Alapon

কেবল বাংলাদেশ সরকার নয়, বাংলাদেশীরাও কোভিড-১৯ নিয়ে সিরিয়াস নয়...


আজ একদিনে বিশ্বব্যাপী ১৪ ,০০০ এর উপরে নতুন কোভিড সনাক্ত হয়েছে। আর যারা এখনও অসনাক্ত রয়ে গেছে, কিংবা সনাক্তের জন্য অপেক্ষা করছে তার সংখ্যা লাখ খানেক ছাড়িয়ে যাবে।

কিন্তু বাংলাদেশ ( সরকার + জনগন) এখনও উদাসীন। আমার চোখে এমন উদাসীন জাতি দুনিয়ায় এখন আর কেউ নাই, কেবল বাংলাদেশ ছাড়া। ফেসবুকে দেখলাম কেউ কেউ বলছে সোশ্যাল মিডিয়া বেশি বেশি বলছে, আসলে তেমন কিছু না।

তেমন কিছু না? তেমন কিছু যদি নাই হবে তাহলে ভারতের কেরালা স্টেট সরকার এখন পাগল কুত্তার মতো এক করোনা ভিকটিম যেখানে যেখানে গেছে সেইসব জায়গায় গত কয়েকদিন যারা যারা ভিজিট করেছে তাদের খুজে কোয়ারান্টাইনে কেন নিচ্ছে? এই পোস্ট লেখার সময় ভারতে সনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১১৩।

তেমন কিছু যদি নাই হবে তবে ঘন্টায় ঘন্টায় পুরা মধ্যপ্রাচ্যে করোনার সংখ্যা কেনো বাড়ছে? ১ দিন আগেও তুরস্কে রোগীর সংখ্যা ছিল ১, আজ ১৮। কাতারের রোগীর সংখ্যা ৪০১, ইজরায়েলে ২৫১, মিসরে ১২৬, সৌদিতে ১১৮। বাদ যায় নাই কুয়েত, ওমান, বাহরাইন সহ সব দেশ।

শ্রীলঙ্কায় এক দিন আগ পর্যন্ত সংখ্যা ছিল ১, আজ বেড়ে ১৮। আফ্রিকার দেশগুলো সব করোনা রিপোর্ট করছে। ইয়োরোপ ইজ এক্সপ্লোডিং। আমেরিকা ধীরে ধীরে ইয়োরোপের পথে যাচ্ছে। বিভিন্ন স্টেটের গভর্নার পাবলিক প্লেস যেমন রেস্তোরা, বার ইত্যাদি কয়েক সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা করছে। স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি সব বন্ধ। অনেক অফিস বন্ধ, বাসা থেকে কাজ করছে সবাই। পুলিশ ন্যাশনাল গার্ড নামিয়ে কোন কোন শহরে মানুষকে ঘরে যেতে বাধ্য করছে।

ইতালির অবস্থা ভয়াবহ। ভয়াবহ মানে ভয়াবহ। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২৫,০০০। তাদের মৃতের সংখ্যা অচিরেই চীনকে ছাড়িয়ে যাবে। তাদের হাসপাতালগুলো এখন আর সামাল দিতে পারছে না। হাসপাতালের কোন বেড খালি নাই, এনাফ ভেন্টিলেটার নাই। হাসপাতালের গ্যারাজগুলোতে বেড ফেলে ক্যাপাসিটি বাড়ানো হয়েছে। অথচ ইটালি উন্নত দেশগুলোর একটা। কিন্তু রোগীর সংখ্যা এতো বেশি যে সাপ্লাই শর্ট পড়ে গেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৮০ বছরের উপরের কোন পেশেন্টকে এখন আর বাচানোর জন্য হাসপাতাল তেমন চেষ্টা করবে না। ইতালিয়ান রোগীদের ৭% মারা যাচ্ছে, এদের মাঝে সবার বয়স কিন্তু ৮০+ নয়।

ইরানের অবস্থা ভয়বহ। চীন থেকে ডাক্তার এসেছে, নার্স এসেছে, সাপ্লাই এসেছে, তারপরেও মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। চীন তো করোনা আক্রান্ত মৃত রোগীর দেহ পুড়িয়ে দেয়েছে। ইরান তা করতে পারছে না , কিন্তু গন কবর খুড়ে ক্রেইন দিয়ে লাশ নামাচ্ছে গভীর করে খোড়া কবরে। এতই গভীর আর লম্বা সেইসব গন কবর যে স্যাটেলাইট থেকে সেই ট্রেঞ্চ দেখা যাচ্ছে।

এখন বিশ্বের সব দেশেই হু হু করে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কেবল বাংলাদেশ জানাচ্ছে না। বসে আছে বেশি বেশি মানুষ মরা শুরু করুক, আর যখন লুকাতে পারবে না ধমক ফমক দিয়ে তখন স্কুল কলেজ বন্ধ দিবে, মানুষকে কোয়ারান্টিন করবে। অ্লরেডি অনেক দেরী হয়ে গেছে।

ইতালি অপেক্ষা করেছিল। যখন দৃশ্যত অবস্থা খারাপ, কয়ারান্টাইনে গেছে তখন ইট ওয়াজ টু লেইট। বাংলাদেশের অবস্থা আরও খারাপ হবে। বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতির দেশ। একবার শুরু হলে ইউ গাইজ উইল বি ফিইনশড।

ভাবছেন কেবল বুড়ারা মরবে, জোয়ানেরা বেচে যাবে? ভুল। ৪০ ঊর্ধ্বরাও মরছে, ইয়াং কিন্তু ইমিউনো কম্প্রোমাইজড রাও মরছে। ইয়াংরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, মানে তারা বাইরে থেকে ভাইরাস নিয়ে ঘরে আসছে আর তাদের থেকে বাসার বাকিরা সংক্রমিত হচ্ছে।
জার্মান সরকার ১০,০০০ নতুন ভেন্টিলেটার অর্ডার করেছে। চীনে ১০ হাজার কোম্পানি নিজেদের প্রডাক্ট বাদ দিয়ে করোনা মোকাবেলায় হাসপাতালের জন্য প্রোডাক্ট বানিয়ে সাপ্লাই দিয়েছে। মদ কোম্পানিগুলো হ্যান্ড স্যানিটাইজার বানিয়ে ফ্রি ফ্রি সাপ্লাই দিয়েছে। বাংলাদেশের কোন হুশ আছে এসব ব্যাপারে?

বেশি তাপমাত্রায় এই ভাইরাস মরে যাবে ভেবে বাংলাদেশে অনেকে পায়ের উপর পা উঠিয়ে বসে আছেন। সেটা যে এক ভুল ইনফো ছিলো তা কি এখনও বুঝেন নি? এখন আফ্রিকাতেও গেছে, মধ্যপ্রাচ্যেও গেছে, সেখানকার তাপমাত্রা বাংলাদেশের চাইতেও বেশি, আদ্রতাও।

এখনও আপনাদের ভয় লাগছে না? মসজিদে যাবেন? যান। স্কুল কলেজে ছেলেমেয়েদের পাঠাবেন? পাঠান। স্বেচ্ছায় মরতে চাইলে আর কি বলার আছে। ভাবছেন আপনি ভালো মুসলমান তাই আল্লাহ আপনাকে বাচিয়ে দিবে? আপনি কিভাবে জানেন আপনি আল্লাহর চোখে কি? আল্লাহ আপনার জন্য কি করবে? ভাবছেন মসজিদ্গুলতে ভাইরাস আসবে না? ইউ গাইজ আর সুইসাইডাল।

আমার কর্তব্য আপনাদের জানানো, আমি জানিয়ে দিলাম। আপনাদের মরার ইচ্ছা মরুন।

Sabina Ahmed

পঠিত : ৪৫৭ বার

মন্তব্য: ০