Alapon

কিংবদন্তি শহীদ প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং কিছু তিক্ত কথা...


গত পচিশ বছর ধরে প্রথম আলোর নেতৃত্বে একটু একটু করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতীক যিনি হতে পারতেন, তাকে পিশাচ হিসেবে সাজানোর প্রচেষ্টা চলেছে। এই প্রচেষ্টায় অবদান রেখেছে বাংলাদেশের সমগ্র বাম ইন্টেলেজেনশিয়া।
তার প্রধান অপরাধ, তিনি চেয়েছিলেন বাংলাদেশ একটি স্বাধীন, স্বনির্ভর ও সার্বভৌম মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে পৃথিবীতে টিকে থাকুক।

আমি কিংবদন্তী শহীদ প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউর রহমানের কথা বলছি।

বাংলাদেশে মুজিবের কথা বললে আওয়ামী লীগ ট্যাগ খাওয়া লাগে না, কিন্তু জিয়াউর রহমানের কথা বললেই বিএনপি ট্যাগ খেতে হয়, কিন্তু দুজনের তফাতটা কোথায় ছিল, সচেতন ব্যক্তিমাত্রই ওয়াকিফহাল।
এই ভুখন্ডের ইতিহাসে সবচাইতে আন্ডাররেটেড এই মানুষটিই বাংলাদেশকে কৃষিপ্রধান রাষ্ট্র থেকে শিল্পায়িত রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যাবার পথিকৃত। আজকের বাংলাদেশী অর্থনীতি বলে যা আছে, তা জিয়ার লেগ্যাসির ওপর দাড়িয়ে আছে।

অব্যাহত মিথ্যাচারের ফলে জিয়াকে বাংলাদেশের পরের প্রজন্ম হয়তো চিনবে তাহেরের খুনী অথবা মোশতাকের সহযোগী হিসেবে, যিনি বাংলাদেশকে স্বাধীনতার বদলে পাকিস্তানের দিকে ঠেলে দিতে বদ্ধপরিকর ছিলেন।
কিন্তু আমার ধারনা, আজ হোক কাল হোক, হাজার ইন্ডক্ট্রিনেশন ও ইনটক্সিফিকেশনের পরেও জিয়ার ব্যক্তিত্ব ও কৃতিত্বকে অতিক্রম করে যাওয়া মাফিয়া প্রোপাগান্ডা মেশিনের পক্ষে সম্ভব হবে না। উপমহাদেশের রাজনীতি ক্রমেই ধর্মীয় আত্মপরিচয়কে সামনে নিয়ে আসছে, যেখানে কাশ্মীর, বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম সহ সমগ্র উপমহাদেশের মুসলমান নিজেদের পিঠের ছাল বাচাতেই রাজনৈতিক কৌশলগত ঐক্যের পথে হাটতে বাধ্য হবে। এই পরিস্থিতিতে শেরে বাংলা, জিন্নাহ ও ভাসানীর পর যিনি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবেন, তিনি জিয়াউর রহমান।

জিয়াই সেই ব্যক্তি যিনি বাঙালীত্বের ব্রাক্ষ্মণ্যবাদী নির্মান বাঙ্গালি জাতীয়তাবাদ থেকে আমাদের উপহার দিয়েছেন ভিন্ন এক জাতীয়তাবাদ, আজ যাকে বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ বলা হয়।
এই জাতীয়তাবাদ শহুরে সেক্যুলার এলিটের নয়, এই জাতীয়তাবাদ মুসলমানের, হিন্দুর, বৌদ্ধর, খ্রিস্টানের, উপজাতির এবং নাস্তিকেরও। এই জাতীয়তাবাদ যেমন উচ্চবিত্তের, তেমনি মধ্যবিত্তের আবার নিম্নবিত্তেরও। এই পরিচয় নাস্তিক থেকে সুফী, সবাইকে ধারন করে, যদিও এর শেকড় গাথা আছে ইসলামে।

ভবিষ্যতে কোন একদিন যদি টিকে থাকার প্রয়োজনে কাধে কাধ মিলিয়ে উপমহাদেশের পূর্বাঞ্চলের মানুষের লড়াইয়ের প্রয়োজন হয়, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের উদারতা, সাম্য, ইনসাফ ও ন্যায়বিচার তাদেরকে পথের দিশা দিতে পারবে, দিতে পারবে মাথা উচু করে দাড়াবার প্রেরণা।

স্বনির্ভর বাংলাদেশের জনক শহীদ জিয়াউর রহমানকে তার পচাশিতম জন্মদিনে শ্রদ্ধাভরে স্মরন করছি। আল্লাহ আপনাকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করুন।

মুহাম্মাদ সজল

পঠিত : ১৩৮২ বার

মন্তব্য: ০