Alapon

সীমান্তে হত্যাকান্ড বন্ধের অন্তরায় মেরুদন্ডহীণ সরকার...


বাংলাদেশের নাগরিকরাই সম্ভবত সবচেয়ে দূর্ভাগ্যবান নাগরিক, যাদের প্রতিবেশি দেশের সীমান্তরক্ষি বাহিনীর সদস্যরা প্রতিদিন গুলি করে হত্যা করে। আর বাংলাদেশের সরকার সেই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ করবে কি উপরন্তু এসব হত্যাকান্ডের পিছনে প্রচ্ছন্ন সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।

অতি সম্প্রতি ভারতের বিএসএফ বাহিনী মাত্র ২ দিনে ৫ জন বাংলাদেশি নাগরিককে গুলি করে হত্যা করেছে। তার মধ্যে একজনকে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমন হত্যাকান্ডের ঘটনা নতুন কিছু নয়। কিন্তু পর পর দুই দিনে ৫ জনকে গুলি করে হত্যার রেকর্ড খুব একটা পাওয়া যায় না।

এই হত্যাকান্ডের বিচার চাওয়া তো পরের কথা, দেশের মন্ত্রী পর্যন্ত ভারতের এই হত্যাকান্ডকে সমর্থন প্রদান করছেন।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার সাম্প্রতিক সীমান্ত হত্যাকান্ড নিয়ে বলেন, "আসলে আমাদের চরিত্র যদি ভালো না হয় - পরের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমরা গরুর বিট খুলতে দিবনা। আমাদের উপজেলায় রেজ্যুলুশন আছে, বিজিবি'র রেজ্যুলুশন আছে, জেলা আইন-শৃঙ্খলা মিটিং-এ রেজ্যুলুশন আছে। তারপরেও কেউ যদি জোর করে কাঁটাতারের বেড়া কেটে গরু আনতে যায় আর ইন্ডিয়ার মধ্যে গুলি খেয়ে মারা যায়, তার জন্য দায়-দায়িত্ব বাংলাদেশ সরকার নেবে না।"

দেশের একজন মন্ত্রী যখন এ ধরণের মন্তব্য করে, তখন বিএসএফ আর দ্বায় কি! তারা আদিষ্ঠ; আদেশ পালন করেছে মাত্র। আমরা মেরুদন্ডহীণ এক সরকারের দেশে বাস করছি, যেখানে গুলি খেয়ে নির্বি‍চারে মরাই কাম্য। কিছুদিন আগে র‌্যাবের দুই সদস্য ভুল করে সীমানা অতিক্রম করে ভারতের সীমানায় ঢুকে পড়ে। তারপর বিএসএফ তাদের গ্রেফতার করে। তাদের কপাল ভালোই বলতে হয়, কারণ তারা নিজের জীবন নিয়ে ফিরে আসতে পেরেছে। কিন্তু তাদের উপর যে রূপ নির্যাতন করা হয়েছে, তা হয়তো কোনো দাগী আসামীকেও করা হয় না। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রনায়লের পক্ষ থেকে উক্ত ঘটনার নুন্যতম প্রতিবাদও করা হয়নি।

অন্যদিকে চলতি মাসেই ভারতীয় সীমান্ত রক্ষি বাহিনী বিএসএফ এক নেপালি নাগরিককে গুলি করে হত্যা করে। আর এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে সীমান্তে সাধারণ মানুষের মানব প্রাচীর তৈরি করে প্রতিবাদ করা হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত ভারতের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি, নেপালের মানুষ তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছিল। শেষমেষ, ভারত সরকার এই হত্যার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে।

নেপালের মত একটি দুর্বল দেশ যখন এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারে, সেখানে আমরা কিছুই করতে পারিনি। উপরন্তু আমাদের দেশের মন্ত্রীরাই ভারতের পক্ষে সাফাই গাইছে। এরচেয়ে লজ্জাজনক ঘটনা আর কি হতে পারে।

প্রতিবাদ করার জন্য চাই মেরুদন্ড এবং জনতার সমর্থন। খোদ ভারতের সহায়তা নিয়ে ভোটারবিহিন নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার বহু আগেই নিজেদের মেরুদন্ড ভারতের কাছে বিকিয়ে দিয়ে এসেছে। তাই দেশের নাগরিক হত্যা করলেও, ভারতই ঠিক। তাদের কোনো অপরাধ নেই। হায়! এ জাতির কপালে আরও কত শনির দশা অপেক্ষা করছে তা কেবল আল্লাহই ভালো জানেন।

পঠিত : ৫৬৮ বার

মন্তব্য: ০