Alapon

সৌদি রাজপরিবারে হঠাৎ ধরপাকড়; নেপথ্যের কারণ...


একদিকে সারাবিশ্ব কাঁপছে করোনা ভাইরাসে। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্য কাঁপছে সংঘাত আর ষড়যন্ত্র পাল্টা ষড়যন্ত্রের কারণে। সবার নজর যখন করোনা ভাইরাসের দিকে ঠিক তখনই সৌদি রাজপরিবারে বিশাল একটি ঘটনা ঘটে গেল। সাবেক ক্রাউন প্রিন্সসহ রাজপরিবারের প্রায় ৩০ জন সদস্যকে গত সপ্তাহে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবশ্য এই গ্রেফতারের পেছনে যে মুহাম্মাদ বিন সালমানের হাত রয়েছে তা চোখ বন্ধ করেই বলে দেওয়া যায়?

হঠাৎ এই গ্রেফতার প্রক্রিয়া কেন?

গ্রেফতারের পরপরই মুহাম্মাদ বিন সালমান সৌদি মিডিয়া মারফত জানিয়েছেন গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা অভ্যুত্থান ঘটানোর ষড়যন্ত্র করছিল- যা কারণে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু সৌদি রাজপরিবারের যে কাঠামো, সেই কাঠামো বলে গ্রেফতারকৃত যুবরাজদের অভ্যুত্থান ঘটানোর মত প্রয়োজনীয় শক্তি নেই। আর অন্যদিকে তাদের বিদেশি শক্তির সাহায্য পাওয়ার কথা নয়। কারণ, সাহায্য করার মত কেউ থাকলে তা ইসরাইল এবং আমেরিকা ছাড়া আর কেউই নেই। কিন্তু এই দুটি দেশই মুহাম্মাদ বিন সালমানের কর্মকান্ডে সন্তুষ্ট। ফলে আমেরিকা ও ইসরাইলের তাকে সরানোর কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। বরঞ্জ আমেরিকা ও ইসরাইল চায় মুহাম্মাদ বিন সালমান স্থায়ী হোক।

তবে এই গ্রেফতার করা হয়েছে কারণ, খুব সম্ভবত মুহাম্মাদ বিন সালমান আগামী নভেম্বরের মাঝেই সৌদি বাদশাহ হওয়ার সকল আনুষ্ঠানিকতা ও অভিষেক সম্পন্ন করতে চান। আর এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে যারা যারা বাধা হতে পারেন তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।

বিন সালামের এতো তাড়াহুড়ো করার কারণ?

খুব সম্ভবত দুটি কারণে বিন সালমান তাড়াহুড়ো করছেন। প্রথমত বিন সালমানের যে গুরু মুহাম্মাদ বিন যায়েদের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার একটি সংবাদ বিশ্ব মিডিয়ার চাউর হয়েছে। যদিও বিন যায়েদ এখন পর্যন্ত স্বীকার করেননি। যদি বিন যায়েদ দৃশ্য পটে না থাকেন তবে মুহাম্মাদ বিন সালমানের বিশ্ব রাজনীতিতে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ, এ কথা সকলেই জানে বিন সালমানের এতোটা পারদর্শিতা নেই যা দিয়ে বিশ্ব রাজনীতি সামাল দিতে পারেন। এক্ষেত্রে তাকে পরিচালনা করেন মুহাম্মাদ বিন যায়েদ। আর যায়েদ যদি না থাকেন তবে তার বাদশাহ হওয়ার স্বপ্নটা দুঃস্বপ্নে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

অন্যদিকে আগামী নভেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হতে যাচ্ছে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সৌদি সরকারকে যেভাবে সকল কাজে সমর্থন প্রদান করেছে তা অন্য কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট কখনো করেনি। ফলে ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আমেরিকার সহায়তায় সৌদি বাদশাহ বনে যাওয়া মুহাম্মাদ বিন সালমানের জন্য অনেক বেশি সহজ। আর যদি পাশার ডান উল্টে আগামী নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলের বার্নি স্যান্ডার্স প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয় আর জয়লাভ করে তবে মুহাম্মাদ বিন সালমানের যে ঘুম হারাম হয়ে যাবে- এ কথা নিশ্চিত করে বলা যায়। কারণ, জামাল খাশোকজির হত্যাকান্ড নিয়ে বার্নি স্যান্ডার্স এর বক্তব্য এবং জোরালোর প্রতিবাদের কথা মুহাম্মাদ বিন সালমান নিশ্চয়ই ভুলে যাননি।

পঠিত : ৪৬৫ বার

মন্তব্য: ০