Alapon

মাহফিলে জুতা প্রদর্শন এবং জামায়াত বিরোধী জিহাদ, দুটোর উদ্দেশ্য কী একই ছিলো ?


মাহফিলে কোরআন সামনে নিয়ে জুতা উত্তোলন করে কাউকে হুমকি দেওয়া কোন আলেমের কাজ হতে পারে না। তেমনি ওয়াজের স্টেজে বসে বিপক্ষের লোকদের বাটপার, বদমাইশ টাইপের গালাগাল করা কাউকে সুস্থ মস্তিস্কের মনে করাও অনুচিত। ঘটনাগুলো একের পর এক ঘটছে। ইতিপর্বে যারা এসব অনাচারের জন্ম দিয়েছেন তাদের বিষয়ে দলীয় ট্যাগ লাগানো না হলেও কোথাকার কোন বক্তা উত্তেজিত হয়ে একটি বাজে কাজ করে ফেললো,অমনি তাকে জামায়াত শিবির ট্যাগ দেওয়ার সার্কাজম শুরু হয়ে গেলো। অথচ ঐ লোকটি জামায়াতের দায়িত্বশীল কেউই নয়।

আমি প্রায় সময় বলি, দেশের খ্যাতিমান বহু বক্তা এমন আছে যাদের কে মানুষ জামায়াতের বিশাল টাইপের নেতা মনে করেন কিন্তু খোজ নিলে জানা যায় তারা নিজের ওয়ার্ডের সংগঠনেও কোন কালেও এক টাকা এয়ানতও দেয়নি, বর্তমানেও জামায়াতের কোন স্তরে তাদের ভূমিকা নেই। কেবল মাত্র ওয়াজের বাজারে সাংগঠিক কিছু সুবিধা গ্রহণ করার নিয়তে তারা স্টেজে উঠে গরম গরম ডায়গল ছাড়েন, অমুকে তমুকের জন্য মায়া কান্না করে পাবলিক সিম্পিথি গ্রহণ করে। পরবর্তিতে এসব লোকেরা যখনি কোন অপকর্ম করেন, অমনি কিছু কুচক্রি গোষ্টি তার গোটা দায় জামায়াত শিবিরের কাধে চাপানোর মিশনে নেমে পড়েন। মনে হবে ওরা এরকম কিছুর আশায়ই পথ চেয়ে থাকেন।

চরমোনাইর খেলাফত প্রাপ্ত বক্তা, চরমোনাইর অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতাদের স্টেটাস, বয়ানে প্রতিপক্ষের ওপরে যেসব অমুলক বিষেধাগার আমরা দেখেছি সেগুলো নিয়ে কেবলমাত্র ফেসবুকে আপত্তি তুলেছি। এক আযহারীকে জামায়াত ট্যাগ লাগানোর জন্য যে ধরনের প্রপাগান্ডার প্রয়োজন ছিলো,তার সবটুকো তারা করেছেন। শুধু আযহারী নয়, প্রতিপক্ষ পীর, মাশায়েখ বা মানহাজের লোকদের পচাঁতে ওনাদের মুরব্বিরা কোরআনের আয়াতেও পরিবর্তন আনেন। তখনো আমরা কেবল খাতা কলমে প্রতিবাদ করার চেষ্টা করেছি।

কোথাও তাদের ‍রুখে দেওয়ার ঘোষনা দেইনি। ধর্মীয় অনূভুতির আইনে মামলা করার হার হামেশা সুযোগ থাকার পরেও আমরা সেগুলোকে কেবলমাত্র চিন্তার বিচ্যুতি, কর্মের ধোয়াশা মনে করেছি। প্রতিপক্ষ ভাবিনি। কিন্তু আজকে যেটা দেখছি, কোন এক অপরিচিত বক্তাকে জামায়াত শিবির ট্যাগ দিয়ে যে হাঙ্গামা শুরু হয়েছে, যে ধরনের প্রপাগান্ডা, মামলা হামলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাতে করে আমার কাছে মনে হচ্ছে এরা লোক সমাজে চুন কালি লাগা নিজেদের মুখটা কোন রকমের দেখানোর সুযোগ একটা পেয়েই কাজে লাগানোর ধান্ধায় নেমেছে।

ইতিপুর্বে আল্লাহ রসুল নিয়ে বিভিন্ন জনে মারাত্নক কুফরি কথা বললো, তাদের কোন আওয়াজ ছিলো না। মামলা করার পয়সা ছিলো না। তাদের মুরব্বিদের নিয়ে প্রতিদিন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত নামে মাজার ব্যবসায়ীরা যাচ্ছে তাই গালাগাল করে, প্রতিদিন অজস্র বার তাদের নাম ধরে ধরে গোষ্টি উদ্ধার করে, তাদের কারো বিরুদ্ধে ঐসব জুব্বা ওয়ালাদের কোন প্রতিবাদ চোখে পড়েনি। কিন্ত আরেক বেয়াদব কুয়াকাটাদের নিয়ে মন্তব্য করার কারণে তাদের রক্ত কনিকায় বিদ্রোহের অনল জ্বলে উঠলো। তারা এর নাম দিয়েছে কোরআন অবমাননা। শয়তানী আর কত ! কেবল মাত্র জামায়াত ট্যাগ লাগা ব্যক্তিকে টার্গেট নিয়ে সংগঠণ জামায়াতকে বিব্রত করার কৌশল নিয়েই ঐ চক্রটি সামনে এগুচ্ছে।

কুয়াকাটার বাটপার, নোমানীর কোরআনের আয়াতের মারাত্নক বিকৃতি যাদের স্টেটাস দেওয়ার কারণ হয় না, কোরআন অবমাননায় যাদের কোরআনের দরদ উতলে উঠে না, তারাই দেখলাম জুতা উত্তোলন নিয়ে নাক ছিটকালেন,ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দিয়ে নিজ টাইম লাইনে ভিডিও শেয়ার করলেন। কিন্তু নিজেদের বলয়ের লোকদের সীমাহিন শয়তানী তারা দেদারছে হজম করেন। প্রশ্ন করলে বলেন, আমরাও এরকম কাজে কষ্ট পেয়েছি। কিন্তু সেই কষ্ট জাহির করার সাহস হয়না। এক্ষেত্রে হয়েছে কারণ এটা জামায়াতকে বিতর্কিত করার কাজে লাগছে। আজকে আওয়ার ইসলাম নামে আরেক ভন্ড পোর্টাল ওলামাদের মন্তব্য শেয়ার দিয়েছে।

যখন কুয়াকাটা বাটপার বললো তখন ওলামাদের মন্তব্য নিতে যায়নি। নোমানীরা কোরআনের ভিতরে নতুন আয়াত যোগ করে দেওয়ানবাগী বানিয়ে নিলো, তখন তার প্রতিবাদের ফেসবুকের স্টেটাস সমগ্র শেয়ার করেনি। এসব ভন্ডামী দেখে কিছু লেখার ইচ্ছেও হারিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু ওনাদের নাটকের কারণে লিখতে বসলাম। ভবিষ্যতে বহু বক্তার অঙ্গভঙ্গি, প্রত্যেকটি বাচনভঙ্গির জন্যও মামলা খেতে হবে। যেহেতু মামলার সংস্কৃতি ওনারা চালূ করেছেন, আশা করছি ভবিষ্যতে এর পরিণাম তাদেরকে ভোগ করতে হতে পারে।

Apu Ahmed

পঠিত : ৬৪৫ বার

মন্তব্য: ০