Alapon

আল কুরআন কি মানবরচিত গ্রন্থ...?


কোন ভূমিকায় না গিয়ে সহজ কথায় আল কুরআনের একটি বিষ্ময়কর অথচ অপ্রচলিত তথ্য আপনাদের সামনে হাজির করছি। যা থেকে আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন কোরআনের রচয়িতা কে!

পাঠক, আপনি হয়তো জানেন পৃথিবীতে মৌলিক রং তিনটি -লাল সবুজ নীল। এই তিনটির সঠিক সমন্বয়ে অন্য সকল রং তৈরি করা সম্ভব। এর পর প্রাকৃতিক বা বাস্তবিক রং হলো সাতটি। যেগুলো কোন প্রকার মানবীয় উদ্যোগ ছাড়া প্রাকৃতিক ভাবে আমাদের চোখে পড়ে- বেগুনি- নীল -আসমানী নীল-সবুজ-হলুদ-কমলা-লাল। জি, রংধনুর সাত রং। এগুলোই প্রাকৃতিক সাত রং। আমাদের চোখের দেখা অন্যান্য সকল রং গুলো এগুলোর মধ্যেই লুকিয়ে আছে।

পবিত্র কোরআনে এ বিষয়ে ইঙ্গিত দেয়া আছে। অবশ্য বুদ্ধিমানদের জন্য। রং বা বর্ণ এই শব্দটি কোরআনে এসেছে সর্বমোট ৭ বার।
আসুন দেখা যাক-
১★ তোমাদের জন্যে পৃথিবীতে যেসব রং-বেরঙের বস্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন, সেগুলোতে নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্যে যারা চিন্তা-ভাবনা করে।(সূরা নাহলঃ১৩)

২★ এরপর সর্বপ্রকার ফল থেকে ভক্ষণ কর এবং আপন পালনকর্তার উম্মুক্ত পথ সমূহে চলমান হও। তার পেট থেকে বিভিন্ন রঙে পানীয় নির্গত হয়। তাতে মানুষের জন্যে রয়েছে রোগের প্রতিকার। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শন রয়েছে। (সূরা নাহলঃ৬৯), নাহল অর্থ মৌমাছি।

৩★ তাঁর আরও এক নিদর্শন হচ্ছে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের সৃজন এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র। নিশ্চয় এতে জ্ঞানীদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। (সূরা রুমঃ ২২) রুম অর্থ ইটালির রোম শহর

৪★ তুমি কি দেখনি আল্লাহ আকাশ থেকে বৃষ্টিবর্ষণ করেন, অতঃপর তদ্দ্বারা আমি বিভিন্ন বর্ণের ফল-মূল উদগত করি। পর্বতসমূহের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বর্ণের গিরিপথ-সাদা, লাল ও নিকষ কালো কৃষ্ণ। (সূরা ফাতিরঃ ২৭)-এই আয়াতে ২ বার।

৫★ অনুরূপ ভাবে বিভিন্ন বর্ণের মানুষ, জন্তু, চতুস্পদ প্রাণী রয়েছে। আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল তাঁকে ভয় করে। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী ক্ষমাশীল। (সূরা ফাতিরঃ ২৮) ফাতির অর্থ প্রথম স্রষ্টা

৬★ তুমি কি দেখনি যে, আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন, অতঃপর সে পানি যমীনের ঝর্ণাসমূহে প্রবাহিত করেছেন, এরপর তদ্দ্বারা বিভিন্ন রঙের ফসল উৎপন্ন করেন, অতঃপর তা শুকিয়ে যায়, ফলে তোমরা তা পীতবর্ণ দেখতে পাও। এরপর আল্লাহ তাকে খড়-কুটায় পরিণত করে দেন। নিশ্চয় এতে বুদ্ধিমানদের জন্যে উপদেশ রয়েছে। (সূরা জুমারঃ২১) জুমার অর্থ দলবদ্ধ জনতা

এখন কথা হলো- আল কুরআনে খুব সাধারণ একটি বিষয়কে (রং/বর্ণ) আল্লাহ্ এতো রহস্যময় করে কেন বর্ণনা করেছেন? জি, এর উত্তর এই আয়াতগুলোর মধ্যেই আছে!
খেয়াল করে দেখুন সবগুলো আয়াতেই বুদ্ধিমত্তা অর্জন বা জ্ঞানার্জনের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ আপনি যদি জ্ঞানচর্চা করেন, সৃষ্টি জগত নিয়ে ভাবেন তাহলেই সৃষ্টির মহত্ত্ব অনুধাবন করতে পারবেন।

আল কুরআন যে মানব রচিত নয় এটা আল্লাহ্ তার সৃষ্ট অবিশ্বাসী মানুষের প্রতি প্রতিদ্বন্দ্বীতা ছুড়ে দিয়েছেন বিভিন্ন আয়াতে। অবিশ্বাসীদের দেওয়া মিথ্যা অপবাদের জবাব হিসেবে আল্লাহ্ নবী সঃ কে উদ্দেশ্য করে বলেছেন-

-"বলুনঃ যদি মানুষ ও জ্বিন এই কোরআনের অনুরূপ রচনা করার জন্যে জড়ো হয়, এবং তারা পরস্পরের সাহায্যকারী হয়; তবুও তারা কখনও এর অনুরূপ রচনা করে আনতে পারবে না।" সুরা বনী ইসরাইল -৮৮।

আর এই প্রতিদ্বন্দ্বীতা জানানোর কারণ হলো আল কুরআনে রয়েছে হাজার হাজার বিভিন্ন যুক্তির সমন্বয় ( Logical combination)। তাতে রয়েছে গাণিতিক, জ্যামিতিক, রসায়ন, পদার্থ, জ্যোতির্বিদ্যা ইত্যাদি বিষয়ক সুক্ষ্ম বিন্যাস যা মানুষ বা জ্বিনের পক্ষে সমন্বয় করা (Maintaine) সম্ভব নয়। একমাত্র আল্লাহর পক্ষেই শুধু সম্ভব।
সুতরাং এই কোরআন মানব রচিত নয়।

মাসুদ আলম

পঠিত : ১২৫১ বার

মন্তব্য: ০