Alapon

সতর্কতা ছাড়া বিশ্বাস বোকামি, আর বিশ্বাস ছাড়া সতর্কতা বস্তুবাদী...


01. আসুন মরার জন্য প্রস্তুত থাকি:
ভাবছি করোনা ভাইরাসের মহামারী ছড়িয়ে পড়েছে আমি মারা যাবো। প্রত্যেক প্রাণীকেই তো মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। মৃত্যু থেকে বাঁচার সকল পথ বন্ধ। আমার মৃত্যুক্ষণও তো নির্ধারিত কিন্তু আমার জানা নেই। দুনিয়াতে আসার সিরিয়াল থাকলেও যাওয়ার সিরিয়াল ঠিক থাকে না-দাদার আগে নাতীও মারা যায়। আসুন মরার জন্য সর্বদাই প্রস্তুত থাকি এবং তাওবা-ইস্তেগফার বাড়াই। তাহলেই বুদ্ধিমান হতে পারবো। আর মহামারী আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেতো শাহাদাতের মর্যাদা অপেক্ষা করছে আমার জন্য (মিশকাতুল মাসাবীহ 1546)। আল্লাহ্ আমাকে-আপনাকে তাঁর প্রিয় বান্দাহ হিসেবে কবুল করুন। আমিন।

02. আসুন সুন্নাহর অনুসরণে নড়াচড়া বন্ধ করি:
ভাবছি করুনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে বাঁচতে বিদেশ থেকে দেশে চলে আসি, শহর ছেড়ে গ্রামে চলে যাই। পালিয়ে বাঁচার চেষ্টা করি। কিন্তু এটা তো সুন্নাহর বিপরীত। মহামারী ছড়িয়ে পড়লে তো যেখানে আছি, সেখানেই থাকতে হবে। এটাই তো সুন্নাহর অনুসরণ। মহামারী এলাকা থেকে পলায়ন করাতো জিহাদের ময়দান হতে পলায়ন করার মতোই অপরাধ (মিশকাতুল মাসাবীহ-61)।

03. আসুন সতর্কতা অবলম্বনের সুন্নাহ মেনে চলি
"যা কিছু হবে আল্লাহর হুকুমেই হবে, সতর্কতার দরকার নেই" - এ ধরণের আবেগ ও বিশ্বাস বোকামি যা ইসলাম সমর্থন করে না। শত্রু বেষ্টিত অবস্থায় সওর পর্বতের গুহায় ঢুকে যাওয়া শিখিয়েছেন তো আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ), সাথে ছিলেন তো হযরত আবু বকর(রাঃ)। উটের রশি ভালোভাবে বাঁধা, আগুণ নিভিয়ে শোয়া, তরকারির পাত্র ঢেকে রাখা ইত্যাদি তো সুন্নাহরই অংশ। কাজেই আসুন quarantine বা isolation এর সতর্কতা মেনে চলি। মাস্ক-সেনিটাইজেশনসহ আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করি। সামাজিক অনুষ্ঠানসহ আড্ডাবাজি পরিহার করি। সম্ভব হলে বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়ে প্রিকশানারী ঔষধ ও ভিটামিন-সি জাতীয় পানীয় গ্রহণ করি। অজু অবস্থায় থাকার চেষ্টা করি। পরিবার বা মেসের সদস্যদের নিয়ে নিজ নিজ স্থানে জামায়াতে সালাত আদায় করি। দোয়া-দরুদের চর্চা বাড়াই।

04. আসুন খাদ্য মজুদ নয় বিতরণ করার চেষ্টা করি:
করোনা আতঙ্কে আমরা খাদ্য মজুদ করছি যাতে খাদ্যের অভাবে মারা না যাই। গুদামজাত করে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়াচ্ছি। এগুলো কুরআন-সুন্নাহ সমর্থিত সঠিক চিন্তা নয়। যারা দিনে এনে দিনে খায়, লকডাউন হলে তাদের নাজুক অবস্থার কথা কি আমি একটু ভেবেছি? দাম বেড়ে গেলে সীমিত আয়ের নিম্ন-মধ্যবিত্তের নিরব কান্না কি আমি শুনেছি? আসুন বিশ্বাস রাখি আল্লাহ্ যমীনের উপর বিচরণশীল সকলের রিযিক নির্ধারণ করে রেখেছেন (হূদ-06)। নিজের জন্য মজুদ না বাড়িয়ে অসহায় আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধবদের সাধ্যমত খাবার বিতরণ করি। জাহান্নামীরাতো আর্তনাদ করে বলবে, "আমরা মুসল্লি ছিলাম না-মিসকিনদের খাবার দিতাম না।" ঘর ভর্তি খাবার মজুদ রাখলেও রিজিকে বরাদ্দ না থাকলে ভোগ করার সুযোগ আছে কি? হয়তো মালাকুল মউত হাজির হয়ে বলবে, "ওহে আমি পুরো পৃথিবী সন্ধান করে আপনার জন্য এক ফোটা পানির ব্যবস্থা করতে পারি নি, এক টুকরো রুটি পর্যন্ত সংগ্রহ করতে আমি ব্যর্থ হয়েছি,সুতরাং আমাকে এখনি আপনার জান কবজ করতেই হবে।" অতএব আসুন ধৈর্য্যর সাথে পথ চলি- অসহায়দের প্রতি হাত বাড়াই। আল্লাহ্ আমাকে-আপনাকে কবুল করুন, জাহান্নাম থেকে রক্ষা করুন। আমিন।

05. আসুন বিশ্বাসের উপর অটল থাকি:
9:51 সূরা তাওবা , আয়াত নং 51
قُلۡ لَّنۡ یُّصِیۡبَنَاۤ اِلَّا مَا کَتَبَ اللّٰہُ لَنَا ۚ ہُوَ مَوۡلٰىنَا ۚ وَ عَلَی اللّٰہِ فَلۡیَتَوَکَّلِ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ﴿۵۱﴾
বল, ‘আমাদেরকে শুধু তা-ই আক্রান্ত করবে যা আল্লাহ আমাদের জন্য লিখে রেখেছেন। তিনিই আমাদের অভিভাবক, আর আল্লাহর উপরই যেন মুমিনরা তাওয়াক্কুল করে’।
Say, (to them),
"Nothing shall ever happen to us except what Allah has ordained for us.
for we are under His control and decree,
He is our Mawla, Master and protector,
And in Allah let the believers put their trust."
65Jaber Ahmad, Abu Hamid Mohammad Ashiqullah and 63 others
13 comments

পঠিত : ৪৩৭ বার

মন্তব্য: ০