার্থের জন্যই তারা জামায়াত বিরোধী বক্তব্য দিতে পারে,কিন্তু জামায়াতে ইসলামী কোন ইসলামী রাজনৈতিক দলের প্রতি বিষোদগার করে না।

তবুও একশ্রেনীর ক্বওমী থেকে বিচ্ছিন্ন আলেম তারা বাংলাদেশের ইসলামী রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালনের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তা না করে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে,যদি তারা নিজেরা ইসলামী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার পক্ষে কাজ করতো,তাহলে জামায়াতে ইসলামীর জায়গায় তারাই জেল জুলুমসহ ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতেন, আর তাতে ময়দানের সঙ্গী হিসেবে অবশ্যই জামায়াতে ইসলামী তাদের বিরোধীতা করতো না, একটি মসজিদ মাদ্রাসায় চাকরি করে প্রতি মাসের সুনির্দিষ্ট বেতন ভাতা পেয়ে একজন আলেম কতটুকু ইসলাম বিরোধী রাষ্ট্রীয় অপশক্তির বিরুদ্ধে কথা বলা সম্ভব?যা করতে গেলে হয়তো তাকে চাকরি হারাতে হবে,অথবা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সম্মুখীন হতে হবে,তাহলে কেন একজন ইসলামী সুচিন্তিত ক্বওমী আলেম জামায়াতে বিরুদ্ধে ফতোয়াবাজী আচরণ করবেন?

অথচ জামায়াতে ইসলামী নিয়ন্ত্রিত মসজিদ মাদ্রাসাগুলোতে ক্বওমী আলেমদেরকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকেন,তার কারণ হলো বেদআত বিরোধী আক্বীদা হিসেবে ক্বওমী আলেমদের গুরুত্ব জামায়াতে ইসলামীর কাছে সর্বাধিক গুরুত্ব, যাতে সাধারণ মানুষ বেদআত থেকে বের হয়ে প্রকৃত ইসলামী শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেন, সমাজে প্রতিষ্ঠিত কোন ক্বওমী আলেম বলতে পারবেন না,তার সাথে জামায়াতে ইসলামীর কোন নূন্যতম বিরোধ আছে,বরং প্রায় সমাজগুলোতে ক্বওমী আলেম ও জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত জনশক্তি একসাথ হয়ে বিদআতপন্থী সমাজ গঠনে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছেন।দূর দূরান্তের মসজিদগুলোতেও ক্বওমী আলেমদের থেকে প্রকৃত ইসলামী বয়ান পেতে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা ছুটে যান জুমআর সালাতের বয়ান শুনতে।

তাই জামায়াত নিয়ে কিছু ক্বওমী আলেমদের যতই বিরোধী থাকুক,ইসলামী আদর্শ রচনার জন্য তাদের প্রানবন্ত আলোচনা আমাদের খুবই ভালো লাগে,মহান আল্লাহ ক্বওমী শিক্ষাকে ইসলামী ময়দান গঠনের জন্য আরও উন্মুক্ত করে দিক,সকল হক্বানী আলেমদের মাঝে ঐক্যের মধ্য দিয়ে ইসলামী পতাকাকে রাষ্ট্র গঠনে সমুন্নত করুক, আমীন

Abul Bayan Helali

পঠিত : ৫৭৫ বার

মন্তব্য: ০