Alapon

মিজানুর রহমান আজহারী কার দাবার গুটি...?


মিজানুর রহমান আজহারী কে নিয়ে সরকারের কৌশল প্রকাশ হয়ে পড়ছে। এতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে সরকার । অনেকের মতে, দন্ডপ্রাপ্ত কারান্তরীণ আল্লামা সাঈদী কে জনগণের মন থেকে ভূলিয়ে দিতে ও সরকার বিরোধী গণ-ক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাওলানা আজহারী কে নিয়ে সরকারের সমর্থন ও সহযোগীতার কৌশল প্রকাশ হয়ে পড়ছে।
ফলে, সিলেটে মাওলানা মাসউদ পন্থী আলেম হজরত মাওলানা আলিম উদ্দিন গংদের শক্ত অবস্থানে বিব্রত বোধ করছে সরকারী দল আওয়ামীলীগ।

তথ্য সুত্রে প্রকাশ, বর্তমান আওয়ামীলীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের রোষানলে পড়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০০৯ সাল থেকে কারাগারে । বাংলাদেশের জনপ্রিয় বক্তা মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদী। বাংলাদেশের বাহিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীর ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও গ্রহনযোগ্যতা রয়েছে। বাংলাদেশের সাঈদখাল এলাকার সংসদীয় আসনটি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা হলেও আল্লামা সাঈদী দুইবার এখান থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ রকম একজন জনপ্রিয় বক্তা কে বন্ধী করে দীর্ঘ দিন থেকে কারাগারে রাখায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

আল্লামা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীর প্রতি দেশের সকল ধর্মের মানুষের ও সর্ব মহলের অনেক ভালোবাসা ও সমবেদনা রয়েছে। সাঈদীর যুদ্ধাপরাধ মামলার রায়ের আগের দিন সাঈদীর মুক্তির দাবীতে বিক্ষোভ কালে দুই দিনে প্রায় তিনশত মানুষ মারা যান। যা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা।


সম্প্রতি সরকারী প্রকাশিত রাজাকারদের তালিকায় আল্লামা সাঈদীর নাম নেই। তাহলে কেন সরকার সাঈদী হুজুর কে বন্ধী করে রেখেছে। দীর্ঘ দিন থেকে এই ধরনের প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারছে না সরকার। সুত্রমতে, আল্লামা সাঈদী বিষয়ে জন আকাংখা ও গণ-দাবী মোকাবেলায় সরকার যখন সুযোগ খুঁজতে থাকে । তখন মাওলানা আজহারীর আগমন ঘটে বাংলাদেশে। মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রী নিয়ে এসে ওয়াজের মঞ্চে খুব কমদিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী। ভাল ইংরেজি বলতে পারেন। জ্ঞানের পান্ডিত্য মুগ্ধ করার মত। কোরআন হাদীসে ভাল দখল রয়েছে তাঁর। বয়স কম হলেও চেহারা-লেবাসে এবং আমলিয়তে উন্নত যৌলুস যে কোন মুমিন মানুষ কে আকৃষ্ট করার মত।


ইউটিউবে তাঁর বয়ান শুনে বাংলাদেশের যুব সমাজ আগ্রহী হয়ে উঠতে থাকে। এদিকে, সরকারও এই সুযোগ কে কাজে লাগাতে কৌশলী হয়ে উঠে। যাতে, মাওলানা আজহারী বুঝতে না পারেন। আবার সরকারের পরিকল্পনাটাও বাস্তবায়ন হয়ে যায়। যাতে দেশের মানুষ সাঈদীর বিকল্প ব্যক্তি আজহারীর বয়ানে আকৃষ্ট হয়ে আল্লামা সাঈদীর কথা মন থেকে ভূলে যায় এবং আজহারীর ওয়াজের মাঝে মাঝে সরকার বিরোধী বয়ানে গণ-ক্ষোভ সীমিত পরিসরে প্রকাশ করার সুযোগ পায়। সে হিসাবে আজহারীর ওয়াজ মাহফিলে পুলিশ প্রটোকল দিতে থাকে সরকার। সম্প্রতি, কক্সবাজারের তাফসীর মাহফিলে আজহারীর প্রায় পাঁচ লাখ শ্রোতার বিশাল মজলিসে সরকার চারশত পুলিশ নিয়োগ করে। যা নিকট অতীতে কোন মাওলানা এমন প্রটোকল পেয়েছেন বলে নজির নেই।


এই তাফসীর মাহফিলের খবর প্রকাশিত ও প্রচারিত হওয়ার পরদিন থেকে জনমনে প্রশ্ন উঠে যে, বর্তমান ধর্ম নিরপেক্ষ আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে এটা কিভাবে সম্ভব হতে পারে ? মাওলানা আজহারীর অনেক তাফসীর মাহফিলে আওয়ামীলীগ নেতাদের সভাপতিত্বের আসন গ্রহণ ও অনেক আওয়ামীলীগ নেতাদের সহযোগিতা দান ও অতি আগ্রহী ভূমিকা ইত্যাদি বিষয় গুলো কারো কারো নজরে আসে।

এমতাবস্থায়,সম্প্রতি সিলেটে মাওলানা আজহারী কে নিয়ে সরকারের কৌশলে ভিন্নতা আসে। গুটিকতেক আলেমের দাবীর মুখে আজহারীকে পূর্ব নির্ধারিত মাহফিলে অংশ নিতে দেয়া হয়নি। যা সরকারের নীতি নির্ধারকদের অনেকের কাছেই দূর্বোধ্য ।

অনেকের মতে, কারাগারে বন্ধী আল্লামা সাঈদী কে জনগণের মন থেকে ভূলিয়ে দিতে ও সরকার বিরোধী গণ-ক্ষোভ পুষিয়ে নিতে মাওলানা আজহারী কে কৌশলে সমর্থন ও সহযোগিতা দিচ্ছে সরকার । বাস্তবেও এখন মানুষের কাছে আগের মত “আল্লামা সাঈদীর মুক্তি চাই” দাবীটি আলোচিত হচ্ছে না। দাবীটি নিরব হয় পড়েছে। সাঈদী কবে মুক্তি পাবেন? এখন তেমন আর আলোচনায় নেই। আল্লামা সাঈদীর মুক্তি দাবীকারী জনতা এখন মাওলানা আজহারীর আলোচনা নিয়ে ব্যস্ত। প্রশ্ন হচ্ছে মিজানুর রহমান আজহারী কার দাবার গুটি?

আনোয়ার হোসেন

পঠিত : ১৭৩৭ বার

মন্তব্য: ০