Alapon

গ্লোবাল ইকোনমি পাগলা ঘোড়া হয়ে যাইতেসে।



করোনাভাইরাস, ওপেক ক্রাইসিস, ভারতব্যাপী বিক্ষোভ এইসব নিয়া বিশ্বরাজনীতির এই টালমাটাল অবস্থার মধ্যে কবে যে কার পৌষ মাস আর কার সর্বনাশ এইটা বোঝা বড় দায় হয়ে গেসে। তেলের ব্যারেল বিশ ডলারের দিকে নামার সম্ভাবনা দেখা দিসে, ফলে রাশিয়া বড় ধরনের মারা খাওয়ার দিকে আগাইতেসে, একই সাথে ইউএস শেল ফ্যাকিং করপোরেশনগুলার মাথায় বাড়ি পড়বে।
রিসেশানে গালফ মনার্কিগুলাও পড়বে সন্দেহ নাই, তবে ইরানের জন্য এইটা ডেথ ব্লো হবে, কেননা সে একমাত্র রাষ্ট্র যারে একই সাথে করোনা আর ওপেক ক্রাইসিস হিট করবে।

ফকিন্নী ক্লাস রাষ্ট্রগুলার এই মুহুর্তে খুব সম্ভবত করনীয় মাস্ক না, মিলিয়ন মিলিয়ন ব্যারেল তেল কেনা, আমি ইকোনমিস্ট না তাই এইটা করা ঠিক হবে কিনা জানি না। কমনসেন্স বলে, তেল রিজার্ভ কখনো ফাও যায় না, ন্যাশনাল বাজেটের একটা বড় অংশ হয়তো এর মাধ্যমে সেইভ করা যাইতে পারে। তবে প্রফেশনাল ইকোনমিস্টরা এইটা ভাল জানবেন। আমার কথা ভুলও হইতে পারে।

এইসব কোতাকুতির মধ্যে করোনার ভয়ে মোদী ফিরা গেসে দেইখা তৌহিদী জনতার ঈদের আনন্দ আমার কাছে বলদামি মনে হইতেসে। মোদী বা তার লেভেলের কোন হেড অফ স্টেট করোনাভাইরাসের কারনে এখন তক কোন ইম্পর্ট্যান্ট ট্যুর মিস দেয় নাই।
বাংলাদেশে এন্টি মোদী যে ডেমোনস্ট্রেশান হইসে এইটা মূলত আওয়ামী মুসলিম লীগেরই করানো ডেমোনস্ট্রেশান। আপনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে গেসেন দেইখা মনে কইরেন না আপনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির বাইরে খেলসেন। হেফাজতে ইসলাম আওয়ামী লীগের হিসাবের বাইরে গত কয়েক বছরে খুব কমই খেলসে।
ওদিকে আওয়ামী হিন্দুত্ববাদী লীগকে আবার এর বিরুদ্ধে নামানোর প্রিপারেশানও রেডি ছিল।
আওয়ামী হিন্দুত্ববাদী লীগ হইলো থিসিস, আওয়ামী মুসলিম লীগ হইলো এন্টি থিসিস, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ হইলো সিনথেসিস।

এইসব ফাকা আওয়াজের মাধ্যমে মোদীর ভাইকে দেখানো হইলো, তুমি এইখানে না আসলেই ভাল হয়। তুমি আর এইখানে ওয়েলকাম না।
পাশাপাশি বিনাখরচায় একটা রিস্ক এসেসমেন্টও হয়ে গেল৷ মোদীর ভাইরে আনলে কি রকম লোকজন জমায়েত হইতে পারে তা নিয়া।

মোদীর ভাই আসুক এইটা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের টপ লেভেল নিজেই চাইতেসিল না বইলা আমার মনে হয়। আমার অনুমান সঠিক হইলে সামনে গত দশ বছরে ওএসডি হওয়া প্রচুর সচিবরে পোস্টিং দেয়া হবে।

একজন পলিটিশিয়ান জানে, তার যখন কারো সাথে নেগোসিয়েশানে জিততে হবে তখন হাতে বারগেইনিং চিপ থাকা লাগবে। শেখ হাসিনাকে ইন্ডিয়া গত তিনটা সফরে যে প্রোটোকল দিসে, প্লাস এনআরসি-সিএএ এর রাজনীতি মিলা যে সাব কন্টিনেন্টাল ইকুয়েশান দাড়াইসে, এর মানে হইলো, শেখ হাসিনা সামনে প্রকাশ্যে না হইলেও মাঝে মাঝে আলতো কইরা হইলেও ইন্ডিয়ার এগেইন্সটে নিজের হাতে বারগেইনিং চিপ আনতে চেষ্টা করবেন। বারগেইনিং চিপ হারানো মানে প্রোটোকলও হারানো। এরদোয়ানের ক্রেমলিন সফর দেখলে এর কিছুটা নমুনা পাওয়া যায়। বাই দ্যা ওয়ে, শেখ হাসিনার বারগেইনিং চিপ হারানো আর এরদোয়ানের বারগেইনিং চিপ হারানো এক রকম না।

তো, শেখ হাসিনা যদি হাতে বারগেইনিং চিপ আনতে চান, তাইলে তাকে নিজের এডমিন ঠিক করতে হবে সবার আগে। এর ফলশ্রুতিতে ওকা সাহেব যদি অদুর ভবিষ্যতে পদ হারান এবং প্রচুর এক্সিস্টিং পোস্টেড এডমিন ক্যাডার ওএসডি হন, অবাক হওয়ার কিছুই নাই। সবই প্রোবাবিলিটি।

প্লাস, বাংলাদেশের এখন হাতে এমন কিছুই নাই যার জন্যে এইখানে মোদীর ভাইকে আসতে হবে। তার বরঞ্চ ক্যামনে এন্টি সিএএ প্রোটেস্টারদের কোমর ভাইঙ্গা দিয়া তাদের মাদানী দেওবন্দীতে পরিনত করা যায় সেইদিকে ফোকাস করার সময়। পাশাপাশি ইন্ডিয়ান ইকোনমির পতন থামানোর জন্য গোবরের আর কি রেসিপি পাড়গান্ডু ইন্ডিয়ানদের খাওয়ানো যায় সেইটাও তার অন্যতম ফোকাস হওয়ার কথা। এতবড় রাষ্ট্রের সাইজ নিজেই মাঝে মাঝে তার জন্য হুমকি হয়ে দাড়ায়। কখনোই এই সাইজের রাষ্ট্রে কমপ্লিট পলিটিক্যাল স্ট্যাবিলিটি থাকে না, আর মোদীর রাজনীতির কারনে যা থাকার কথা তাও গেছে। প্লাস, পগরম-করোনা ভাইরাস-সিএএ এইসব ইস্যুর কারনে ইন্ডিয়া প্রচুর ফরেইন ইনভেস্টমেন্ট হারাইতে যাইতেসে।

যাই হোক, ঢাকাবাসীর কাছে জানবার চাই, ঢাকার কি অবস্থা??
করোনা আতঙ্কে কি রাস্তাঘাট ফাকা হইসে না আগের মতই আছে??
ভাবতেসি আব্বা-আম্মা-ছোটভাইরে গ্রামে পাঠায়ে দেবো নাকি!! ঢাকার চাইতে যেকোন এপিডেমিকের মুখে গ্রামের বাড়ি অনেক সেইফ।

@Sajal

পঠিত : ১১৬৯ বার

মন্তব্য: ০