Alapon

১৫ মিনিটেই করোনাভাইরাস শনাক্তের দাবী গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের



ডা. জাফরুল্লাহর গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের একদল গবেষক নভেল করোনা ভাইরাস শনাক্ত করার কিট উদ্ভাবন করেছে। গবেষক দলের নেতৃত্ব দেন ড. বিজন কুমার শীল। তার সাথে আরো ছিলেন ড. নিহাদ আদনান, ড. মোহাম্মদ রাশেদ জমিরউদ্দিন ও ড. ফিরোজ আহমেদ।

২০০৩ সালে যখন সার্স ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল তখন বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল সিঙ্গাপুর গবেষণাগারে কয়েকজন সহকারীকে নিয়ে সার্স ভাইরাস দ্রুত নির্ণয়ের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ‘র‌্যাপিড ডট ব্লট’ পদ্ধতিটি ড. বিজন কুমার শীলের নামে পেটেন্ট করা। পরে এটি চীন সরকার কিনে নেয় এবং সফলভাবে সার্স মোকাবেলা করে।
‘তারপর তিনি সিঙ্গাপুরেই গবেষণা করছিলেন ডেঙ্গুর ওপরে। তিনি দুই বছর আগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগ দেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রেও তিনি ডেঙ্গী ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছিলেন।

নভেল করোনা নির্ণয়ের প্রচলিত কিট যেটা ব্যবহৃত হচ্ছে সেটা খুবই ব্যয়বহুল। এর জন্যে একটা দামি যন্ত্র প্রয়োজন হয়। সেই যন্ত্র সব মেডিকেল কলেজে নেই। আইইডিসিআরের কাছে একটা যন্ত্র আছে। এ কারণে তারা এখন পর্যন্ত মাত্র ২৬৮ জনের করোনা পরীক্ষা করতে পেরেছে। অথচ আমাদের পরীক্ষা করা উচিত ছিল হাজার-হাজার।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নভেল করোনা নির্ণয়ের নতুন কিট উদ্ভাবন করেছে। ‘ড. বিজন ও তার দলের উদ্ভাবিত এই পদ্ধতিতে ৩৫০ টাকায় ১৫ মিনিটে করোনা ভাইরাস শনাক্ত সম্ভব বলে মনে করেন ডা. জাফরুল্লাহ। ডা. জাফরুল্লাহ আরো বলেন, সরকার যদি এর ওপর ট্যাক্স-ভ্যাট আরোপ না করে তাহলে আমরা ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বাজারজাত করতে পারবো ।’

যখন গত বছরের ডিসেম্বরে নতুন করোনাভাইরাস দেখা দিলো তখন তিনি করোনা ভাইরাস নিয়ে কাজ শুরু করেন, ‘এটা হলো সার্সের রূপান্তরিত রূপ। তাই ডা. বিজন তার সহকর্মীদের নিয়ে কিট তৈরিতে আত্মনিয়োগ করেন। তিনি পূর্ণাঙ্গ সফলতা পান ফেব্রুয়ারীর শেষে। ডা. বিজন গণবিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালের প্রধান বিজ্ঞানী।

ডা. বিজনের এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা করতে রিএজেন্ট লাগে। কেমিক্যাল রিএজেন্টগুলো একেবারে সহজলভ্য না। এগুলো পাওয়া যায় সুইজারল্যান্ড, আমেরিকা ও ব্রিটেনে। কিটটি এখনই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র মার্কেটিং করতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র অনুমোদনের জন্যে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে আবেদন করেছে। যদিও তারা এর গুরুত্ব যথাযথভাবে বুঝতে পারছে না বলে মনে করেন ডা. জাফরুল্লাহ।

সবকিছু নির্ভর করছে সরকারের মর্জির ওপরে। ডেঙ্গু টেস্টের যেমন মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছিল করোনা টেস্টেরও যদি মূল্য নির্ধারণ করে দেয় তাহলে জনগণ স্বল্প মূল্যে সেবা পাবে। মূল্য নির্ধারণ না করে দিলে যে যার যার মতো টাকা নিবে।’

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র দাবী করেছে তারা মাসে এক লাখ কিট সরবরাহ করতে পারবে। তবে সবকিছু ঠিক থাকলে প্রাথমিকভাবে এই মাসে ১০ হাজার কিট সরবরাহ করতে পারবে। ডা. জাফরুল্লাহ জানান ’ইতোমধ্যে আমেরিকার একটি সংস্থা জানিয়েছে তারাও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত এই ‘র‌্যাপিড ডট ব্লট’ উৎপাদন করবে। গবেষণা দলের সদস্য ড. নিহাদ আদনান বলেন, ‘অনুমোদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ড. বিজন কুমার শীল ও ড. মহিবুল্লাহ ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরে গিয়েছিলেন। অনুমোদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন। সাধারণত এ ধরনের অনুমোদন একটু সময় সাপেক্ষ। তবে জাতীয় স্বার্থের গুরুত্ব বিবেচনায় আমরা আশা করছি অল্প সময়ের মধ্যে অনুমোদন পেয়ে যাবো।’

পঠিত : ৩৮৪ বার

মন্তব্য: ০